সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: খড়ের ছাউনি দেওয়া মাটির বাড়ি। সেই বাড়িরই বধূ রেখা পাত্র। স্বামী পরিযায়ী শ্রমিক। তিন সন্তানের মা। সন্দেশখালির প্রতিবাদী মুখ রেখাই দিল্লিবাড়ির লড়াইয়ে গেরুয়া শিবিরের সৈনিক। বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী। পরনে ছাপা শাড়ি। হাতে শাঁখা-পলা। কপালে সিঁদুরের টিপ। ঘরকন্নার দায়িত্ব সামলানো গ্রাম্য বধূ যেন রাতারাতি পুরোদস্তুর রাজনীতিক। দিনরাত ব্যস্ত ভোটপ্রচারে। বউমা যখন বাইরে ব্যস্ত তখন হেঁশেল থেকে রেখার তিন সন্তান- সব কিছুই সামলাচ্ছেন তাঁর শাশুড়ি। বলছেন, “ও প্রচার দেখুক। আমি তো এখানে আছিই।”
নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তান রেখা (Rekha Patra)। আর্থিক টানাটানিতে পড়াশোনা সেভাবে করতে পারেননি। সন্দেশখালির সন্দীপ পাত্রের সঙ্গে অল্প বয়সেই বিয়ে। বিয়ের পরেও আর্থিক স্বচ্ছলতার মুখ সেভাবে দেখেনন। সন্দীপ পরিযায়ী শ্রমিক। পেটের টানে এরাজ্য থেকে ওরাজ্যে ঘুরে বেড়ান। ভিনরাজ্যে গিয়ে স্বামীর উপার্জিত সামান্য টাকাতেই সংসার সামলে গিয়েছেন রেখা। সংসারের হিসেবের মাঝে কখন যেন কেটে গিয়েছে সময়। এখন তিন মেয়ের মা রেখা। বড় মেয়ে সুষমা ১২ বছর বয়সি। মেজ মেয়ে করবীর বয়স ৭। ছোট মেয়ে কনক মোটে বছর তিনেকের।
[আরও পড়ুন: ‘দাদা তুমি মুসলিম?’, নুসরতের সঙ্গে জমিয়ে ইফতার করতেই যশের দিকে ধেয়ে এল কটাক্ষ!]
অভাব থাক। তবুও শ্বশুর-শাশুড়ি নিয়ে দিব্যি সুখের সংসার রেখার। বিয়ে হয়ে আসার পর থেকে সারাক্ষণ রেখা পাশে পেয়েছেন তাঁদের। শাশুড়ি-বউমার মধ্যে কোনও কোন্দল নেই রেখার বাড়িতে। যেন তাঁরা মা-মেয়ে। লোকসভা ভোটের মুখে যখন দিনরাত ভোটপ্রচারে ব্যস্ত বউমা, তখনও পাশে পেয়েছেন সেই শাশুড়িকেই। স্বাভাবিক ভাবে রান্নাবান্না করার মতো এখন আর সময় পাচ্ছেন না রেখা। সে কাজও সামলাচ্ছেন শাশুড়ি। আবার ছোট ছোট সন্তানদের দেখভালও করছেন তিনি। বউমার পাশে যে সারাক্ষণ রয়েছেন তা হাসিমুখে বুঝিয়েও দিয়েছেন শাশুড়ি। রেখা আপাতত ভোটপ্রচার সামলাক। তিনি ঘর সামলে নেবেন বলেই জানান।
মাটির দাওয়ায় ঘেরা বাড়িতে এখন হাজারো লোকের ভিড়। হঠাৎ করে প্রচারের আলোয় গ্রাম্য পরিবার। এতে মাঝেমধ্যেই অস্বস্তি লাগছে, তা স্বীকার করে নিয়েছেন রেখার পরিবারের লোকজন। ভোটযুদ্ধে বাকিদের পিছনে ফেলে রেখা জয়ের হাসি হাসতে পারেন কিনা, সে উত্তর দেবে সময়। হার বা জিত যা-ই হোক না কেন পরিবার যে রেখার পাশে সব সময় আছে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।