দেব গোস্বামী, বোলপুর: মায়ের আশীর্বাদ নিয়েই সভাধিপতির শপথ গ্রহণের মঞ্চে কাজল। শুধু মা সাদেকা বিবি-সহ পরিবার পরিজনেরা নন, দোয়া ও আশীর্বাদ, শুভেচ্ছা নিলেন সর্বদা সুখ-দুঃখকে পাশে থাকা নানুর পাপুড়ি’র গ্রামবাসীদের। দুঃখের দিনে যেমন পাশে ছিলেন আর সুখের দিনেও একইভাবেই গ্রামবাসীদের সঙ্গেই থাকবেন এই প্রতিশ্রুতিই তিনি দিয়েছেন।
তাঁর বাবা এবং দুই দাদা রাজনৈতিক সংগ্রামেই শহীদ হয়েছেন। শহিদ পরিবার থেকে উঠে আসা ৩০ বছর রাজনৈতিক ইতিহাসে এই প্রথম পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলা পরিষদের আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। জেলা পরিষদের নানুরের আসন থেকে সর্বাধিক ৪৪ হাজারেরও বেশি ভোটের ব্যবধানে তিনি জয়লাভ করেন। বুধবার ফায়েজুল হক ওরফে কাজল শেখ সভাধিপতির শপথ গ্রহণ ঘিরেই পাপুড়ি গ্রামবাসীদের অন্যরকম আবেগের উচ্ছ্বাস ছিল চোখের পড়ার মতো।
[আরও পড়ুন: ব্যবহৃত হবে না ‘পতিতা’, ‘সতী’র মতো শব্দ, লিঙ্গবৈষম্য রুখতে নির্দেশিকা সুপ্রিম কোর্টে]
কবি চণ্ডীদাসের সাধনক্ষেত্র এই নানুর। কিন্তু সেই পরিচিতি ছাপিয়ে একসময় সন্ত্রাসের আঁতুরঘর হিসাবেই পরিচিতি লাভ করে। ভোট মানেই নানুর নির্বাচন কমিশনের কাছে সবসময় ‘স্পর্শকাতর’ এলাকা হিসাবেই পরিচিত থাকত। কিন্তু এইসব আজ ইতিহাস নানুরের কাছে। বদলেছে নানুরের রাজনৈতিক সমীকরণ। পাপুড়ি গ্রামের বাসিন্দা, নাসিরউদ্দিন কাজি ও রানা শেখ বলেন, “নানুরের উন্নয়নমূলক কাজ থেকে শুরু করে লকডাউনে বিনা পয়সায় গরিব মানুষের পাশে দাঁড়ান। রাজনৈতিক লড়াই ময়দানে পথ দেখিয়েছেন যুবনেতা কাজল। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকা থেকে সভাধিপতি হওয়ায় অত্যন্ত খুশি হয়েছেন গ্রামবাসীরা।”
কেতুগ্রাম বিধানসভার বিধায়ক দাদা শেখ শাহনাজ বলেন,”খুবই আনন্দের দিন। জেলায় তৃণমূলকে প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে আমার বাবা এবং দুই ভাই শহিদ হয়েছেন। অনেক লড়াই সংগ্রাম হয়েছে নানুরে। প্রত্যেকটি লড়াই সংগ্রামে সাথী থেকেছে ভাই কাজল।” যদিও কাজল শেখ বলেন,”আপদে-বিপদে সব সময় পাপুড়ি গ্রামবাসীদের পাশে থেকেছি। রাজনৈতিক লড়াই এর ময়দান থেকে আমি উঠে এসেছি। রাজনীতিটা আমার পেশা নয়, এটা আমার নেশা। আগামী দিনেও সকলের পরামর্শ নিয়ে বীরভূমকে কীভাবে আরও ত্বরান্বিত করা যায় এটাই আমার প্রথম লক্ষ্য।”
