বিক্রম রায়, কোচবিহার: খেয়াল খুশিমতো হাসপাতালের বহির্বিভাগে আসছেন চিকিৎসকরা। সময়মতো হাসপাতালে আসছেন না ডাক্তারবাবুরা। তার জেরে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে রোগীদের। এমন অভিযোগে দুই চিকিৎসককে শোকজ করল দিনহাটা মহকুমা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
শনিবার দিনহাটা পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সাবির সাহা চৌধুরী এবং দিনহাটা শহর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি বিশু ধর আচমকা দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালের বহির্বিভাগে আসেন। অভিযোগ, প্রায় দশটা বাজতে চললেও অধিকাংশ বিভাগেই চিকিৎসকরা উপস্থিত ছিলেন না। অথচ কয়েকশো রোগী লাইনে দাঁড়িয়ে। এর পরই কার্যত ক্ষোভে ফেটে পড়েন তৃণমূলের নেতৃত্ব। গোটা ঘটনার সাক্ষী ছিলেন খোদ হাসপাতাল সুপার রঞ্জিত মণ্ডল। তার পরই দুজন চিকিৎসককে শোকজ করা হয়। সুপার রঞ্জিত বলেন, "চিকিৎসকরা সময় মতো আসছেন না বলেই অভিযোগ রয়েছে। দুজন চিকিৎসককে এদিন শোকজ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।"
এই বিষয়ে তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ বলেন, "চিকিৎসকরা আগে রোগীদের ঠিকমতো পরিষেবা দিন। রোগীরা আপনাদের ভগবানের মতো দেখেন। যদি কেউ দেরি করেন, তাঁকে আউটডোরে না পাওয়া যায়, তাহলে সেটা বললে আবার রাগ হয় ওঁনাদের।"
যদিও এটা প্রথম ঘটনা নয়, সাম্প্রতিক সময়ে একাধিকবার উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ণ গুহ দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে বেশ কিছু চিকিৎসকের নাম না করেই সোশাল মিডিয়ার সমালোচনা করেছিলেন। কিছু ক্ষেত্রে অসৎ উপায়ে অর্থ উপার্জনের জন্য চিকিৎসকরা 'রেফার' করে দিচ্ছেন বলেও তিনি অভিযোগ তুলেছিলেন। এর পরই তৃণমূলের নেতৃত্ব এদিন হাসপাতালে গিয়েছিলেন। দিনহাটা পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সাবিব সাহা চৌধুরী বলেন, "বেশ কিছুদিন ধরেই পরিষেবা নিয়ে অভিযোগ আসছিল। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর কাছেও অভিযোগ জমা পড়ছে। সকাল নটার সময় বর্হির্বিভাগে চিকিৎসকদের আসার কথা থাকলেও তাঁরা কেউ ১১টায় কেউ আবার ১২টায় আসছেন। সমস্যায় পড়ছেন রোগীরা। রাজ্য সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে এবং সমালোচিত হচ্ছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী। এটা চলতে পারে না।" তাই সোমবার থেকে তাঁরা নিয়মিত নজরদারি রাখবেন। পরিষেবা নিয়ে কোনও গাফিলতি বরদাস্ত করা হবে না বলেও জানান পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান।
দিনহাটা শহর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি বিশু ধর বলেন, "রাস্তায় আন্দোলন করে চিকিৎসকদের জন্য দাবি আদায় করা হচ্ছে অথচ রোগীরা চিকিৎসকদের কাছ থেকে সামান্যটুকু পরিষেবা পাচ্ছেন না।" তৃণমূল নেতৃত্বের এই হাসপাতাল পরিদর্শন কর্মসূচিতে খুশি রোগী এবং তার পরিবারের সদস্যরা। চিকিৎসা করাতে আসা রোগী রফিকুল ইসলাম বলেন, বর্হির্বিভাগে তাঁরা সকালে এসেছিলেন। অথচ দশটা পর্যন্ত টিকিট কাউন্টারও খোলা হয়নি। চিকিৎসকরা অনেক পরে এসেছেন। তার পরেও চিকিৎসকরা ঠিকমতো রোগী দেখেন না। সমস্যা শোনার আগেই ওষুধ লিখে দেন।"