shono
Advertisement

Gram Banglar Durga Pujo: দশমীতে ঘট বিসর্জনের পরই দেখা দেন 'একদিনের রাজা-রানী', প্রণাম সেরে বিজয়ায় মাতেন ঝালদাবাসী

Posted: 07:47 PM Oct 24, 2023Updated: 07:47 PM Oct 24, 2023

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: মহাদশমীর ঘট বিসর্জনের পরই রাজপাগড়ি বাঁধা 'একদিনের রাজা-রানী'র দর্শন করেন প্রজারা। বহুদিন আগে রাজতন্ত্রের অবসান হলেও পুরুলিয়ার ঝালদার হেঁসলা রাজ পরিবারে এই মহাদশমীতে রাজা-রানী ফিরে ফিরে আসেন। তাই 'একদিনের রাজা-রানী'কে দেখতে ভিড় জমে যায় এই রাজবাড়িতে। সঙ্গে পর্দাসীন থাকা রানী মা ও রাজার পা ছুঁয়ে প্রণাম করে তাঁদের হাত থেকে মন্ডা-মিঠাই নেওয়ার পরেই এই এলাকায় শুরু হয় বিজয়া।

Advertisement

ইতিহাস বলছে, রাজস্থানের যোধপুর থেকে দিগ্বিজয়প্রতাপ সিংহ দেও আজ থেকে হাজার বছর আগে ঝালদার ইলুতে পা রাখেন। তখন ইলুতেই ছিল এই রাজবাড়ি। সেখানে শত্রুদের আক্রমণে এই রাজপরিবার ছন্নছাড়া হয়ে গেলে পরবর্তীকালে হেঁসলাতেই নতুন করে রাজত্ব শুরু হয়। যদিও ওই রাজপরিবারের পুজোয় দশমীর ঘট বিসর্জনের পর 'রাজা-রানী'র দর্শন করার রেওয়াজ চলছে ইলুতে রাজত্ব থাকার সময় থেকেই।

[আরও পড়ুন: উৎসবের আনন্দের মাঝে চাষের জমিতে মিলল পচাগলা দেহ, মৃত্যুর কারণ নিয়ে ঘনাচ্ছে রহস্য]

এদিন ঘট জলাশয়ে ভাসান দেওয়ার পরেই দুর্গা দালানে আসেন এই রাজ পরিবারের সদস্যরা। সেখানেই এই রাজ পরিবারের উত্তরপুরুষ কন্দর্পনারায়ণ সিংহ দেওকে কলা বউয়ের শাড়ি নিয়ে পাগড়ির মতো করে তাঁর মাথায় বেঁধে দেন রাজপুরোহিত। এই কলা বউ রাজপরিবারে 'মানঠাকুরণ' নামে পরিচিত। এমনকী মা দুর্গার গলায় থাকা বেলপত্র-সহ নানান মালা ওই উত্তরপুরুষের গলায় দিয়ে এখন তামাম হেঁসলা তাকে 'একদিনের রাজা' হিসাবে স্বীকৃতি দেন। সেখানে রাজপুরোহিত শান্তি জল ছেটানোর পর সিদ্ধিযাত্রা করেন তিনি। রামচন্দ্র যেভাবে বিজয় যাত্রা করেন সেভাবেই পূর্ব-পশ্চিম-উত্তর-দক্ষিণ দিকে রাজপুরোহিতের মন্ত্র উচ্চারণের মধ্য দিয়ে আড়াই পা করে যান। তার পরই 'একদিনের রাজা'কে ঢাক, ঢোল বাজিয়ে, কীর্তনের মাধ্যমে দুর্গা মন্দির থেকে ঠাকুরবাড়িতে নিয়ে আসা হয়।

এই ঠাকুরবাড়িতেই রয়েছেন, রাধা-কৃষ্ণ, মহাদেব। এখানেই থাকেন পর্দাসীন রানী মা। সারা বছর তিনি পর্দার আড়ালে থাকলেও দশমীতে তাঁকে দেখতে পান প্রজারা। রাজা সেখানে পা রেখেই মাথায় থাকা পাগড়ি তাঁর স্ত্রী তথা রাণী মা অনিতা সিংহ দেও'র মাথায় পরিয়ে দেন। এরপর থেকেই শুরু হয়ে যায় 'একদিনের রাজা-রানী'র পা ছুঁয়ে প্রণাম। রাতে মাকে এলাকার মানুষজন কাঁধে করে জলাশয় বিসর্জন দেন। 'একদিনের রাজা' কন্দর্পনারায়ণ সিংহ দেও বলেন, "এই রেওয়াজ বহুদিন ধরে চলে আসছে। তবে বয়স্ক মানুষজন যেভাবে পা ছুঁয়ে প্রণাম করেন এই বিষয়টি আমার ভালো লাগে নাl সবাই যাতে ভালো থাকেন মায়ের কাছে সেই প্রার্থনায় করিl" 'একদিনের রাজা-রানী'র আশীর্বাদ নিয়ে বিজয়ার মধ্য দিয়েই এলাকায় শুরু হয়ে যায় আরেক উৎসব।

[আরও পড়ুন: নবমীতে বন্ধুদের সঙ্গে ঠাকুর দেখতে বেরনোই কাল! দশমীতে উদ্ধার যুবকের দেহ, খুনের অভিযোগে সরব পরিবার]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement