অভ্রবরণ চট্টোপাধ্যায়, দার্জিলিং: পাহাড়ে ফের অশান্তির ছায়া। ফের রাজনৈতিক চালচিত্র পরিবর্তনের সম্ভাবনা। অবলুপ্তির পথে অজয় এডওয়ার্ডের হামরো পার্টি। নতুন দল গঠনে শামিল জিটিএ-র একাধিক প্রাক্তন সভাসদ, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার জনা কয়েক নেতা, ওই দলের প্রাক্তন বিধায়ক, স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেলের মালিক এবং অজয় এডওয়ার্ড স্বয়ং। আলোচনা চলছে পাহাড়ের প্রবীণ নেতা হরকা বাহাদুর ছেত্রীর সঙ্গেও। ওই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে ৬ নভেম্বর, বুধবার তাঁরা শিলিগুড়িতে মিলিত হচ্ছেন। সেখানে দলের নাম ও সংবিধান ঠিক হবে। এর পর চলতি মাসের শেষে নতুন দল আত্মপ্রকাশের সম্ভাবনা প্রবল। রাজনৈতিক মহল সূত্রে খবর, নতুন দলের সভাপতি অজয় এডওয়ার্ড এবং সম্পাদক স্থানীয় টিভি চ্যানেলের মালিক নরেন্দ্র তামাং হতে পারেন। আর আশঙ্কা, ফের গোর্খাল্যান্ডের জিগির উঠতে পারে ওই দল থেকে।
সোমবার দার্জিলিংয়ের অজয় এডওয়ার্ড বলেন, “৬ নভেম্বরের পর হামরো পার্টির অস্তিত্ব থাকবে না। পাহাড়ে নতুন দল গঠন হবে। নির্বাচন কমিশনে হামরো পার্টির রেজিস্ট্রেশন সম্ভব হচ্ছে না। তাই এই সিদ্ধান্ত।” যদিও পাহাড়ের রাজনৈতিক মহল সূত্রে জানা গিয়েছে, দল চালাতে গিয়ে বেশ সমস্যায় পড়েছেন অজয়। দলে ভাঙন ঠেকাতে পারছেন না। ওই কারণে মাত্র দুবছরের মধ্যে বাধ্য হয়ে দল তুলে নিতে হচ্ছে তাঁকে।
২০২২ সালের ২৫ নভেম্বর পৃথক গোর্খাল্যান্ড রাজ্যের দাবি সামনে রেখে তিনি হামরো পার্টি গঠন করেছিলেন। এবার নতুন দলেও সেই একই দাবি থাকবে। অজয় জানান, নতুন দলে শামিল হচ্ছেন জিটিএ-র প্রাক্তন সভাসদ সঞ্জয় থুংলং-সহ কয়েকজন। দল গঠনের প্রাথমিক আলোচনা শেষ হয়েছে। পাহাড়ের বিভিন্ন দলের নেতৃত্ব যোগাযোগ করছেন। নতুন দলের কর্মসূচিতেও থাকছে পৃথক গোর্খাল্যান্ড রাজ্যের দাবি। পাশাপাশি জিটিএ-র বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন তাঁরা।
পৃথক দল গঠনের প্রধান উদ্যোক্তা অজয় এডওয়ার্ড ঘনিষ্ঠ কালিম্পং পাহাড়ের এক জনপ্রিয় টিভি চ্যানেলের মালিক নরেন্দ্র তামাং। তিনি কয়েক মাস থেকেই জিটিএ-র সমালোচনায় মুখর। পাশাপাশি দাবি আদায়ের জন্য গোর্খাদের জোট বাঁধার ডাক দিয়ে যাচ্ছেন। নরেন্দ্র তামাংয়ের বক্তব্য, “৬ নভেম্বর শিলিগুড়িতে চূড়ান্ত বৈঠকে দলের নাম, সংবিধান ঠিক হবে। নভেম্বরের শেষে দল আত্মপ্রকাশ করবে।” তিনি জানান, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার প্রাক্তন বিধায়ক গৌলেন লেপচা নতুন দলে যোগ দিচ্ছেন। হরকা বাহাদুর ছেত্রীর সঙ্গে কথা চলছে। সবমিলিয়ে পাহাড়ে ফের রাজনৈতিক সমীকরণ বদলের পথে।