অংশুপ্রতিম পাল, খড়গপুর: আট বছর আগে খড়গপুর টাউন কাঁপিয়ে দিয়েছিল কুখ্যাত মাফিয়া ডন শ্রীনু নায়ডু হত্যাকাণ্ড। সেই ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়ে জামিনে ছাড়া পাওয়ার পরও বেআইনি কার্যকলাপ চালাচ্ছিল দীপঙ্কর শুক্লা নামে এলাকার দোর্দণ্ডপ্রতাপ দুষ্কৃতী। গোপনে আগ্নেয়াস্ত্র বিক্রি করতে গিয়ে এবার হাতেনাতে পাকড়াও হল দীপঙ্কর। তার কাছ থেকে একাধিক আগ্নেয়াস্ত্র-সহ তাজা কার্তুজ উদ্ধার হয়েছে। রবিবার বিকালে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এমনটাই জানালেন খড়গপুরের এসডিপিও ধীরাজ ঠাকুর। সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন খড়গপুর টাউন থানার আইসি পার্থসারথি পাল-সহ অন্যান্য আধিকারিকরা। দীপঙ্করকে গ্রেপ্তার করে খড়গপুর এসিজেএম আদালতে পেশ করে। বিচারক আটদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।
এসডিপিও আরও জানিয়েছেন, দীপঙ্করের কাছ থেকে একটি কালো রঙের ব্যাগ উদ্ধার করে তল্লাশি চালানো হয়। সেখান থেকে চারটি আধা স্বয়ংক্রিয় ৭.৬৫ মিমি পিস্তল, ১৬টি ৭.৬৬ মিমি তাজা কার্তুজ, ৮ মিমি তাজা কার্তুজ ভরা একটি দেশি পাইপগান, খোলা অবস্থায় থাকা আরেকটি ৮ মিমি তাজা কার্তুজ ও এক জোড়া জামা-প্যান্ট উদ্ধার করা হয়েছে। এসব দিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র বোঝাই ব্যাগটি আড়াল করে রাখা হয়েছিল।
রবিবার এসডিপিও ধীরাজ ঠাকুর সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছেন, দীপঙ্কর শুক্লাকে শনিবার রাত আটটা নাগাদ নিমপুরা রাখাজঙ্গল এলাকা থেকে ধরা হয়েছে। ধৃত ওই জায়গায় এক বাইক চালককে নিয়ে উপস্থিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘিরে ফেলা হয়। তারপর তাকে হাতেনাতে পাকড়াও করা হয়। যদিও ততক্ষণে সুযোগ বুঝে বাইক চালক পালিয়ে যায়। ন'টি মামলায় অভিযুক্ত এই কুখ্যাত দুষ্কৃতী দীপঙ্করের নাম একসময়ে রেলশহর খড়গপুরের মাফিয়া ডন শ্রীনু নায়ডু খুন মামলায় জড়িয়ে গিয়েছিল। সেই ঘটনায় দীপঙ্কর গ্ৰেপ্তারও হয়েছিল। এছাড়া তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে একাধিক মামলা রয়েছে।
এসডিপিও ধীরাজ ঠাকুর জানিয়েছেন, "শনিবার সন্ধ্যায় দীপঙ্কর রেলশহর খড়গপুরের গেটবাজার এলাকার অপর এক দুষ্কৃতীকে নিয়ে বাইকে চেপে নিমপুরা রাখাজঙ্গল এলাকায় পৌঁছায়। ওদের উদ্দেশ্য ছিল রাধেশ্যাম শুক্লা ও আর উমেশ কুমার নামে দুই অস্ত্র কারবারীর কাছে আগ্নেয়াস্ত্রগুলি বিক্রি করা। প্রথমজনের বাড়ি ঝাড়খণ্ডের জামশেদপুর এলাকার বাগবেড়িয়া থানার হরহর ভুটুর এলাকায়। আর দ্বিতীয়জনের বাড়ি খড়গপুর পুরসভার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের খড়িদা এলাকায়। এদিকে অস্ত্র বিক্রির খবর পাওয়ার পরেই খড়গপুর টাউন থানার পুলিশ অভিযান চালায়। দীপঙ্কর ধরা পড়ে যায়। আর বাইক চালক পালায়।''
