নন্দন দত্ত, সিউড়ি: রোজ দু’বেলা দেখাসাক্ষাৎ, টুকটাক কথাবার্তা। কিন্তু রোজকার চেনা মুখগুলোই রাতে আচমকা হয়ে উঠল হামলাকারী! এমনই কাণ্ড ঘটল বীরভূমের সিউড়িতে (Suri)। রবিবার রাতে বাড়ি ফেরার পথে পরিচিত দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত হলেন সিউড়ির প্রাক্তন কাউন্সিলর মৃন্ময় মুখোপাধ্যায়। তাঁর চোখে গুরুতর আঘাত লেগেছে। সিউড়ির সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে তিনি ভরতি। বারবার বলছেন, যারা হামলা চালিয়েছে, তাদের তিনি চেনেন। কিন্তু কোনও ঝামেলা বা অশান্তি নেই। কী কারণে তাঁকে এভাবে মারধর করা হল, সে বিষয়ে সম্পূর্ণ অন্ধকারে প্রাক্তন কাউন্সিলর। পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমেছে। এখনও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি বলে খবর।
বর্ষীয়ান মৃন্ময় মুখোপাধ্যায় সিউড়ি ১১ নম্বর ওয়ার্ডের দু’বারের প্রাক্তন কাউন্সিলর (Councilor)। তাঁর স্ত্রী চন্দ্রানী মুখোপাধ্যায় একই ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর। মূলত এলাকা উন্নয়ন ও পুর রাজনীতির সক্রিয় অংশ মৃন্ময়বাবু। অতীতে যখনই সিউড়ি পুরবোর্ডে কোনও রাজনৈতিক টালমাটাল পরিস্থিতি হয়, তখনই তাঁর উপর আক্রমণ হয়েছে। এর আগেও সেহেড়া পাড়ায় তাঁদের বাড়ির ছাদে বোমা (Bombs) রেখে উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। তার তদন্ত করছে পুলিশ।
[আরও পড়ুন: ভাঙড় কাণ্ডের জের! কেন্দ্রের Z ক্যাটাগরির নিরাপত্তা পাচ্ছেন নওশাদ সিদ্দিকি]
এবারও মৃন্ময়বাবুর উপর আচমকা আক্রমণ হল। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি জানান, ”অন্য দিনের মতো আমি পাড়ার ক্লাবের সামনে বসেছিলাম। তখন কয়েকজন চারচাকা গাড়িতে করে এসে আমার উপর হামলা চালায়। তারা জনা দশেক ছিল। রাস্তায় পড়ে থাকা পাথর ছোঁড়ে, চড়-কিল-ঘুসি মারতে থাকে।” প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, তাঁরা ক্লাবের সামনের চালায় প্রতিদিনের মতো বসেছিলেন। তখনই অতর্কিতে হামলা চলে। অভিযোগ, ক্লাবের কয়েকজন দুষ্কৃতীদের কবল থেকে মৃন্ময়বাবুকে উদ্ধার করতে গেলে তাঁদের উপরও চড়াও হয় দুষ্কৃতীরা। শুধু একবার নয়, দফায় দফায় এই হামলা চলে বলে অভিযোগ।
[আরও পড়ুন: নেই বিকল্প, পঞ্চায়েত ভোটে মেদিনীপুরে সিপিএমের ‘সেনাপতি’ সুশান্ত ঘোষই]
শেষে ক্লাবের শিব মন্দিরে ঢুকিয়ে মৃন্ময়বাবুকে বেদম প্রহারের হাত থেকে বাঁচান ক্লাব সদস্যরা। মৃন্ময়বাবু জানান, যারা তাঁর উপর হামলা করেছেন, তাদের তিনি চেনেন। জনৈক নীলু ও নীলুর ভাই এই ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ তাঁর। কিন্তু কেন তারা আক্রমণ করল, তা তিনি বুঝতে পারছেন না। মৃন্ময়বাবু জানান, ”দু’বেলা নীলুদের সঙ্গে দেখা হয়। কোনও ঝামেলা বা বিতর্ক নেই। তবে কেন হামলা?” সিউড়ি থানার পুলিশ রাতেই তদন্তে নেমেছে।