রাজ কুমার, আলিপুরদুয়ার: পুরনো রূপেই ফিরছে পর্যটন মুকুটের কোহিনুর বলে খ্যাত হলং বনবাংলো। পুড়ে যাওয়া হলং বনবাংলো (Hollong Forest Bungalow) পুনঃনির্মাণে অনুমোদন দিয়ে দিল রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের সেই অনুমোদন পত্র জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে এসে পৌঁছেছে । রাজ্য সরকারের অনুমোদন মিলে যাওয়ায় এবার এই বনবাংলো নির্মাণের কাজ দ্রুত শুরু হবে বলে আশা করছে বন দপ্তর। সোমবার এই কাজের টেন্ডার ডাকবে বনদপ্তর।এই বনবাংলোর নকশা ও যাবতীয় খুটিনাটি দিয়ে ডি পি আর (ডিটেইল প্রজেক্ট রিপোর্ট) তৈরি করেছে পূর্ত দপ্তর। গত জুন মাসে জমা দেওয়া পূর্ত দপ্তরের সেই ডি পি আরেই রাজ্য সরকার অনুমোদন দিয়েছে। জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের ডি এফ ও পারভীন কাশোয়ান বলেন, “২০২৪ সালের ১৮ জুন বিধ্বংসী আগুনে এই বনবাংলা পুড়ে যায়। আমরা এই বনবাংলো পুনঃনির্মাণের জন্য রাজ্য সরকারের অনুমোদন পেয়ে গেছি। এটা খুবই খুশির খবর।”
বন দপ্তর সুত্রে জানা গিয়েছে শাল, সেগুন আর পাইনে রূপ পাবে হলং বন বাংলো। একেবারে হুবহু আগের মতো দেখতে হবে এই বনবাংলোর চেহারা। তিন তলা এই বনবাংলো তৈরির খরচ ধরা হয়েছে ৩ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকা। প্রথমে কংক্রিটের বাংলো তৈরি করে তার পর শাল, সেগুন আর পাইন কাঠ দিয়ে মুড়ে দেওয়া হবে গোটা বাংলোর ভেতরে ও বাইরের দিক। যা দেখে কেউ বুঝতেই পারবে না এটা কংক্রিটের তৈরি। কাঠের হলং বনবাংলো নিয়ে দেশি বিদেশি পর্যটকদের আবেগকে মর্যাদা দিতেই এই ব্যবস্থা। এখন টাকা অনুমোদন হলেই এই বাংলো নির্মাণের কাজ শুরু হবে। তিনতলা বাংলোর ভেতর ও বাইরের ওয়াল উডেন ক্ল্যাডিং থাকবে। কাঠ সরবরাহ করবে বন দপ্তর। এই বনবাংলোর ভেতরে দিকে থাকবে শালকাঠের ফ্রেমে পাইন কাঠে মোড়া। আর বাইরের দিকে শাল কাঠের ফ্রেমে সেগুন কাঠ দিয়ে মুড়ে দেওয়া হবে। এবার এই বনবাংলোতে আগুন প্রতিরোধে বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে।
উল্লেখ্য, ১৮ জুন রাত নয়টার পর বিধ্বংসী আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায় জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের হলং বন বাংলো। পরে তদন্তে জানা যায় ৮ কামরার এই বনবাংলোর তিন তলায় ৩ নম্বর ঘরে শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগে গোটা বাংলো পুড়ে যায়। ১৯৬৭ সালে নির্মিত কাঠের এই বনবাংলোকে রাজ্য পর্যটনের ‘কোহিনূর’ বলেন অনেকে। কাঠের এই বন বাংলোকে পুরনো আদলেই কাঠ দিয়ে তৈরির দাবি জানিয়েছিলেন বিভিন্ন পক্ষ। অবশেষে সেই পুরনো আদলেই ফিরছে উত্তরের আবেগ এই বন বাংলো। বিষয়টি জানাজানি হতেই বিভিন্ন মহলে খুশির হাওয়া ছড়িয়েছে। আলিপুরদুয়ার ডিস্ট্রিক ট্যুরিজম অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক মানব বক্সি বলেন, “আমাদের গর্ব ঐতিহাসিক হলং বন বাংলো। সেই বাংলো আবার তার পুরনো রূপেই ফিরে আসছে জেনে খুব ভালো লাগছে। আমরা চাই দ্রুত এই বন বাংলো পুনঃনির্মাণের কাজ শুরু হোক।”
