shono
Advertisement
Haldia

শুধু ভিডিও কল না, এবার ফোনেও কথা বলবেন আসামিরা, নতুন বছরে 'উপহার' হলদিয়া জেলের

তবে সবটাই হবে সরকারি নিয়ম মেনে। নিয়ম ভাঙলেই শাস্তিস্বরূপ এক সপ্তাহ থেকে একমাস ফোনে কথা বলতে পারবেন না আসামিরা।
Published By: Subhankar PatraPosted: 07:20 PM Dec 05, 2024Updated: 07:20 PM Dec 05, 2024

চঞ্চল প্রধান, হলদিয়া: সংশোধনাগারে বসেই বাড়ির লোকদের সঙ্গে ফোনে কথা বলা যাবে। কথা বলা যাবে আইনজীবীর সঙ্গেও। জেল জীবনের আড়ষ্টতা কাটাতে নতুন ইংরেজি বছরের শুরুতে এমনই সুবিধা পেতে চলেছেন হলদিয়া উপ-সংশোধনাগারের আসামিরা।

Advertisement

তবে নতুন কী? আগেও আসামিরা পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে পারতেন। জেল সূত্রে জানা গিয়েছে, এখন যে ব্যবস্থা চালু রয়েছে তাতে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বাড়ির লোকের সঙ্গে কথা বলতে পারেন। ফোন করার অনুমতি নেই। সেই সুবিধা শুরু হতে চলেছে এই সংশোধনাগারে। হলদিয়া পুর এলাকার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে ২০১১ সালে হলদিয়া উপ-সংশোধনাগার চালু হয়। দিনেকালে এই সংশোধনাগারে আসামির সংখ্যা বেড়েছে। বর্তমানে ১১৫ জন আসামির ঠিকানা এই সংশোধনাগার।

মাসের পর মাস একই জায়গায় থাকার কারণে আসামিরা মানসিক অবসাদের শিকার হন! একে জেলবন্দি জীবন, সঙ্গে অপরাধবোধ কুরে কুরে খায় তাঁদের। অনেকের জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। সেই সমস্ত অবস্থা কাটিয়ে আসামিদের প্রাণবন্ত রাখতে জেলে টিভি দেখা, গান-বাজনার ব্যবস্থা আগে থেকেই রয়েছে। ক্রিকেট, ভলিবল, কাবাডি ব্যাডমিন্টন ক্যারাম খেলার ব্যবস্থাও রয়েছে। এছাড়াও বাগান তৈরির পাশাপাশি হাতের কাজ করবারও পরিবেশ রয়েছে।  তবে এত কিছুর মধ্যেও বাইরের জগৎ থেকে  বিচ্ছিন্ন তাঁরা। কখন পরিবারের কে আসবেন, মনের দুটি কথা ভাগ করে নেবেন সেই অপেক্ষায় মুখিয়ে থাকেন তাঁরা। তার বেশি কিছু উপায়ও নেই। এবার বদলাতে চলেছে সেই অবস্থা। জেলে বসেই বাড়ির লোকজনের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন তাঁরা।

তবে সবটাই হবে সরকারি নিয়ম মেনে। সেক্ষেত্রে আসামির মা-বাবা, ভাই-বোন, স্ত্রী, ছেলে-মেয়ের ফোন নম্বর রাখা থাকবে সংশোধনাগারের কর্তৃপক্ষের কাছে। রাখা হবে আসামি পক্ষের আইনজীবীর ফোন নম্বরও। সংশোধনাগারের থেকে দেওয়া ফোন থেকে আসামি সপ্তাহে একবার বাড়ির লোকের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পাবেন। তবে দীর্ঘক্ষণ নয়। দুই থেকে দশ মিনিটের সময়সীমার মধ্যে প্রয়োজনীয় কথা সারতে হবে। সেই সঙ্গে সপ্তাহে এক থেকে দুবার নিজের আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পাবেন আসামি।

তবে সমস্ত কথোপকথনের রেকর্ড থাকবে সংশোধনাগারে। কথোপকথনের সময় টেলিফোন সংস্থার পাশাপাশি সংশোধনাগারের একজন অর্থাৎ মোট দুজন সুপারভাইজার নজরদারি রাখবেন। কথা বলার সময় সরকারি নিয়মবিধি কেউ যদি ভেঙে ফেলেন, তাহলে অপরাধের গুরুত্ব অনুযায়ী শাস্তিস্বরূপ তিনি এক সপ্তাহ থেকে এক মাস ফোনে কথা বলতে পারবেন না। কোনও বিদেশি আসামির ক্ষেত্রে কথা বলার জন্য সেই দেশের দূতাবাসের প্রতিনিধির উপস্থিতি বাধ্যতামূলক।

এ প্রসঙ্গে হলদিয়া উপ-সংশোধনাগারের নিয়ামক সমর পাল জানিয়েছেন, "সরকারি নিয়মে রাজ্যের সংশোধনাগারগুলোতে প্রভূত পরিবর্তন ঘটেছে। আসামিরা এখন ভালো সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন। বাড়ির লোকদের সঙ্গে আসামিদের কথা বলার জন্য ২০২১ সালে প্রকল্প "ই-মোলাকাত" চালু রয়েছে।‌ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সেই সুবিধা তাঁরা পান। এবার সেই জায়গায় চালু হচ্ছে ফোনে কথা বলার ব্যবস্থা। তবে সবটাই প্রশাসনিক নজরদারির মধ্যে থাকবে।" এই ব্যবস্থা চালু করার আগে ইতিমধ্যে প্রশাসনিক স্তরের সমীক্ষার কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। রাজ্যের ৯টি সেন্ট্রাল জেলে এই ফোন সিস্টেম চালু হয়েছে। ১৬টি জেলা স্তরের জেলে এটি চালু করার জন্য পরিকাঠামো প্রস্তুত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ৩৩টি উপ-সংশোধনাগারে চালু করার উদ্যোগ চলছে। হলদিয়া উপ-সংশোধনাগার তার মধ্যে অন্যতম। ভাব বিনিময়ের এই সুযোগ পাওয়ায় স্বস্তিতে আসামিরা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • সংশোধনাগারে বসেই বাড়ির লোকদের সঙ্গে ফোনে কথা বলা যাবে। কথা বলা যাবে আইনজীবীর সঙ্গেও।
  • জেল জীবনের আড়ষ্টতা কাটাতে নতুন ইংরেজি বছরের শুরুতে এমনই সুবিধা পেতে চলেছেন হলদিয়া উপ-সংশোধনাগারের আসামিরা।
  • তবে সবটাই হবে সরকারি নিয়ম মেনে। নিয়ম ভাঙলেই শাস্তিস্বরূপ একমাস ফোনে কথা বলতে পারবেন না আসামিরা।
Advertisement