বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: নিজের বসতভিটের জমিটুকু বাদে বাকি সম্পত্তির সবটাই দানপত্র করে লিখে দিয়েছেন স্ত্রী-সহ পরিবারের সবার নামে। দেননি শুধু বসতভিটের জমি ও বাড়িটি। আশঙ্কা ছিল, শেষ সম্বলটুকু এখনই লিখে দিলে তাঁকে হয়তো হতে হবে বাড়িছাড়া। নদিয়ার শান্তিপুরের দেনুই গ্রামের অশীতিপর বৃদ্ধের সেই আশঙ্কাই সত্যি হল। বসতবাড়ির জমি লিখে দেওয়ার দাবিতে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ স্ত্রী, পুত্র, পুত্রবধূর বিরুদ্ধে। শান্তিপুর থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন বৃদ্ধ।
শান্তিপুরের দেনুই গ্রামের বাসিন্দা দুলালচন্দ্র বিশ্বাস। গ্রামে তাঁর বসতভিটের ১০ শতক জমি এবং বাড়ি আছে। বাকি স্থাবর, অস্থাবর সম্পত্তি তিনি লিখে দিয়েছেন স্ত্রী, পুত্রের নামে। গত বাকি সম্পত্তিটুকুও লিখে দেওয়ার দাবিতে ২৩ ডিসেম্বর সকালে তাঁকে হত্যার চেষ্টা হয় বলে শান্তিপুর থানায় অভিযোগ করেছেন দুলালবাবু। লিখিত অভিযোগে তিনি জানিয়েছেন, ‘আমার স্ত্রী সবিতা, ছেলে, বৌমা সহ পরিবারের সকলের কাছে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতিত। ২৩ ডিসেম্বর সকাল আটটা নাগাদ গলায় মাফলার পেঁচিয়ে মারার চেষ্টা হয়। আমি নি:শ্বাস নিতে না পেরে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাই। ভাগ্যক্রমে আমার মেজ মেয়ে শোভারানি আমাকে সেসময় দেখতে এসেছিল। সে আমাকে উদ্ধার করে তার বাড়ি নিয়ে যায়। ডাক্তার দেখানো হয়। তা সত্বেও আমার শারীরিক অবস্থার কোনও উন্নতি হচ্ছে না। মেজ মেয়েও আমাকে আর সাহায্য করতে আর চাইছে না।’ শুধু থানায় অভিযোগ করেই থেমে থাকেননি দুলালবাবু। দ্বারস্থ হয়েছেন জেলাশাসক, পুলিশ সুপার, মহকুমা শাসক, মহকুমা পুলিশ অফিসারেরও। প্রশাসনিক কর্তাদের কাছে নিরাপত্তার আবেদন জানিয়েছেন। পাশাপাশি তাঁর একান্ত আরজি, বৃদ্ধ বয়সে যেন ভিটেছাড়া না হতে হয়। অশীতিপর বৃদ্ধের এই অভিযোগ পেয়ে ইতিমধ্যেই পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন রানাঘাটের মহকুমা শাসক মণীশ বর্মা।
[নতুন বছরে সুখবর, এমাসেই সরকারি কর্মীদের বকেয়া ডিএ মিটিয়ে দেবে রাজ্য]
আদালতের নির্দেশে, উত্তরাধিকার সূত্রে জোর করে বাবা, মায়ের সম্পত্তি পেতে পারে না কোনও সন্তান। যতক্ষণ না স্বেচ্ছায় অভিভাবকরা সম্পত্তি তাঁদের নামে লিখে দেবেন। কিন্তু আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এখনও বহু জায়গায় মা, বাবার ওপর অত্যাচারের নিদর্শন মেলে। শান্তিপুরে দেনুই গ্রামের ঘটনাও এরকমই আরেকটি নজির।
ছবি: সুজিত মণ্ডল
The post ছাদ হারিয়ে প্রাণনাশের আশঙ্কায় প্রশাসনের দ্বারস্থ অশীতিপর বৃদ্ধ appeared first on Sangbad Pratidin.
