রমণী বিশ্বাস, তেহট্ট: নতুন করে ফের অশান্ত বাংলাদেশ। এরপরেই কড়া নিরাপত্তার মোড়কে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত। সমস্ত সীমান্তেই বিএসএফের তরফে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। শুধু তাই নয়, কাঁটাতারের ওপারে চাষাবাদ করতে যাওয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করল সীমান্ত রক্ষী বাহিনী। তেহট্ট মহকুমার অন্তর্গত ভারত-বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ কাঁটাতার রয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত থেকেই সেই এলাকায় নিরাপত্তা আঁটসাঁট করা হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে সীমান্ত রক্ষী বাহিনী অর্থাৎ বিএসএফের টহল।
সীমান্তবর্তী ভাটুপাড়া নফরচন্দ্রপুর গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তিদের কথায়, গ্রামের অনেকেরই জমি রয়েছে কাঁটাতারের ওপারে। গ্রামগুলি কাঁটাতার ঘেঁষা হলেও এখনও পর্যন্ত কোন সমস্যা হয়নি। গ্রামের মধ্যেই রয়েছে বিএসএফের বড় ক্যাম্প, এই ক্যাম্পের জওয়ানরাই আমাদের রক্ষক। এই বিএসএফ ভাইদের জন্যই আমরা নিরাপদে আছি, রাতে নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারছি। যদি কোন বিপদ আসে, তাহলে বিএসএফ আমাদের বুক আগলে রক্ষা করবে।
একদম সীমান্ত ঘেষা ভাটুপারা গ্রামের কলেজ ছাত্রী মিষ্টু ঘোষ বলেন, ''বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে দেখতে পাচ্ছি বাংলাদেশে নতুন করে অশান্তি ছড়িয়েছে। যে কারণে সীমান্তের রাস্তায় বিএসএফের গাড়ির আনাগোনা বেশি নজরে পড়ছে।'' ওই কলেজ ছাত্রীর কথায়, গত কয়েকদিনের তুলনায় বৃহস্পতিবার রাত থেকেই বাড়ানো হয়েছে বিএসএফের টহলদারি।
ভাটুপাড়া গ্রামের চাষী মধুসূদন হালদার ও নফর চন্দ্রপুরের মনোজিৎ মাহাতোরা জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে বিএসএফ হঠাৎ কাঁটাতারের ওপারে জমিতে যেতে সম্পূর্ণ নিষেধ করেছে। শুধু তাই নয়, যতদিন পর্যন্ত বাংলাদেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হচ্ছে, ততদিন কাঁটাতারের ওপারে জমিতে যেতে দেওয়া যাবে না বলেও জানানো হয়েছে।
তবে চাষ করে স্থানীয় অনেকেরই সংসার চলে। সেখানে না গেলে কীভাবে চলবে সংসার? তা নিয়ে অনেকের মধ্যেই তৈরি হয়েছে উদ্বেগ। মধুগাড়ি গ্রামের এক চাষি জানান, কাঁটাতারের ওপারে চাষাবাদ করে সংসার চলে। হঠাৎ কাঁটাতারের ওপারে যাওয়ার উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। সেখানে না গেলে কীভাবে চলবে সংসার? প্রশ্ন ওই ব্যক্তির। শুধু তাই নয়, ওই চাষির কথায়, ''আমাদের সমস্ত চাষাবাদ রয়েছে কাঁটাতারের ওপারে। দীর্ঘদিন কাঁটাতারের ওপারে যাতায়াত বন্ধ থাকলে সমস্ত ফসল নষ্ট হয়ে গেলে আমাদের রুটি রুজিতে টান পড়বে।'' এই অবস্থায় দ্রুত যাতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় সেই আশাই করছেন স্থানীয় কৃষকরা।
