নিজস্ব সংবাদদাতা, বনগাঁ: কথায় আছে, ভোট বড় বালাই। সেই ভোটের অমোঘ টানে এবার তথাকথিত 'নিরীশ্বরবাদী' বামেরাও ধর্মের আফিম সেবনে বাধ্য হচ্ছে। মতুয়া গড়ে মন্দিরে পা রেখে হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ মন্দিরে গিয়ে প্রণাম করে এলেন সুজন চক্রবর্তী ও মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়রা!
রাজনৈতিক মহলে জল্পনা, এসআইআর আবহে মতুয়া সমাজে তৈরি হওয়া ক্ষোভ কাজে লাগাতে চাইছে বামেরা। নজরে মতুয়া ভোট। মতুয়া আবেগে শান দিতে 'বাংলা বাঁচাও যাত্রা' কর্মসূচিতে মঙ্গলবার গাইঘাটায় এসে সিপিএম নেতৃত্ব গেলেন ঠাকুরবাড়িতেও। সেখানে হরিচাঁদ ও গুরুচাঁদ ঠাকুরের মন্দিরে প্রণাম করেন সিপিএমের দুই কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী ও মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। গাইঘাটা মোড়ে সভাও করে সিপিএম। বনগাঁ শহরে বনগাঁ ১ নম্বর গেটে গুরুচাঁদ ঠাকুরের মূর্তিতে মালা দেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। বনগাঁ শহরে সিপিএমের মিছিলে মতুয়া ভক্তেরা ডঙ্কা-কাঁসি-নিশান নিয়ে হাঁটেন। প্রশ্ন উঠছে মুখে যারা ধর্মের রাজনীতির বিরোধিতা করে, যারা নিজেদের 'নিরীশ্বরবাদী', 'মার্কসবাদী' বলে দাবি করেন, তাঁরা স্রেফ ভোটের টানে সব নীতি আদর্শ বিসর্জন দিয়ে দিলেন?
ঠাকুরবাড়িতে দাঁড়িয়ে সুজন বলেন, তৃণমূল মতুয়াদের দখলদারি নিতে চেয়েছিল। বিজেপি সেই দখলদারিতে ভাগ বসানোর চেষ্টা করে। আমরা সেই দখলদারি ভেঙে দেব। সেলিমের বক্তব্য, মতুয়ারা বাংলার শিল্প-সংস্কৃতির অঙ্গ। তৃণমূল ও বিজেপি মতুয়া ঠাকুরবাড়িকে ভাগ করেছে। দলীয় ক্যাডারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ঝান্ডায় যে ডান্ডা আছে সেটা কঞ্চি হলে হবে না। মোটা ও মজবুত করতে হবে। তাতে তেল মাখালে-ই বাংলা বাঁচবে।
ঝান্ডার ডান্ডায় তেল মাখিয়ে রাখার হুঁশিয়ারি নিয়ে জেলা তৃণমূল সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘‘সামনে ভোট আসছে, কোন আসন পাবে না ওরা (সিপিএম) জানে। তাই এখন থেকে মাথা খারাপ হয়ে গেছে। ভুলভাল বকতে শুরু করেছে।’’ সিপিএমকে কটাক্ষ করে বনগাঁর সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরও বলেন, ‘‘সিপিএম নেতা-নেত্রীরা রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ায়। কোনও মঞ্চ পায় না। ঠাকুরবাড়িকে মঞ্চ হিসেবে ব্যবহার করার চেষ্টা করছে। এতে কোনও লাভ হবে না।’’ তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ দাসের বক্তব্য, ‘‘সিপিএম জীবাশ্মে পরিণত হয়েছে। ডাইনোসরের মতো ওরা কখনও আর ফিরে আসবে না।’’
