সম্যক খান, মেদিনীপুর: মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রসূতি মৃত্যুতে একের পর এক মারাত্মক অভিযোগ উঠেছে। মেয়াদ উত্তীর্ণ, নিম্নমানের স্যালাইন ও ওষুধপত্র ব্যবহার করা হয়েছে রোগীদের। স্যালাইনের বোতলে ছত্রাকও মজুত ছিল বলে অভিযোগ সামনে এসেছে। বিষয়টি নিয়ে গতকাল বৃহষ্পতিবারই হাসপাতাল সুপারকে লিখিতভাবে জানিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন করা হয়েছিল। তার মধ্যেই শুক্রবার সকালে মারা গেলেন মামনি রুইদাস(২০) নামে এক প্রসূতি।
গত বুধবার সন্ধ্যায় মামনির সিজার হয়। এক পুত্রসন্তানেরও জন্ম দিয়েছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার থেকেই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। শুক্রবার সকালে তিনি মারা যান। কিন্তু কেন মেয়াদ উত্তীর্ণ স্যালাইন ব্যবহার করা হল? কেন স্যালাইনের বোতলে ছত্রাক থাকবে? সেই স্যালাইন ব্যবহারের আগে কেন নজর দেওয়া হবে না? ‘বিষাক্ত’ স্যালাইন প্রয়োগের কারণেই মৃত্যু হয়েছে তরুণী মায়ের? একাধিক প্রশ্ন উঠেছে।
মামনি রুইদাসের মা বন্দনা দাস বলেছেন, "অপারেশনের পর থেকেই মেয়ের প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যায়। নার্সদের বারবার বলেছি। তাঁরা জানান, সিজারের পাশাপাশি টিউমারেরও অপারেশন হয়েছে। তাই হয়তো একটু বেশি অসুবিধা হচ্ছে। বৃহষ্পতিবার বিকেলের পর থেকে মেয়ের অবস্থার আরও অবনতি হয়। রাত আটটা নাগাদ অচৈতন্য অবস্থায় মেয়েকে আইসিইউতে ভর্তি করানো হয়। তারপর থেকে আর জ্ঞান ফেরেনি। পরে মৃত্যুর খবর জানানো হয়।"
হাসপাতালের সুপার জয়ন্ত রাউৎ বলেছেন, "আগেই আভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। মেয়াদ উত্তীর্ণ স্যালাইন বা ছত্রাকের বিষয় নিয়ে এখনই কিছু বলা সম্ভব নয়। সব কিছুর নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। পরীক্ষার পরই সব জানা যাবে।" আইসিইউতে এখনও চার প্রসূতি আশঙ্কাজনক অবস্থায় আছেন। তাঁদের চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন বিভাগের ডাক্তারদের নিয়ে মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। শনিবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের মেডিক্যাল এডুকেশন বিভাগের ওএসডি ডাঃ আশিস বিশ্বাস এবং ডিরেক্টর ডাঃ প্রসূনকুমার দাসের নেতৃত্বে ১৩ সদস্যের এক তদন্তকারী দল মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শনে আসছেন। সেই দলে ড্রাগ কন্ট্রোল বিভাগের একাধিক কর্তার পাশাপাশি বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের বিভাগীয় প্রধান ও অধ্যাপকরাও থাকছেন।