বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: তিন মাস থেকে সাক্ষাৎ যমদূতের মতো দাপিয়েছে এলাকায়। সুযোগ পেলেই গবাদি পশুর ঘাড় মটকে উধাও হয়েছে। আতঙ্কে ঘুম উবেছিল বাসিন্দাদের। নিরাপত্তার দাবিতে আন্দোলন হয়েছে নকশালবাড়ি চা বাগানে। চা শ্রমিকদের দাবি মেনে বাগানের জাবরা ডিভিশনে নধরকান্তি পাঁঠার টোপ দিয়ে খাঁচা বসায় বন দপ্তর। অবশেষে শনিবার ভোরে পাঁঠার ডাক শুনে দশাসই চিতাবাঘ খাঁচায় পা রাখতে বন্দি হয়। স্বস্তি ফেরে এলাকায়।
নকশালবাড়ি ও পার্শ্ববর্তী বাগডোগরা এলাকায় চিতাবাঘের আনাগোনা একটি নিয়মিত সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। টেনে নিয়ে যাচ্ছে গবাদিপশু। শিকার মিললে ভালো। না পেলেই ঝাপিয়ে পড়ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের উপর। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে চা বাগানগুলোতে চিতাবাঘের আনাগোনা বেড়ে যাওয়ায় শ্রমিকরা কাজে যেতে ভয় পাচ্ছেন। গত ১১ নভেম্বর উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে শান্তিপুর এলাকায় একটি বাড়ির শৌচাগার থেকে বেরিয়ে এক ব্যক্তিকে আক্রমণ করে চিতাবাঘ। শুধু নকশালবাড়ি নয়।
শিলিগুড়ি মহকুমার নিউ চামটা, মোহরগাঁও, সুকনা, মারাপুর, তরাই, মেরিভিউ, ফুলবাড়ি, অটল, আজমাবাদ, বিনয়নগর, বাগডোগরা, শিমুলবাড়ি, পানিঘাটা, লংভিউ, পানিঘাটা, নকশালবাড়ি, গাঙ্গুরাম, ত্রিহানা, হাঁসখাওয়া, মিনি ও রাঙাপানি চা-বাগান সংলগ্ন এলাকায় চিতাবাঘের উপদ্রব বেড়েছে। মাঝেমধ্যে গুরুতর জখম হচ্ছে চা-শ্রমিকেরা। নকশালবাড়ি চা বাগানে তিন মাস থেকে আতঙ্কের মধ্যে চা পাতা তোলার কাজ করছিলেন চা শ্রমিকরা। সম্প্রতি শ্বাপদের আতঙ্ক বেড়ে যায়।
স্থানীয় শ্রমিক হীরালাল লাকড়া বলেন, "চিতাবাঘের হামলায় কয়েকজন চা শ্রমিক ও গবাদিপশু জখম হয়। আতঙ্কে চিতাবাঘ খাঁচাবন্দি করার দাবি ওঠে বারবার। ১৩ ডিসেম্বর বন দপ্তরে ওই দাবিতে স্মারকলিপি দেন শ্রমিকরা। গত বৃহস্পতিবার খাঁচা বসায় বন দপ্তরের পানিঘাটা রেঞ্জ। শনিবার ভোরে পাঁঠার টোপে ভুলে ফাঁদে পা দেয় শ্বাপদটি। খাঁচাবন্দি করা সম্ভব হয়। সকালে চা শ্রমিকরা খাঁচাবন্দি চিতাটিকে দেখে বনদপ্তরে খবর দেয়। বন কর্মীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, শ্বাপদটিকে জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হবে।
