জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: শিরীষ গাছের মগডালে বসে আছে যুবক। গত দু’দিন ধরে এটাই তার ঠিকানা। সেই গাছের নিচে ভিড় জমিয়েছে গ্রামবাসী ও যুবকের পরিজনরা। তাকে গাছ থেকে নামাতে চেষ্টার কসুর করছেন না কেউ। কিন্তু বাগদার (Bagda) পাথুরিয়া এলাকার বাসিন্দা বছর ছাব্বিশের অমিতোষ হালদারকে নড়ানোচড়ানো যাচ্ছে না কিছুতেই। এই নিয়ে শোরগোল। বাগদা থানার পুলিশ এসে চেষ্টা করলেও সুরাহা হয়নি কিছুই।
প্রেমের সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পর থেকে নানারকমের নেশা ধরেছিল অমিতোষ। ছেলের নেশা ছাড়াতে বছর খানেক আগে নেশামুক্ত কেন্দ্রে (Rehab centre) পাঠিয়েছিল পরিবার। সেখান থেকে ফিরে আসার পর ক’দিন সব ঠিক ছিল। তারপর আবার নেশায় জড়িয়ে পড়ে অমিতোষ। ছেলের নেশা ছাড়াতে ফের তাকে রিহ্যাব সেন্টারের পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় পরিবার। সেই খবর জানতে পেরেই নয়া পরিকল্পনা ফাঁদে যুবক।
[আরও পড়ুন: রাজ্য মন্ত্রিসভায় বড়সড় রদবদল, অর্থমন্ত্রী হচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই]
পরিবার সূত্রে খবর, কয়েকদিন ধরে অমিতোষ ঠিকমতো বাড়ি ফিরছিল না। সোমবার সকালে রিহ্যাব সেন্টারের সদস্যরা তাঁকে নিতে এলে সোজা খাবার ও জল নিয়ে বাড়ির পাশের একটি শিরীষ গাছের প্রায় ৭০ ফুট উঁচুতে উঠে বসে পড়ে। পরিবারের লোকজন বিভিন্ন কথা বলে তাঁকে নামানোর চেষ্টা করেও কিছুতেই তাকে গাছ থেকে নামাতে পারেননি। মা সরস্বতী হালদার বলেন, “ওর সঙ্গে বাড়িতে কারও কোনও গন্ডগোল, ঝামেলা কিছুই হয়নি। ওকে হোমে পাঠানো হবে বলে কয়েকদিন এদিক-ওদিক থাকছিল। সোমবার বাড়িতে হোমের লোক আসায় ও গাছে উঠে বসে আছে। সারারাত গাছেই ছিল।”
[আরও পড়ুন: ‘আসল’ ভারতবর্ষের প্রতিনিধি! পদ্মশ্রী নিতে খালি পায়েই মঞ্চে আদিবাসী বৃদ্ধা]
অমিতোষের বাবা আনন্দ হালদার জানাচ্ছেন, “আমার ছেলের ভালর জন্য ওকে নেশামুক্ত কেন্দ্রে পাঠাতে চাইছিলাম। কিন্তু ও সে কথা কোনওভাবে জানতে পেরে সোমবার সকাল থেকে গাছের ডালে উঠে বসে আছে। কারও কোনও কথা শুনছে না। পুলিশের কথাও শোনেনি। কীভাবে গাছ থেকে নামাব, কিছুই বুঝতে পারছি না।” মঙ্গলবার বাগদা থানার পুলিশ সেখানে পৌঁছে অমিতোষকে গাছ থেকে নামানোর চেষ্টা করে। কিন্তু কিছুতেই সফল হয়নি। বেশি জোর করলে অমিতোষ গাছ থেকে ঝাঁপ দেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন। ফলে তাকে নামাতে অন্য পরিকল্পনা করতে হচ্ছে পুলিশকে।