নন্দন দত্ত, সিউড়ি: বগটুই কাণ্ডে (Bagtui Case) মূল অভিযুক্ত লালন শেখের সিবিআই হেফাজতে মৃত্যু ঘিরে তোলপাড় গোটা রাজ্য। আত্মহত্যা না কি খুন? কী উদ্দেশ্যে লালনকে মারা হল? এটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন। সূত্রের খবর, বগটুই গণহত্যার রহস্য ভেদ করতে লালন শেখের বাড়ির সিসিটিভির হার্ড ডিস্কের সন্ধান চালাচ্ছিল সিবিআই। রবিবারও সেই হার্ড ডিস্কের খোঁজ পেতে লালনকে নিয়ে বগটুইয়ের পূর্বপাড়ায় হানা দিয়েছিল তদন্তকারী আধিকারিকেরা। এরপর সোমবার সিবিআইয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পের শৌচাগার থেকে উদ্ধার হয় লালনের দেহ। তাহলে কি বগটুই কাণ্ডের মূল অভিযুক্তর মৃত্যুর রহস্য লুকিয়ে সেই হার্ড ডিস্কেই? উঠছে প্রশ্ন।
চলতি বছরের ২১ মার্চ বীরভূমের বগটুই গ্রামের পূর্বপাড়ায় আগ্নিদগ্ধ হয়ে ১০ জনের মৃত্যু হয়। ওই দিনই খুন হয়েছিলেন পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ভাদু শেখও। তাঁর হত্যার বদলা নিতেই এই গণহত্যা ঘটে বলে অভিযোগ। ৩১ মার্চ তদন্তভার হাতে নেয় সিবিআই। তারপর থেকেই সিসিটিভি ফুটেজের খোঁজ শুরু করেছে তারা। জানা গিয়েছে, পূর্ব পাড়ার বানিরুল শেখের বাড়ি থেকে ৯ জনের দেহ উদ্ধার হয়। এর উল্টোদিকেই লালন শেখের বাড়ি। অভিযোগ, তার বাড়ির উঠোনেই জড়ো হয়ে গণহত্যার পরিকল্পনা করেছিল অভিযুক্তরা। কারা জড়ো হয়েছিল সেই রাতে, কারা কারা এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত তা জানার সবচেয়ে বড় উপায় ছিল লালন শেখের বাড়ির দক্ষিণ পূর্ব কোণে লাগানো সিসিটিভি। কিন্তু সেই সিসিটিভির হার্ড ডিস্কের হদিশ মেলেনি।
[আরও পড়ুন: বেপরোয়া গাড়ি পিষল চার শাবককে, মৃত্যুর পর দীর্ঘক্ষণ দেহ আগলে বসে সারমেয় মা]
৩১ মার্চ লালন শেখের বাড়িতে হানা দিয়েছিল সিবিআই। কিন্তু কম্পিউটার থেকে গায়েব ছিল সেই হার্ড ডিস্ক। তবে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি পেয়েছিল তারা। রবিবার ফের লালনকে সঙ্গে নিয়ে গ্রামে যায় তারা। লালনের স্ত্রীর রেশমা বিবির অভিযোগ, “লালন বলেছিল, আমি আর বেশিদিন বাঁচব না। হার্ড ডিস্কের খোঁজ পেতে সিবিআই আমার উপর অত্যাচার করছে। বেশিদিন এই অত্যাচার সহ্য করতে পারব না।” রেশমা বিবির দাবি, সিবিআইয়ের অত্যাচারেই মৃত্যু হয়েছে লালনের। যদিও তদন্তকারীদের দাবি, আত্মহত্যা করেছেন তিনি। মঙ্গলবার মৃতদেহ ময়নাতদন্ত করা হবে। অশান্তি এড়াতে বিরাট পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
এদিকে সিবিআইয়ের জোনাল ডিরেক্টরের রিপোর্ট তলব করেছে। দিল্লি থেকে একাধিক তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে সিবিআইয়ের রামপুরহাটের অস্থায়ী ক্য়াম্পের দায়িত্বে থাকা আধিকারিকদের কাছে। পাশাপাশি, অস্থায়ী ক্যাম্পের দায়িত্বে থাকা সিআরপিএফ জওয়ানদের বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে বিভাগীয় তদন্ত। লালনের মৃত্যু ঘিরে অশান্তি এড়াতে সিবিআই ক্যাম্প, মৃতের বাড়ি, তাঁর শ্বশুর বাড়ি-সহ গোটা গ্রাম কড়া নিরাপত্তায় মোড়া হয়েছে।