shono
Advertisement

ভোট আসতেই বন্দুক সামলাতে নাকাল বৃদ্ধ, চাইছেন দায়িত্ব থেকে মুক্তি

ভোটের গেরোয় হাফিয়ে উঠে এখন ক্রেতা খুঁজছেন বারোপেটিয়ার প্রাক্তন গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য। The post ভোট আসতেই বন্দুক সামলাতে নাকাল বৃদ্ধ, চাইছেন দায়িত্ব থেকে মুক্তি appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 10:01 AM Mar 29, 2019Updated: 01:21 PM Mar 29, 2019

শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: বন্দুকই এখন গলার কাঁটা নব্বই ছুঁইছুঁই শরীরের। বছর বছর ভোটের গেরোয় হাফিয়ে উঠে এখন ক্রেতা খুঁজছেন বারোপেটিয়ার প্রাক্তন গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য। কিন্তু ক্রেতা কই? তাই নাতির ঘাড়ে বন্দুক চাপিয়ে এবার পারিবারিক দায়িত্ব থেকে মুক্তি পেতে চাইছেন অশীতিপর দেবেন্দ্রনাথ দাস।

Advertisement

[আরও পড়ুন: সংগঠন মজবুত, বালুরঘাটে জয় ঘিরে আত্মবিশ্বাসী বিজেপি]

দীর্ঘ চল্লিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে পরিবারের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা দোনলা বন্দুক নামক বন্ধুটির সঙ্গে সম্পর্ক তাঁর। তবে সেই সঙ্গ এবার পুরোপুরিভাবে ত্যাগ করতে চাইছেন জলপাইগুড়ি বারোপেটিয়া নতুনবস এলাকার দেবেন্দ্রনাথ দাস। এখন ঘরে রাখা এই বন্দুক নিয়ে এখন বিড়ম্বনার মুখে পড়েছেন তিনি। কারণ গ্রাম পঞ্চায়েতই হোক বা লোকসভা কিংবা বিধানসভা নির্বাচন। ভোট এলেই সরকারি আইন মেনে তাঁকেই বন্দুক জমা দিতে ছুটে আসতে হয় থানায়। এই শরীরে যা অত্যন্ত কষ্টের বলে জানান তিনি।

রং চটেছে, জং ধরেছে নিকষ কালো শরীরে। এক সময় এই বন্ধুটিকে সামনে রেখে ডাকাত, দুষ্কৃতীদের ভাগিয়েছেন দেবেন্দ্রনাথবাবু। জানান, সেই সময় এত ঘরবাড়ি ছিল না। সামান্য দূরেই বৈকুন্ঠপুরের জঙ্গল। রাত্রি হলেই ডাকাত পড়ত গ্রামে। সেই সঙ্গে ছিল বুনো হাতি আর জংলি শূকরের অত্যাচার। পরিবারের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে জলপাইগুড়ি শহরে এসে দু’হাজার টাকা খরচ করে একনলা বন্দুকটি কিনে নিয়ে গিয়েছিলেন দেবেন্দ্রবাবুর বাবা সতেশ্বর দাস। পরে বাবার মৃত্যুর পর বন্দুকটি নিজের নামে করে নিজে আরও একটি বন্দুক কেনেন দেবেন্দ্রনাথবাবু। যদিও পরে বাবার বন্দুকটি চুরি হয়ে যায়। নিজের নামের লাইসেন্স করা বন্দুকটি এখনও দেবেন্দ্রবাবুর হেফাজতে। তবে এই বন্দুকটির জোরে সেই সময় এলাকায় দাপট যেমন ছিল, তেমনি দানধ্যানও কম ছিলনা দেবেন্দ্রবাবুর। বর্তমানে বারোপেটিয়া নতুনবস গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসটি তাঁর দান করা জমির উপর তৈরি।

বারোপেটিয়া ভান্ডিগুড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রঙধামালি ক্লাব তাঁর জমির উপরেই গড়ে উঠেছে। বর্তমানে বারোপেটিয়া নতুনবস পঞ্চায়েতের উপপ্রধান, এলাকার তৃণমূল প্রার্থী তথা সদরের দাপুটে তৃণমূল নেতা কৃষ্ণ দাস দেবেন্দ্রবাবুর আত্মীয়। তিনি জানান, “দিনকাল বদলে গেছে। এখন আর ডাকাত পড়ে না গ্রামে। নেই দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য। ফলে দীর্ঘদিন ব্যবহার নেই বন্দুকের।” এই অবস্থায় সেই সময়ের বন্ধু এই বন্দুকটির আর প্রয়োজন আছে বলে মনে করেননা তিনি। জানান, “ভোট এলেই থানা থেকে খবর পাঠায়। ছেলেরা কাজেকর্মে ব্যস্ত থাকায় নাতিকে নিয়ে ছুটে আসতে হয় থানায়। শরীর আর সঙ্গ দেয়না। তবুও আসতে হয়। বহুবার বিক্রি করব বলে ক্রেতা খুঁজেছি। কিন্তু ক্রেতা পাইনি।” বলেন, “এই হ্যাপা থেকে মুক্তি পেতেই এবার দায়িত্ব ছাড়তে চাইছি। ছেলেরা রাজি না হওয়ায় দায়িত্ব তুলে দিতে চাইছি নাতি জিতু দাসকে।”

ভোট ফুরলেই নাতির নামে বন্দুকটি লিখিয়ে দেবেন বলে জানান তিনি। তাহলে আর বছর বছর থানার ছুটে আসতে হবে না। নাতি জিতু দাস এই বছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে। পাস করলেই কলেজ। জিতু জানায়, “দাদুর দেওয়া দায়িত্ব নেওয়ার ইচ্ছে ছিল না। তবে পারিবারিক সম্পদ বলে কথা। সব দিক চিন্তা করে দাদুর দেওয়া উপহার হিসাবেই বন্দুকটির দায়িত্ব নেওয়ার বিষয়ে মনস্থির করে ফেলেছি।”

[আরও পড়ুন: জঙ্গি হামলায় সরব, হিন্দুদের ধর্মান্তকরণে চুপ কেন? মালালার ভূমিকায় প্রশ্ন নেটদুনিয়ায়]

The post ভোট আসতেই বন্দুক সামলাতে নাকাল বৃদ্ধ, চাইছেন দায়িত্ব থেকে মুক্তি appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement