দুলাল দে: ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে আইএসএল শুরু করতে না পারলে, এই মরশুমে বোধহয় আইএসএল আর হওয়ার সম্ভাবনাই নেই। অন্তত এই কথাটা বুঝে গিয়েছেন ক্লাব প্রতিনিধিদের সঙ্গে ফেডারেশনের ঠিক করে দেওয়া তিন কমিটির সদস্যরাও। সমস্যার পথ খোলার জন্য শুক্রবার দুপুরে ফের একবার ক্লাব প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন কমিটির সদস্যরা। কিন্তু শুক্রবারের আলোচনায় আইএসএল হবে কি হবে না, তা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসার খুব একটা সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে হয় না। ঠিক হয়েছে, এরপর সোমবার সব ক্লাবের সঙ্গে মিটিংয়ে বসবেন কমিটির তিন সদস্য। আর সেইদিনই চূড়ান্ত হবে এই মরশুমের আইএসএল হবে কি হবে না।
বুধবারই ক্লাব প্রতিনিধিরা আলোচনা করে ঠিক করেছিলেন, শুক্রবার ফের কমিটির সদস্যদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন। বুধবার আলোচনায় এই মুহূর্তে লিগ চালানোর জন্য সেরকম কিছু পথের কথা বলেছিলেন ক্লাব প্রতিনিধিদের। ক্লাব প্রতিনিধিরাও সেরকম আইএসএলের দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির জন্য কিছু পথের কথা জানিয়েছিলেন। তখন ঠিক হয়েছিল, দু'পক্ষই নিজেদের মতো করে আইএসএলের জন্য প্রস্তাব তৈরি করবে। সেগুলিই ক্লাব প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা হবে শুক্রবার। তারপর দু'পক্ষ এক জায়গায় এলে ২৯ ডিসেম্বর সোমবার আইএসএলের সব ক্লাবের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন কমিটির তিন সদস্য। সঙ্গে ফেডারেশনের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল সত্যনারায়ণ। আশা করা হচ্ছে, সেদিনই এই মরশুমের আইএসএলের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
কমিটির সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে ক্লাব প্রতিনিধিরা অন্তত একটা জিনিস বুঝতে পেরেছেন, এই মরশুমে আইএসএল যদি শুরু করতেই হয়, তাহলে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই শুরু করতে হবে। আর সেই কারণে দু'পক্ষই দ্রুত আলোচনায় বসছে। এই মরশুমে ছোট করে হলেও ক্লাবরা খেলতে আগ্রহী। কিন্তু তার আগে দেখে নিতে চাইছে আইএসএলের দীর্ঘ চুক্তি নিয়ে ফেডারেশন কী ভাবছে। যে কারণে, শুক্রবারের মিটিংয়ে দীর্ঘ চুক্তি নিয়ে তিন সদস্যর কাছে ক্লাব প্রতিনিধিরা জানতে চাইবেন, তাঁদের ভাবনা। কমিটির সদস্যরাও সেরকম কিছু প্রস্তাব তৈরি করে রেখেছেন। তবে এই মরশুমে আইএসএল খেলার জন্য ক্লাবরা মূলত কীভাবে কম খরচে খেলা যায়, সেই কথাই ভাবছে। যে কারণে, কমিটি যেরকম বলেছে, খরচ কমানোর জন্য রাজ্য সরকারের সঙ্গে কথা বলা হবে। আদৌ সেটা সম্ভব হবে কি না, তা নিশ্চিত করতে চান ক্লাব প্রতিনিধিরা। যেরকম প্রস্তাব মতো বাংলায় যদি খেলা হয়, তাহলে বড় ম্যাচগুলি ছাড়া ছোট ম্যাচগুলি কিশোরভারতী কিংবা কল্যাণীর মাঠেও করা যাবে। এরকমভাবেই পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
সবাই বুঝে গিয়েছেন, এই মরশুমে জাঁকজমক করে আইএসএল করার থেকে মাঠে ফুটবলটা গড়ানো বেশি জরুরি হয়ে পড়েছে সবার জন্য। ক্লাবরাও খেলতে চায়। কিন্তু আগে নিশ্চিত হতে চায়, ফেডারেশন দীর্ঘ চুক্তি নিয়ে কতটা সিরিয়াস। না কি, কোনওমতে সব দলগুলিকে মাঠে নামিয়ে দিতে চাইছে। আবার কমিটির সদস্যরাও মনে করছেন, একদিনের আলোচনায় দীর্ঘ চুক্তি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু আলোচনার মাধ্যমে সব সমস্যারই সমাধান সম্ভব। সেরকম হলে দু'পক্ষ একসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে দীর্ঘ চুক্তির জন্য শর্তগুলি নিয়ে আবেদন করবে। কিন্তু ক্লাবগুলি যদি এরকম শর্ত দেয়, দীর্ঘ চুক্তি না হলে এই মরশুমে আইএসএল খেলা সম্ভব নয়, তাহলে বোধহয় এই মরশুমে আর আইএসএল সম্ভব নয়। কিন্তু এই মরশুমের আইএসএল শুরু করে ক্লাবরা যদি দীর্ঘ চুক্তির আলোচনা শুরু করে, তাহলে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে আইএসএল শুরু হতে পারে।
