সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো, উত্তরবঙ্গ: পুজোর শুরুতেই পাহাড়ে বারো ঘণ্টা বনধ। ২০ শতাংশ হারে বোনাসের দাবিতে শুক্রবার চা শ্রমিক সংগঠনগুলোর জয়েন্ট ফোরাম ওই বনধের ডাক দেয়। এদিন ভোর ৬টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বনধ চলে। পাশাপাশি বোনাসের দাবিতে বৃহস্পতিবার থেকে চলছে অনশন। দার্জিলিং মোটর স্ট্যান্ডে দ্বিতীয় দিনেও অনশনে বসেন বিনয়পন্থী মোর্চা, জাপ, সিপিএম, তৃণমূল, সিপিআরএম, গোর্খা লিগ ও হিল কংগ্রেস নেতৃত্ব। বোনাসের দাবিকে সামনে রেখে পুজোয় পর্যটন মরসুমের ঠিক শুরুতে এই আন্দোলন নতুন করে অশান্তি উস্কে দিচ্ছে কি না সেটা নিয়ে ইতিমধ্যে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
[আরও পড়ুন: অতিবৃষ্টিতে বঙ্গে আকাল পদ্মের, চাহিদা মেটাতে ওড়িশা থেকে ফুল আমদানি]
এদিন পাহাড়ে দোকানপাট ছিল বন্ধ। তবে রাস্তায় ছোট গাড়ি চলাচল করেছে। ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক ছিল। তাই পর্যটকদের তেমন কোনও সমস্যা হয়নি। জরুরি পরিষেবাকে বন্ধের আওতায় রাখা হয়েছে। এদিকে ২০ শতাংশ হারে বোনাসের জন্য বৃহস্পতিবার চা বাগান মালিকদের চিঠি দেন দার্জিলিঙের সাংসদ রাজু বিস্তা। জাপ নেতা অমর লামা অভিযোগ করেন, চা বাগান কর্তৃপক্ষের অনমনীয় মনোভাবের জন্য পাহাড়ে অশান্তির পরিবেশ তৈরি হচ্ছে। পর্যটকদের কাছেও ভুল বার্তা যাচ্ছে। অন্যদিকে, শুক্রবারও বোনাস সমস্যার নিষ্পত্তি না হওয়ায় ৬ অক্টোবর থেকে দার্জিলিংয়ের ওল্ড সুপার মার্কেটে আমরণ অনশনে বসার হুমকি দিয়েছেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সভাপতি বিনয় তামাং। শুক্রবার শিলিগুড়িতে সাংবাদিক বৈঠক করে বিনয় একথা জানিয়েছেন।
এদিন যান চলাচল কম থাকায় দার্জিলিঙ, কার্শিয়াং ও কালিম্পং সকাল থেকেই শুনশান ছিল। দোকানপাট খোলেনি, বাজারও বসেনি। পাহাড়ের ৮৭টি চা বাগানের ৮০হাজার চা শ্রমিক পুজো বোনাস পায়নি বলে অভিযোগ। দার্জিলিঙ, ঘুম, সোনাদা, মিরিক, কার্শিয়াং, সুখিয়াপোখরি, রোহিনী, এলাকার গ্রামীণ বাজারগুলিতেও বনধের প্রভাব পড়েছে। এদিকে বৃহস্পতিবার থেকে চা বাগানগুলোতে চলছে অনশন ও বিক্ষোভ। দার্জিলিংয়ের অনশন মঞ্চে হাজির ছিলেন জিটিএ চেয়ারম্যান অনীত থাপা, জিএনএলএফের সভাপতি মন ঘিসিং। আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছে বিমলপন্থী মোর্চাও।
[আরও পড়ুন: ঘরে ফিরল জওয়ানের কফিনবন্দি দেহ, শোকস্তব্ধ পরিবারের পাশে স্থানীয় বিধায়ক]
ট্রেড ইউনিয়নগুলির জয়েন্ট ফোরামের তরফে করুণা গুরুং জানিয়েছেন, পর্যটকদের কথা ভেবে বনধ বিকাল ৪টা পর্যন্ত করা হচ্ছে। মালিকদের উচিত শ্রমিকদের বোনাসের দাবি মেনে নেওয়া। যদিও চা বণিকসভার অভিযোগ, এই আন্দোলনের কোনও ভিত্তি নেই। কারণ, ১৭ অক্টোবর ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হওয়ার কথা। তার আগে বিক্ষোভ আন্দোলন করা, বনধ ডাকা ঠিক হয়নি। বৃহস্পতিবার থেকে পাহাড়ের বেশিরভাগ বাগানে কাজ বন্ধ। শুক্রবার শ্রমিকরা গণছুটি নেয়। পাহাড়ের চা বাগানের শ্রমিকরা এবার পুজোয় ২০ শতাংশ হারে বোনাসের দাবি করে। কিন্তু মালিক পক্ষ সেই দাবি না মেনে ৮.৩৩ শতাংশ বোনাস দেওয়ার কথা ঘোষণা করে। শ্রমিক সংগঠনগুলি ২০ শতাংশ হারে বোনাসের দাবিতে অনড় থাকে। এরপর কলকাতায় ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হয়। কিন্তু সেই বৈঠক ভেস্তে যায়। ১৭ অক্টোবর ফের বৈঠক ডাকা হয়েছে। তার আগে এই বনধ। হিমালয়ান হসপিটালিটি ট্রাভেল ডেভলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, “ষষ্ঠীর দিন বনধ পর্যটনে অবশ্যই বড় ধাক্কা।”
The post ১২ ঘণ্টার বনধে স্তব্ধ পাহাড়, পুজোয় পর্যটন শিল্পে ধাক্কা appeared first on Sangbad Pratidin.
