shono
Advertisement
Madhyamgram

খুনের পর মৃত পিসিশাশুড়ির সোনার গয়না লুট ফাল্গুনীর! মধ্যমগ্রাম হত্যাকাণ্ডে নয়া তথ্য

লুটেই থেমে থাকেনি, লাশ ঘরে ফেলে রেখে স্থানীয় সোনার দোকানে গয়না বিক্রি করতে গিয়েছিল ধৃত মা-মেয়ে।
Published By: Sucheta SenguptaPosted: 09:16 PM Mar 06, 2025Updated: 09:20 PM Mar 06, 2025

অর্ণব দাস, বারাসত: খুনের পরও লোভ সামলাতে পারেনি। তাই পিসিশাশুড়ির মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর তাঁর শরীর থেকে সোনার গয়নাগুলো খুলে নেয় মধ্যমগ্রাম হত্যাকাণ্ডে ধৃত ফাল্গুনী ঘোষ! তারপর মৃতদেহ মধ্যমগ্রামের দক্ষিণ বীরেশপল্লির ভাড়া বাড়িতেই রেখে সন্ধ্যার পর স্থানীয় কোনও একটি সোনার দোকানে গিয়ে সেসব বিক্রি করেছিল মা-মেয়ে। বৃহস্পতিবার মধ্যমগ্রাম থানার পুলিশ ধৃতদের নিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণের দিনই এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য এল তদন্তকারীদের হাতে। যার জেরে এই মামলায় নয়া মোড়।

Advertisement

বৃহস্পতিবার পুনর্নির্মাণের সময় ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা ছিলেন না। এদিন তাই দক্ষিণ বীরেশপল্লির ভাড়া বাড়ির তালা খোলেননি তদন্তকারীরা। পরবর্তীতে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের উপস্থিতিতে বাড়ির ভিতরে ফের একবার খুনের পুনর্নির্মাণ করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। খুনে ব্যবহার করা বঁটি, দা ও হাতুড়ি কীভাবে কাগজে জড়িয়ে বাড়ির সামনের পুকুরে ফেলা হয়েছিল, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ভোরে মা এবং মেয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে কোন গলির মুখে ভ্যানের অপেক্ষায় ছিল, সেসব পুনর্নির্মাণের জন্য বহনকারী ভ্যান চালককেও এদিন ডাকা হয়েছিল। ঘর থেকে কীভাবে নীল রংয়ের ট্রলি বের করে ভ্যানে তোলা হয়েছিল, কোন পথ ধরে ভ্যানে দোলতলায় পৌঁছে কিভাবে ট্রলি নামিয়ে ভাড়ার ট্যাক্সির ডিকিতে তুলেছিল, এদিন সেটাও পুলিশকে দেখিয়েছে ফাল্গুনী ও আরতি। ঘটনার দিন যে সাদা ট্যাক্সি করে কুমোরটুলি গিয়েছিল, সেই ট্যাক্সিতেই ফাল্গুনী এবং আরতিকে নিয়ে যাওয়া হয় কুমোরটুলিতে। গাড়ি থেকে ট্রলি কোথায় নামানো হয় কুমোরটুলি ঘাটে তারও বিবরণ দেয় মা-মেয়ে।

এরপরই পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ধৃতদের জেরা করে মেলা তথ্য ও ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট। উদ্ঘাটিত হয় ছোট ট্রলির রহস্য। সূত্রের খবর, যাতে বাইরে থেকে রক্তের চিহ্ন বা গন্ধ বের হয় তার জন্য বড় ট্রলির মধ্যেই ছোট ট্রলি ছিল। সেই ছোট ট্রলির মধ্যেই ছিল মৃতদেহ। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে মৃতদেহে মাথা ও শরীরের একাধিক অংশে আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। তাই পুলিশের অনুমান চূড়ান্ত নিগ্রহ করেই খুন করা হয় সুমিতাকে। খুনের পর মৃতদেহে থেকে সোনার বালা, কানের দুল, নাকছাবি, গলার হার খুলে আনুমানিক রাত সাড়ে আটটা নাগাদ মধ্যমগ্রামের একটি সোনার দোকানে বিক্রি করেছিল মা-মেয়ে। সূত্রের আরও খবর, নিহত অসম থেকে শিয়ালদহের বোনের বাড়িতে, তারপর লেকটাউনের এক আত্মীয়ের বাড়িতে ছিল। এরপর গত ১১ ফেব্রুয়ারি এসেছিল ফাল্গুনী ও আরতির বাড়িতে। মধ্যমগ্রামে থাকাকালীনই তিনজন সুমিতার প্রাক্তন স্বামী সুদীপ্ত ঘোষের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিল পূর্ব বর্ধমানের নাদনঘাটে। সুমিতার সঙ্গে তাঁর স্বামীর ভেঙে যাওয়া সম্পর্ক জোড়া লাগানোর চেষ্টা করতেই বর্ধমানে গিয়েছিল বলেই জেরায় পুলিশকে জানিয়েছে ফাল্গুনী।

পাশাপাশি তারা কলকাতা হাইকোর্টের এক আইনজীবীর কাছেও গিয়েছিলেন। ওই আইনজীবীর মাধ্যমে বেশ কয়েকটি নথি তৈরি করেছিল বলে জেরায় জানিয়েছে ধৃতরা। কী কী নথি বানানো হয়েছিল সেটাও যাচাই করছেন তদন্তকারীরা। বারাসত জেলা পুলিশ সুপার প্রতীক্ষা ঝাড়খরিয়া জানিয়েছেন, মধ্যমগ্রামের যে দোকানের সোনার গয়না বিক্রি করেছিল, সেই ব্যবসায়ীর থেকে জানা যাবে কত পরিমাণ, কী কী গয়না কত টাকায় বিক্রি করেছিল অভিযুক্তরা। ধৃতের বয়ান যাচাই করতে শুক্রবার নিহতের প্রাক্তন স্বামী ও আইনজীবীর বিবৃতি নেওয়া হবে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • মধ্যমগ্রাম হত্যাকাণ্ডে ফের চাঞ্চল্যকর তথ্য পুলিশের হাতে।
  • খুনের পর পিসিশাশুড়ির শরীর থেকে সোনার গয়না খুলে বিক্রি করেছিল ধৃত মা-মেয়ে!
  • বৃহস্পতিবার পুনর্নির্মাণের সময় ফাল্গুনী এসব তথ্য জানিয়েছে বলে দাবি তদন্তকারীদের।
Advertisement