সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মনোরঞ্জন ব্যাপারীর (Manoranjan Byapari) ফেসবুক পোস্ট নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চলছে জোর জল্পনা। কেনই বা তিনি রাজনীতিতে আসা নিয়ে ফেসবুকে আফসোস করলেন আর কী কারণে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে বিদায় নিলেন, তা নিয়ে চলছে জোর চর্চা। বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়ক যদিও দু’টি সিদ্ধান্তেরই কারণ উল্লেখ করেছেন। তবে তা মানতে নারাজ বিজেপি। পরিবর্তে মনোরঞ্জন ব্যাপারীর এই দুই সিদ্ধান্তের নেপথ্য কারণ হিসাবে বিস্ফোরক দাবি করে বসলেন সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়।
বিজেপি সাংসদের দাবি, বাংলার মানুষ কোনও সুযোগ পান না। রাজ্য সরকারের প্রকল্প তো দূর। কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পের সুবিধাও পান না তাঁরা। সাধারণ মানুষের কাছে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পগুলির সুযোগ সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার দায় রাজ্যকে নিতে হবে বলেও দাবি তাঁর। এছাড়াও সাংসদের মতে, তৃণমূল বাংলার মসনদে রয়েছে ঠিকই। তবে বহু তৃণমূল বিধায়কই এ রাজ্যে কাজ করার সুযোগ পান না বলেই অভিযোগ তাঁর। নেতা-মন্ত্রীরা দুর্নীতিপরায়ণ বলেও দাবি লকেটের (Locket Chatterjee)। কাজ করার সুযোগ না পেয়েই মনোরঞ্জন ব্যাপারী হতাশাগ্রস্ত হয়ে এহেন পোস্ট করেছিলেন বলেই ধারণা বিজেপি সাংসদের। মনোরঞ্জন ব্যাপারী ফেসবুক পোস্টের জন্য দলের কাছে ধমক খেয়েছেন বলেও মনে করছেন লকেট। বিজেপি সাংসদের আরও দাবি, সে কারণেই তিনি তড়িঘড়ি সোশ্যাল মিডিয়া ছেড়ে বিদায়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
[আরও পড়ুন: পার্টি অফিস থেকে টেনে বের করে TMC কর্মীদের গুলি, প্রতিবাদ মিছিলের ডাক মদন মিত্রের]
উল্লেখ্য, শুক্রবার মনোরঞ্জন ব্যাপারীর একটি ফেসবুক পোস্ট (Facebook Post) নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছিল রাজনৈতিক মহলে। সেখানে বিধায়ক লিখেছিলেন, “আমি হাঁপিয়ে যাচ্ছি। সত্যিই আমার খুব কষ্ট হচ্ছে। মনে হচ্ছে রাজনীতিতে এসে আমি বোধহয় ঠিক করিনি। যখন দূরে ছিলাম, যখন তেমনভাবে কিছু জানতাম না, খানিকটা সুখে ছিলাম। এখন সব দেখে জেনে, সরাসরি যুক্ত হয়ে আর কোনও রাতেই ভাল মতো ঘুমতে পারছি না। কী এক কষ্টে মাঝরাতে উঠে পায়চারী করতে বাধ্য হই। এত অভাবী-দু্ঃখী মানুষ, এতো তাঁদের সমস্যা। তাঁদের সকল আশা ভরসার কেন্দ্রে এখন এসে দাঁড়িয়ে পড়েছি আমি। আমাকে ঘিরে তাদের অনেক আশা প্রত্যাশা। যেন আমার কাছে কোন জাদুকাঠি আছে।”
তার ঠিক চব্বিশ ঘণ্টা যেতে না যেতেই ফেসবুক থেকে বিদায়ের সিদ্ধান্ত নেন মনোরঞ্জন ব্যাপারী। তিনি ফেসবুকে লেখেন, “আমাকে কিছু দিনের জন্য ফেসবুক থেকে বিদায় নিতে হচ্ছে। বন্ধ করে দিতে হচ্ছে টিভির সাক্ষাৎকার। কারণ, কিছু মানুষ খুব কৌশলী হয়ে উঠেছে। যাদের হৃদয় বৃত্তি মরে গিয়েছে। তাঁরা মানবিক আর্তির ধার ধারেন না। সহজ সরল ভাষা ভাবনাকে বাঁকিয়ে দুমড়ে মুচড়ে একটা অন্য রূপ দিয়ে মা মাটি মানুষের জনপ্রিয় সরকারকে বদনাম করতে চাইছে। বিশেষ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে চায়।” নাম না করে বিরোধীদের কটাক্ষ করে তিনি লিখেছেন, “কোনও একটা শিবির থেকে এই সব কাজে নিয়োজিত করা হয়েছে। তাঁরা এই বিপুল জনাদেশ নিয়ে তৃতীয়বার ক্ষমতায় ফিরে আসা মা মাটি মানুষের তৃণমূলকে যেমন সহ্য করতে পারছে না, তেমনই আমাকেও সহ্য করতে চাইছে না। ঝড় তোলার চেষ্টা চলছে আমার একটা মানবিক আর্তি মাখানো ফেসবুক পোস্ট নিয়ে। ওরা থামবে না। কিছু না কিছু করতেই থাকবে। তাই মনে হচ্ছে আমার থেমে যাওয়া উচিৎ। লেখা আর বলা আপাতত কিছুকাল বন্ধই থাকুক।” এই দুই পোস্ট ঘিরেই এখন রাজনৈতিক মহলে চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে মনোরঞ্জন ব্যাপারী।