রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় ও দেব গোস্বামী: লোকসভার আগে গোষ্ঠী কোন্দলে জেরবার বঙ্গ বিজেপি (BJP)! পরিস্থিতি এতটই সঙ্গীন যে রাজনৈতিক লড়াই ছেড়ে বিষয়টি ব্যক্তিগত কাদা ছোড়াছু়ড়িতে নেমে এসেছে। নেতাদের মহিলাঘটিত কেচ্ছার ভিডিও, মেসেজ প্রকাশ্যে আনার হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন অন্য গোষ্ঠীর নেতারা। নাম না করে বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী এবং বীরভূমের জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহাকে নিশানা করেছেন অনুপম হাজরা (Anupam Hazra)। রীতিমতো কেচ্ছার ভিডিও ফাঁসের হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন তিনি। এমনকী, রাজ্যের নেতা-কর্মীদের কাছ থেকে ‘চক্রবর্তী ও সাহা’ সাহেবের কুকীর্তির প্রমাণ তলব করেছেন অনুপম। সবমিলিয়ে কেন্দ্রীয় সম্পাদকের আচমকা বিদ্রোহে ‘টালমাটাল’ বঙ্গ বিজেপির ঘর।
শনিবার ফেসবুকে দীর্ঘ একটি পোস্ট করেছেন অনুপম হাজরা। শুরুতেই একটি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর দিয়ে লিখেছেন, চক্রবর্তী এবং সাহা কোম্পানি-সহ রাজ্যের মূলকর্তাদের বিরুদ্ধে কুকর্মের যা তথ্যপ্রমাণ আছে তা জানাতে। যাঁরা অভিযোগ করেছেন তাঁদের নাম-পরিচয় গোপন থাকবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন অনুপম। এখানেই থামেননি বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক। ‘চক্রবর্তী সাহেব’-কে খোঁচা দিয়ে লিখেছেন ‘নোংরামিতে ফিনিশিং টাচ’ দেবেন তিনি নিজে। অনুপমের কথায়, জনৈক মহিলার সঙ্গে ‘চক্রবর্তী সাহেব’-এর ‘রঙ্গলীলা’র ভিডিও প্রকাশ্যে আনবেন। দিল্লিতে গেলে ‘চক্রবর্তী সাহেব’ কী খোঁজেন তাও জানাবেন বঙ্গবাসীকে। একইসঙ্গে উত্তরবঙ্গে ৫৫ কোটির রিসর্টের গোপন তথ্য ফাঁস করবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন। সবমিলিয়ে বিজেপির অন্দরে তুঙ্গে উঠেছে গোষ্ঠীকোন্দল।
[আরও পড়ুন: ‘এজেন্সির সঙ্গে লড়তে গেলে নিজেকে ঠিক রাখতে হবে’, তৃণমূলকে ‘পাঠ’ অর্জুনের]
গত মঙ্গলবার থেকেই গৃহযুদ্ধে তোলপাড় গেরুয়া শিবির। বিশ্বভারতীর উপাচার্য ইস্যুতে তৃণমূলের অবস্থান মঞ্চে হঠাৎই হাজির হওয়া নিয়ে অনুপম হাজরাকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছিলেন দলেরই রাজ্য মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য। তাঁর সঙ্গে অনুপমের প্রকাশ্যেই কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি চলে। আর বুধবার তা চরম আকার নেয়। অনুপম হাজরা তাঁর দলের রাজ্য সভাপতিকেই বেনজির আক্রমণ করেন প্রকাশ্যেই। বঙ্গ বিজেপি নেতাদের ঘরের শত্রু বিভীষণ বলেও মন্তব্য করেন। দলের রাজ্য সভাপতিকে এভাবে নগ্ন আক্রমণ সেই দলেরই সর্বভারতীয় সম্পাদকের, এমন ঘটনা বিজেপির ইতিহাসে নজিরবিহীন বলেই মনে করা হচ্ছে।