অর্ণব দাস, বারাকপুর: দীর্ঘদিন ধরে মদ্যপ অবস্থায় স্ত্রীর উপর অত্যাচার। শেষমেশ স্ত্রীকে কুপিয়ে খুনের পর আত্মঘাতী স্বামী। বারাকপুরের সূর্যপুর এলাকার ঘটনায় এমনই অনুমান পুলিশের। শনিবার সকালে ঘর থেকে রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয় মহিলার। ঘরের বাইরে অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে ছিলেন স্বামী। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও বাঁচানো যায়নি। ঘটনার তদন্তে নেমেছে মোহনপুর থানার পুলিশ। স্বামী-স্ত্রী মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ পরিবার। ভেঙে পড়েছেন বছর তেইশের একমাত্র পুত্র।
ঘটনা বারাকপুরের শিউলি গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত সূর্যপুর এলাকার। মৃতা বিমলা কর্মকারের ছেলে লিটন জানিয়েছেন, বাবা কমল কর্মকার প্রায়ই মদ্যপান করে বাড়ি ফিরে মাকে মারধর করত। তাই ছোটবেলাতেই তাকে নিয়ে মামারবাড়িতে চলে এসেছিলেন বিমলা। কিন্তু স্বামী সেখানেও গিয়ে মাঝেমাঝে অত্যাচার করত। ছেলে লিটন তার সাক্ষী। তাই তিনি বাবার সঙ্গে বেশি কথাও বলতেন না। শুক্রবার রাতে মায়ের ঘরেই ছিলেন লিটন। বাবা কমল এসে বিমলার খোঁজ করেন। ছেলে জানায়, মায়ের জ্বর হয়েছে, তিনি বিশ্রাম নিচ্ছেন। তা শুনে বাবা প্রথমে চলে গেলেও পরে ফিরে আবার স্ত্রীর শারীরিক অবস্থা কেমন আছে, তা জানতে চায়। এর পর ছেলে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিল।
শনিবার সকালে বাড়ির লোকজন দেখতে পান, শ্বশুরবাড়িতে শ্যালকের ঘরের দরজার সামনে পড়ে রয়েছেন কমল কর্মকার। তাঁর মুখ দিয়ে গ্যাঁজলা বেরচ্ছে। ঘরের ভিতরে গিয়ে দেখা যায়, রক্তাক্ত অবস্থায় খাটে পড়ে রয়েছেন বিমলা। সঙ্গে সঙ্গে কমলকে উদ্ধার করে বারাকপুরের বিএন বসু মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। এদিকে বিমলার মৃত্যুর খবর পেয়ে মোহনপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়। সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে কর্মকার দম্পতির ছেলে লিটন জানান, তাঁর বাবা-মায়ের মধ্যে মাঝেমধ্যেই অশান্তি ঘটত, যার জেরে সম্ভবত নিজের স্ত্রীকে খুন করে আত্মঘাতী হয়েছেন কমল কর্মকার। মোহনপুর থানার পুলিশ তদন্তে নেমেছে।