ব্রতীন দাস, শিলিগুড়ি: জিটিএ চুক্তিপত্রের প্রতিলিপি পোড়ানো। পিঠে টিউবলাইট ভেঙে রক্তাক্ত হওয়া। আন্দোলনের আড়ালে পাহাড়ে মোর্চার তাণ্ডবও চলছে সমান তালে। মঙ্গলবার তাকদার বিডিও অফিসে হামলা চলল। সেবকে ভাঙচুর হল গাড়ি। তাকদায় মারমুখী মোর্চা সমর্থকদের হাত থেকে কোনওমতে পালিয়ে বাঁচেন কর্মীরা। পাহাড়ের জনজাতিগুলির জন্য গঠিত উন্নয়ন পর্ষদের শীর্ষকর্তারাও মোর্চার তাণ্ডবের শিকার। কারও বাড়িতে হামলা, কারও গাড়ি ভাঙচুর হয়।
[জিটিএ চুক্তিপত্র পুড়িয়ে মোর্চার ‘জেহাদ’, শরীরে টিউবলাইট ভেঙে প্রতিবাদ]
মুখে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের কথা। কার্যক্ষেত্রে হিংসার আশ্রয়। নিশানায় সরকারি সম্পত্তি। যথেচ্ছ ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ। বনধের ত্রয়োদশ দিনেও মোর্চার জঙ্গিপনার সাক্ষী থাকল দার্জিলিং। মঙ্গলবার দুপুরে তাকদার বিডিও অফিসে হানা দেয় বেশ কয়েকজন মোর্চা সমর্থক। বাইরে থেকে ইটবৃষ্টি শুরু হয়। মশাল ছুড়ে বিডিও অফিসে আগুন ধরানোর চেষ্টা চলে। বিডিও অফিসের সামনে থাকা গাড়িতেও ভাঙচুর করা হয়। মোর্চার এই তাণ্ডবে সরকারি কর্মীরা প্রাণভয়ে পালিয়ে যান। স্থানী বিডিও লিপন রাই জানিয়েছেন, কয়েকজন হামলা চালায়। আগুন ধরানোর চেষ্টা চলে। প্রশাসনকে গোটা ঘটনা জানানো হয়েছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সেবকের কাছে লোহাপুলে একটি গাড়ি ভাঙচুর করে মোর্চা সমর্থকরা। ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে কালিম্পং থেকে গাড়িটি নামছিল।
[পাহাড়ে ফের পুলিশি তৎপরতা, অবশেষে সিংমারিতে পুলিশ সুপার]
সরকারি সম্পত্তিতে তাণ্ডবের পাশাপাশি মোর্চার টার্গেট পাহাড়ের উন্নয়ন পর্ষদগুলির আধিকারিকরা। সোমবার রাতে কালিম্পংয়ের আঠারো মাইলে খাস উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান রাজেন ভেটোয়ালের বাড়িতে হামলা হয়। অগ্নিসংযোগের চেষ্টা চলে। এর আগে কালিম্পংয়ের কামি বোর্ডের অফিস পুড়িয়ে দিয়েছিল মোর্চা। ভাইস চেয়ারম্যানের গাড়ি ভাঙচুর হয়। অশান্তি আঁচ করে রাজ্যের ডাকা সর্বদল বৈঠকে মাত্র ২টি বোর্ডের প্রতিনিধি গিয়েছিলেন। তারপরও রেহাই মিলছে না। মোর্চার পরপর হামলায় বাকি উন্নয়ন বোর্ডের কর্তাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। মোর্চার হুমকিতে মঙ্গলবারও বন্ধ ছিল রাম্মাম জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র। পুলিশ ও সিআরপিএফ থাকলেও, মোর্চার হুমকিতে কর্মীরা বিদ্যুৎকেন্দ্র মুখো হননি। ওই কেন্দ্র থেকে রোজ ৫১ মেগাওয়াট বিদুৎ উৎপাদন হয়। টানা দু’দিন এই ইউনিট বন্ধ থাকায় চিন্তা বাড়ছে প্রশাসনের।
