দেবব্রত দাস, খাতড়া: করোনার (Coronavirus) ধাক্কায় জবুথবু গোটা বিশ্ব। এই পরিস্থিতিতে প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বেরনো মানা। তবে করোনা কালে একেবারে ব্যতিক্রমী কাজ করে সকলকে চমকে দিল বাঁকুড়ার ইন্দাসের স্কুলছাত্রী পায়েল নন্দী। কন্যাশ্রী প্রকল্পের টাকায় সকলকে মাস্ক বিলি করে চমকে দিয়েছে সে। তার কৃতিত্বকেই স্বীকৃতি জানাবে রাজ্য সরকার। আগামী ১৪ আগস্ট পায়েলের হাতে তুলে দেওয়া হবে কন্যাশ্রী পুরস্কার।
এস এন পাঁজা হাইস্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী পায়েল নন্দী। বাঁকুড়ার (Bankura) গোবিন্দপুরের নন্দীপাড়ার বাসিন্দা সে। বাবা, মা, ছোট ভাই ছাড়া আর কেউ নেই তার। বাবা মাছ চাষ করে সংসার চালান। মা গৃহবধূ। ছোট থেকেই পায়েল মেধাবী ছাত্রী হিসাবে এলাকায় পরিচিত। স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষায় প্রথম কিংবা দ্বিতীয় হয় সে। ছোটবেলা থেকেই মানুষের কষ্ট, দুঃখ একটু বেশিই যেন স্পর্শ করে তাকে। কেঁদে ওঠে অপরের দুঃখে। অসহায়দের পাশে দাঁড়ানোও তার নিত্যদিনের অভ্যাস।
[আরও পড়ুন: বনদপ্তরে চাকরি দেওয়ার নামে লক্ষ লক্ষ টাকা প্রতারণা, গ্রেপ্তার ভুয়ো সাংবাদিক]
করোনা কালে পায়েল অনেককেই দেখেছেন যাঁরা শুধুমাত্র টাকার জন্য মাস্ক (Mask) পরতে পারছেন না। সেই সমস্ত মানুষদের ভাইরাসের কবল থেকে দূরে রাখার কথা মাথায় আসে তার। তাই একদিন বাবার সঙ্গে ব্যাংকের পথে হাঁটা দেয় সে। সেখানে গিয়ে নিজের কন্যাশ্রীর অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলে পায়েল। মেয়ে টাকা দিয়ে কী করবে, তা প্রথমে বুঝতে পারেননি তার বাবাও। পরে পায়েল জানায় ওই টাকা দিয়ে কেনা মাস্ক সে একশো দিনের কাজের শ্রমিক এবং পথচারীদের মধ্যে বিলি করতে চায়। মেয়েকে বাধা দেননি বাবা। মাস্ক বিলি করে সকলের নজর কাড়ে পায়েল।
করোনা সচেতনতামূলক প্রচারের জন্য সর্বত্র প্রশংসিত হয় পায়েল। আর সেই কাজের জন্য তাকে স্বীকৃতি দিতে চলেছে রাজ্য সরকার। আগামী ১৪ আগস্ট কন্যাশ্রী দিবসে তাকে পুরস্কৃত করা হবে। জেলার কন্যাশ্রী প্রকল্পের আধিকারিক রঞ্জনা রায় বলেন, “বাঁকুড়ার তিনজন ছাত্রীকে সংবর্ধনা দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। তারা কেউ কন্যাশ্রী প্রকল্পের (Kanyashree Project) টাকায় মাস্ক বিলি করেছে, কেউ আঁকা শিখিয়েছে আবার কেউ জাতীয় মেধা অন্বেষণ পরীক্ষায় সফল হয়েছে।” স্বীকৃতি নিয়ে অবশ্য বিশেষ মাথা ঘামাতে নারাজ পায়েল। মানুষকে করোনার কবল থেকে বাঁচাতে পেরেই খুশি সে।