ধীমান রায়, কাটোয়া: বিজেপি পোলিং এজেন্টের উপর অত্যাচার চালানোর অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে৷ অভিযোগ, পোলিং এজেন্টের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ২১ টি গবাদি পশু ও মোটরবাইক লুট করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে৷ মারধরের পাশাপাশি ওই পোলিং এজেন্ট সহ বেশ কয়েকজন বিজেপি কর্মীর বাড়িতে ভাঙচুরও করা হয়েছে। তিনদিন ধরে প্রায় ১০ জন বিজেপি কর্মী গ্রামছাড়া। বিজেপির অভিযোগ ভোটের সময় ছাপ্পা দিতে বাধা দেওয়ায় শাসকদলের লোকজন তাঁদের উপর অত্যাচার করছে। মঙ্গলকোটের নতুনহাট বাজারের পুরাতনহাট পাড়ার ঘটনায় রীতিমতো উত্তেজনা ছড়িয়েছে।
[ আরও পড়ুন: ষষ্ঠ দফার আগেই বুথ ফেরত সমীক্ষা তৃণমূলের, ভাল ফলের আশায় শাসকদল]
বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে পড়ে মঙ্গলকোট বিধানসভা এলাকা। মঙ্গলকোট এলাকার অধিকাংশ বুথেই বিরোধী দলের পোলিং এজেন্টদের ভোটের সময় দেখতে পাওয়া যায়নি। বিশেষ করে মঙ্গলকোট পঞ্চায়েত এলাকার প্রায় সমস্ত বুথই ভোটের দিন ছিল বিরোধী এজেন্ট শূন্য। ব্যতিক্রম ৬৪ নম্বর বুথ। পুরাতনহাটের এই বুথে বিজেপির হয়ে পোলিং এজেন্ট ছিলেন শান্তি ঘোষ। তিনি বিজেপির মঙ্গলকোট ৪৯ নম্বর মণ্ডলের সাধারণ সম্পাদকও৷
শান্তি ঘোষের অভিযোগ, ‘‘ভোট চলাকালীন তৃণমূলের লোকজন আমাদের বুথ থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করে। তবু আমরা বুথ থেকে সরে যাইনি। তাই তার জেরে বুধবার আমার ও আরও কয়েকজন বিজেপি কর্মীর বাড়িতে হামলা চলে। বুধবার সকালে শান্তি ঘোষ ও কয়েকজন বিজেপি কর্মীর বাড়িতে বাইকবাহিনী এসে হুমকি দিয়ে যায়। ওদিন রাত প্রায় ১১ টা নাগাদ বেশ কিছু লোকজন চড়াও হয় আমাদের বাড়িতে। কয়েকজনকে মারধর করে হামলাকারীরা। তারপর আমার গোয়াল ঘর থেকে ১৩ টি গরু ও বাছুর, ১ টি মোষ এবং ছাগল ভেড়া মিলে ৭ টি গবাদি পশু বের করে নিয়ে চলে যায়। আমার বাইকটি নিয়ে পালায় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা।’’
[ আরও পড়ুন: ‘মানুষকে টাকা দিয়ে কেনা যায় না’, ভারতীকে তোপ দেবের]
বৃহস্পতিবার শান্তি ঘোষ মঙ্গলকোট থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন। তবে ঘটনার পর থেকেই গ্রাম ছেড়ে পালাতে হয়েছে শান্তিবাবু ও তার পরিবারকে। গ্রামছাড়া আরও প্রায় ১০ জন বিজেপি কর্মী। গেরুয়া শিবিরের নেতা শিশির ঘোষ বলেন,‘‘শাসকদল আমাদের কর্মীদের উপরে নির্মম অত্যাচার শুরু করেছে। পুরাতনহাটে আমাদের কর্মীদের প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি করে দিয়েছে। কয়েকজন আহত হয়েছেন৷ শান্তি ঘোষের গবাদি পশুগুলি উদ্ধারের জন্য পুলিশের কাছে অনুরোধ করেছি।” শান্তি ঘোষ বলেন,‘‘মঙ্গলকোট গ্রামে দু-তিনজন তৃণমূল কর্মীর গোয়ালে আমার ২১ টি গবাদি পশু লুকিয়ে রাখা হয়েছে বলে খবর পেয়েছি। ওই গবাদি পশু ফেরত না পেলে আমরা সংসার চালাতে পারব না৷’’ যদিও হামলা ও লুটপাটের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মঙ্গলকোট ব্লক তৃণমূল সভাপতি অপূর্ব চৌধুরি। তিনি বলেন,‘‘শান্তি ঘোষের সঙ্গে তাঁর ভাইয়ের পারিবারিক অশান্তি রয়েছে৷ তা থেকেই ওই ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি।’’ গবাদি পশুগুলিও শান্তিবাবু নিজেরাই সরিয়ে ফেলেছেন বলে দাবি তৃণমূল নেতার।
ছবি: জয়ন্ত দাস।
The post তৃণমূলের বিরুদ্ধে অত্যাচারের অভিযোগ, মঙ্গলকোটে ঘরছাড়া ১০ জন বিজেপি কর্মী appeared first on Sangbad Pratidin.
