সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রিভেনশন ইজ বেটার দ্যান কিওর- এ কথাই যেন আক্ষরিক অর্থে নিজের কাজে ফুটিয়ে তুলছেন প্রমোদ পাসওয়ান। পূর্ব সিংভূমের গুড়াবান্দার এএসআই তিনি। কিন্তু এ তো স্রেফ পদ এবং পরিচয়। সঠিক অর্থে বলতে গেলে তিনি একজন যথার্থ শিক্ষক। পুলিশ হিসেবে নিজের কাজ শেষ হলেই তাই হাতে তুলে নিচ্ছেন চক-ডাস্টার। পড়ুয়াদের শেখাচ্ছেন অঙ্ক। লক্ষ্য মূলত নকশাল কাজকর্ম থেকে তরুণ-মেধাবী পড়ুয়াদের দূরে রাখা।

[ সন্ত্রাসবাদী দলে এমবিএ-পিএইচডি ডিগ্রিধারীরা, সরকারি তথ্যে ঘনাচ্ছে আশঙ্কার মেঘ ]
মাও দমনের জন্য প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দ কম নয়। বিভিন্ন সময় নকশাল বা মাওবাদীদের হামলায় বেসামাল হতে হয় প্রশাসনকে। তখন কঠোর হয় দমননীতি। তবে সমস্যার মূল পর্যন্ত গিয়ে বোধহয় কখনওই পৌঁছানো হয় না। ফলে দমন-পীড়নই সার। আবার তরুণরা নিজেদের অধিকার অর্জন করতে গিয়ে বা রাষ্ট্রের উপর বিক্ষুব্ধ হয়ে সেই নকশালের দলেই নাম লেখায়। এ রীতি চলছে তো চলছেই। সবথেকে বড় কথা, যেমন তেমন নয়, মেধাবী পড়ুযারাও শামিল হয় এই দলে। কোথাও আবার অল্পবয়েসিদের টার্গেট করে তাদের মাথার মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়া মতাদর্শ। পুলিশের শীর্ষ পদে বসে এ সমস্যা বাস্তবিকই বুঝেছেন প্রমোদবাবু। তাই অভিনব সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন তিনি।
নিজের ডিউটি আওয়ার্স শেষ হওয়ার পর তিনি চলে যান স্থানীয় স্কুলে। সেখানে পড়ুয়াদের অঙ্ক শেখান মন দিয়ে। একেবারে চক ডাস্টার হাতে নিয়ে রীতিমতো ক্লাস নেন প্রমোদবাবু। অনেক পড়ুয়াই শামিল তাঁর ক্লাসে। প্রমোদবাবু জানাচ্ছেন, তাঁর উদ্দেশ্য মূলত দুটি। শিক্ষার্থীদের অঙ্ক শেখানো। যাতে সিলেবাসের বাইরেও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য তারা নিজেদের তৈরি করে নিতে পারে। দ্বিতীয়ত, পড়শোনার মধ্যে থাকলে নকশাল কাজকর্ম থেকেই এই কমবয়েসিরা দূরে থাকবে। এক ঢিলে দুই পাখি মারাই উদ্দেশ্য। তবে তার জন্য হাতে বন্দুক তুলে নেননি। নেননি কোনও দমন-পীড়নের নীতি। বরং চক হাতেই বৈপ্লবিক কাজের সূচনা তাঁর। পুলিশ-শিক্ষকের ক্লাস করতে পেরে খুশি পড়ুয়ারাও। তাঁর ক্লাসে উপস্থিতির বহরেই টের পাওয়া যায় প্রমোদবাবু পড়ুয়াদের মধ্যেও বেশ জনপ্রিয়।
The post নকশালদের থেকে দূরে রাখতে গ্রামের পড়ুয়াদের অঙ্ক শেখাচ্ছেন এএসআই appeared first on Sangbad Pratidin.