shono
Advertisement
Jamalpur

পার্টি অফিসে মাংস রান্না, মদের আসর! দলীয় কোন্দলে প্রহৃত জেলা বিজেপির পদাধিকারী

ছাব্বিশের ভোটের আগে জামালপুরে বিজেপির দলীয় কোন্দল তুঙ্গে।
Published By: Sucheta SenguptaPosted: 04:39 PM Dec 26, 2025Updated: 05:05 PM Dec 26, 2025

সৌরভ মাজি, বর্ধমান: বিধানসভা ভোটের মুখে ফের কোন্দল গেরুয়া শিবিরে। দলীয় কার্যালয়কেই পানশালা বা 'বার' বানানোর মতো ভয়ংকর অভিযোগ। কাটোয়া সাংগঠনিক জেলার এক সাধারণ সম্পাদক ও তাঁর অনুগামীদের ব্যাপক মারধরের অভিযোগ উঠেছে দলীয় নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। আবার দলের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আরও কয়েকজন পদাধিকারীকেও মারধর করা হয়েছে। এই ঘটনায় আঙুল উঠছে বিজেপির আদি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। ঘটনা ঘিরে শোরগোল জামালপুরে। যদিও দলের জেলা সভানেত্রী স্মৃতিকণা বসু বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছেন। তাঁর দাবি, তাঁর কাছে কেউ কোনও অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন।

Advertisement

বিজেপি সূত্রে খবর, সভানেত্রী হওয়ার পর থেকেই নিজের অনুগামীদের বিভিন্ন পদে বসিয়েছেন স্মৃতিকথা। যা নিয়ে দলের একটা বড় অংশ ক্ষুব্ধ। জামালপুরের সৌমেন হাজরাকে জেলার সাধারণ সম্পাদক করেছেন স্মৃতিকণা। এই সৌমেনকে 'তৃণমূলের দালাল' অ্যাখ্যা দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আপত্তির কথা জানাচ্ছিলেন আদি বিজেপিরা। অভিযোগ, জামালপুরের বিজেপি কার্যালয়ের ভিতরে রান্নাঘর বানানো হয়েছে। সেখানে মাংস রান্না করে কার্যালয়ের ভিতরে নিয়মিত মদের আসর বসানো হচ্ছিল। বুধবার রাতে সেখানে আচমকা হানা দেন আদি বিজেপি নেতাকর্মীরা। মদের আসরে সৌমেন হাজরা, ৩ নম্বর মণ্ডল সভাপতি অসীম শীল, ১ মণ্ডলের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ বাগ, বসন্ত পাঁজা, ৩ নম্বর মণ্ডলের সাধারণ সম্পাদক সমীরণ দাস-সহ কয়েকজন অনুগামীকে হাতেনাতে পাকড়াও করেন তাঁরা। অভিযোগ, ব্যাপক মারধর করা হয় তাঁদের। তারপর পার্টি অফিসে থাকা বিভিন্ন মদের বোতল, মদ খাওয়ার গ্লাসের ভিডিও করে তা সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।

জামালপুরের বিজেপি কার্যালয়ে এসব চলছে বলে অভিযোগ। নিজস্ব ছবি।

বৃহস্পতিবার জামালপুরে সৌমেনের আরও কয়েকজন অনুগামীর উপরও হামলা করা হয় বলে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, বিএলএ-২ এর টাকা আত্মসাৎ করেছে ওই সব নেতারা। তাঁদের রাস্তায় ফেলে পেটানো হয়। পিন্টু সাহা নামে এক আদি বিজেপি কর্মী সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, "আমাদের বুথের বিএলএ-২ এর টাকা সৌমেন, জেলা সভানেত্রী, মণ্ডল সভাপতিরা মেরে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর বাংলা সফরের আগে প্রতিটা শক্তিকেন্দ্রের জন্য যে ৫ হাজার টাকা করে পাঠানো হয়েছিল রাজ্য থেকে সেই টাকাও মেরে দিয়েছে কোনও পথসভা না করে।"

জামালপুর বিধানসভা বিজেপির ফেসবুক পেজে লেখা হয়েছে, "দলীয় কার্যালয় আমাদের মন্দির। সেটাকে মদের বার বানিয়ে দিয়েছে জেলা সভানেত্রীর কাছের লোকেরা। আমরা ছেড়ে কথা বলব না। স্মৃতিকণা বসুর পদত্যাগ চাই।" আদি বিজেপির আর এক নেতা কেশব কোঙার বলেন, "পূর্ব বর্ধমান জেলার নেতৃত্বরা আমাদের সংগঠনকে শেষ করে দিয়েছে। আশু বদল না হলে বিধানসভা ভোটের দলের প্রার্থীদের জামানত জব্দ হয়ে যাবে।" আদি বিজেপি নেতা তথা জামালপুরের প্রাক্তন মণ্ডল সভাপতি জগবন্ধু ঘোষ বর্তমানে দলে ব্রাত্য। তিনি বলেন, "বিজেপি দলটাকে আমরা বাবা-মায়ের থেকেও বেশি ভালোবাসি। পার্টি অফিস অমাদের কাছে মন্দির। সেটাকেই এরা বার বানিয়ে দিয়েছে! দলটাকে এরা শেষ করে দিল।" বুধবার রাতে তাঁর নেতৃত্বেই আদি বিজেপির লোকজন হানা দিয়ে দলের নেতাদের পার্টি অফিসের ভিতরে মদের আসরে হাতেনাতে ধরেছে।

তৃণমূল নেতা দেবু টুডু বলেন, "তিনটে 'ম' দিয়ে বিজেপি দলটা চলে। দলের কর্মীরাই নেতাদের পেটাচ্ছে। দলীয় কার্যালয়কে বার বানিয়েছে। এটা বিজেপিতেই সম্ভব। মানুষ সব দেখছে। আরও জনবিচ্ছিন্ন হয়ে বিলীন হয়ে যাবে বিজেপি।" যদিও দলের কর্মীদের মার খেলেও আক্রান্তরা পুলিশে কোনও অভিযোগ করেননি। দলের জেলা নেতৃত্বও বিষয়টি ধামাচাপা দিতে চাইছেন। বিধানসভা ভোটের আগে পদ্মকোন্দলে জামালপুরে চলছে বিজেপির দুই গোষ্ঠীর ঝামেলা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
Advertisement