সুবীর দাস,কল্যাণী: চাকদহ পুরসভার পুর বোর্ড ভেঙে প্রশাসক বসানোর নির্দেশ পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তর। নাগরিক পরিষেবায় গাফিলতির অভিযোগে গত কয়েকদিন আগেই চাকদহ পুরসভার ২১ জন পুরপ্রতিনিধিকে শোকজ় করে সংশ্লিষ্ট ওই দপ্তর। এরপরেই আজ মঙ্গলবার বোর্ড ভেঙে প্রশাসক বসানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। কল্যাণীর মহকুমা শাসক ডঃ অভিজিৎ সামন্ত জানিয়েছেন, ''একটি নির্দেশ এসেছে। বুধবার থেকেই চাকদহ পুরসভার প্রশাসক হিসাবে দায়িত্ব নেব।'' বঙ্গ বিধানসভা ভোটের আর কয়েকমাস বাকি। তার আগে এহেন সিদ্ধান্ত ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
গত ১৭ নভেম্বর স্থানীয় একাধিক স্কুল, ব্যবসায়িক সংগঠনের তরফে পুরনিগমে একটি অভিযোগ জানানো হয়। যেখানে নাগরিক পরিষেবার মান নিয়ে একাধিক অভিযোগ জানানো হয়। বিশেষ করে ২১ টি ওয়ার্ডের রাস্তাঘাট জুড়ে জমে থাকা আবর্জনা, নিকাশি ব্যবস্থা-সহ একাধিক বিষয়কে উল্লেখ করে বিস্তারিত ওই অভিযোগ জানানো হয়। এহেন অভিযোগ পাওয়া মাত্র নড়েচড়ে বসে পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তর। অভিযোগ পর্যালোচনা করে চাকদহ পুরসভার ২১ জন কাউন্সিলরকে সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শাতে নির্দেশ দেওয়া হয়। যদিও কাউন্সিলরদের দেওয়া শোকজের জবাবে মোটেই সন্তুষ্ট হতে পারেননি আধিকারিকরা।
এরপরেই চাকদহ পুরসভার পুর বোর্ড ভেঙে প্রশাসক বসানোর নির্দেশ জারি করা হয়েছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে নতুন পুরো বোর্ড গঠন করা না হওয়া পর্যন্ত পুর-প্রশাসক হিসেবে কল্যাণীর মহকুমা শাসক ডঃ অভিজিৎ সামন্তকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান দেবব্রত নাগ বলেন, ''বইমেলা চলছে তাই এখনও দেখার সুযোগ হয়নি, তবে ঘটনা শুনেছি। এখন আমরা সাধারণ নাগরিক রাজনৈতিক ব্যক্তি হিসেবে মানুষের পাশে থাকব।'' অন্যদিকে চাকদহ পুরসভায় প্রশাসক বসায় খুশি সাধারণ মানুষও। ব্যবসায়ী সমিতি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর দাবি, 'দীর্ঘদিন ধরে পুরসভার কাছে লিখিত ও মৌখিকভাবে জানিয়েও কোনও ফল মেলেনি। বাধ্য হয়েই এই চিঠি পাঠানো হয়।''
এই প্রসঙ্গে চাকদহ থানার মোড় ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাজু ঘোষ বলেন, ''চাকদহ পুরসভার পরিষেবা দীর্ঘদিন ধরে বেহাল। আমরা পুরসভা থেকে শুরু করে প্রশাসনিক স্তরে বারবার জানিয়েছিলাম। কোন ফল না মেলায় বাধ্য হয়ে পুর নগরোন্নয়ন দপ্তরে চিঠি করা হয়।'' অভিযোগকে গুরুত্ব দিয়ে পুরসভায় প্রশাসক বসায় তাঁরা খুশি বলেও জানিয়েছেন রাজু ঘোষ।
