shono
Advertisement

লকডাউনে জনশূন্য শক্তিগড়, খাঁ খাঁ করছে শতাধিক ল্যাংচার দোকান

রাস্তাঘাটে নজরে পড়ছে না একটি সারমেয়ও। The post লকডাউনে জনশূন্য শক্তিগড়, খাঁ খাঁ করছে শতাধিক ল্যাংচার দোকান appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 12:12 PM Apr 06, 2020Updated: 12:12 PM Apr 06, 2020

সৌরভ মাজি, বর্ধমান: এ কোন শক্তিগড়, চেনাই যাচ্ছে না। দিনের ২৪ ঘণ্টাই যেখানে মানুষ আর যানবাহনের মেলা বসত, সেখানে কোনও জনপ্রাণীর দেখা নেই। স্তব্ধ জাতীয় সড়কও। হয়তো এক ঘণ্টায় একটি গ্যাস ও একটি তেলের ট্যাঙ্কার হুস যাচ্ছে জাতীয় সড়ক ধরে। দেখা নেই কুকুরগুলোরও।

Advertisement

একটি দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে ভ্রাম্যমান একটি ল্যাংচার গাড়ি। ধুলোর পুরু আস্তরণ জমে গিয়েছে উইন্ডস্ক্রিনে। অনেক কষ্টে পড়া গেল গাড়ির কাঁচে ‘ল্যাংচা প্যালেস’ লেখাটা। এরপর ‘ল্যাংচা কুঠি’। আউশগ্রামে ‘তিন’ সিনেমার শুটিংয়ে এসে অমিতাভ বচ্চন এই দোকানের ল্যাংচা কিনেছিলেন। সেই ছবি দোকানের সামনে টাঙানো রয়েছে। তাতেও ধুলো জমেছে, ঝুল ধরেছে। মলিন হয়ে গিয়েছে বলিউডের শানেনশাহর ছবিও। ছবির পাশে যেখানে থরে থরে সাজানো থাকত ল্যাংচার ডালি। সেখানেও জমেছে ময়লা।

পূর্ব বর্ধমানের ২ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে শক্তিগড়ে রয়েছে ল্যাংচার শতাধিক দোকান। হাবও বলা চলে। দিনের সর্বক্ষণ খোলা থাকে এই বাজার। জাতীয় সড়ক ধরে চলাচলকারী লাখো গাড়ির একটা বড় অংশ এখানে থামত। গাড়ি থেকে নেমে কেউ ল্যাংচার স্বাদ নিতেন। অনেকে বাড়িও নিয়ে যেতেন। কিন্তু সেখানে এখন শ্মশানের শূন্যতা, মৃত্যুপুরীর নীরবতা বললেও অত্যুক্তি হবে না।

অনেক খুঁজে ল্যাংচা নিকেতনে এসে দেখা মিলল সন্দীপ যাদবের। বিহারের বাসিন্দা। কিন্তু এখানে ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে কাজ করছেন। করোনার কারণে দেশজুড়ে লকডাউন শুরু হওয়ায় বিহারের দ্বারভাঙ্গার বাড়িতে ফিরে যেতে পারেননি। দোকানেই থেকে গিয়েছেন সন্দীপবাবু ও আরও চারজন। জানালেন, লকডাউনের পর থেকেই সব ল্যাংচার দোকানই বন্ধ রয়েছে। তাঁরা নিয়ম মেনেই দোকানে থাকছেন। ওই ল্যাংচা নিকেতনের তিনটি দোকান রয়েছে। প্রায় ৬০ জন কর্মী। অধিকাংশই স্থানীয় গ্রামের। ফলে লকডাউনের সময় তাঁরা সকলে বাড়ি চলে গিয়েছেন। অন্যান্য সব দোকান মিলিয়ে হাজারখানেক কর্মী কাজ করেন। মিষ্টান্ন শিল্পী, রাধুনি, ক্যাশিয়ার, থালা-বাসন ধোয়া-সহ বিভিন্ন কাজে লোক থাকে। বেশিরভাগ সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা। কিছু বাইরের কর্মী থাকায় তাঁরা দোকানে থাকছেন বা আত্মীয় বাড়ি চলে গিয়েছেন। মালিকরাই অবশ্য তাঁদের সমরকম সহযোগিতা করছেন।

কয়েকদিন আগে রাজ্য সরকার সব মিষ্টির দোকান দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত খোলার অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু ঝাঁপ খোলেনি শক্তিগড়ের কোনও ল্যাংচার দোকানেই। উনুনে আঁচ পড়েনি একটিও দোকানে। রেস্তরাঁ-সহ অন্যান্য দোকানপাটও বন্ধ। ল্যাংচার দোকানের সামনে অনেক হকারও বসেন। ঝালমুড়ি, চা, ডাব, শসা নিয়ে। তাঁদেরও দেখা নেই। কৈলাশ ঝা নামে এক দোকান মালিক জানান, এখানে সব বাইরের কাস্টমার। তাই দোকান খুলে কোনও লাভ নেই যতদিন না গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক হচ্ছে। দুপুরে মাঠ থেকে ফিরছিলেন কৃষক বিমল মাঝি। ল্যাংচার দোকানের সামনেই দেখা তাঁর সঙ্গে। তিনি বললেন, “গত ১২-১৩ দিন ধরে নিজের এলাকা চেনাই যাচ্ছে না। আগে কোনওদিন এমন পরিস্থিতি হয়নি।”

The post লকডাউনে জনশূন্য শক্তিগড়, খাঁ খাঁ করছে শতাধিক ল্যাংচার দোকান appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement