shono
Advertisement

Breaking News

Jaynagar

জয়নগরের দোষীকে ধরিয়ে দিল পুলিশের 'গেট প্যাটার্ন অ্যানালিসিস', কী এই প্রক্রিয়া?

শুক্রবার ফাঁসির সাজা ঘোষণার পর সাংবাদিক বৈঠক করে রহস্য উদঘাটনের কাহিনি শোনালেন এডিজি, দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতিম সরকার।
Published By: Sucheta SenguptaPosted: 11:41 PM Dec 06, 2024Updated: 11:44 PM Dec 06, 2024

অর্ণব আইচ: তিনটি সিসিটিভির ফুটেজ। আর তার সঙ্গে বিরল একটি পরীক্ষা, যার নাম ‘গেট প‌্যাটার্ন অ‌্যানালিসিস’। পুলিশের এই ‘সাঁড়াশি আক্রমণ’ই জয়নগরে নাবালিকাকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় মুস্তাকিন সর্দারকে এগিয়ে নিয়ে যায় সাজার দিকে। পুলিশের একের পর এক জবরদস্ত প্রমাণে রীতিমতো কুপোকাত দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরে নাবালিকাকে ধর্ষণ ও খুনে ফাঁসির আসামী মুস্তাকিন। শুক্রবার রাজ‌্য পুলিশের এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, কীভাবে এই ‘গেট প‌্যাটার্ন অ‌্যানালিসিস’কে কাজে লাগিয়ে অপরাধীকে দ্রুত চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে।

Advertisement

এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকারের বক্তব্য অনুযায়ী, তদন্তে তিনটি সিসিটিভির ফুটেজ উদ্ধার হয়েছিল। মহিষমারি হাটের কাছে একটি দোকানের সিসিটিভির ফুটেজে দেখা গিয়েছিল, মুস্তাকিন তার নীল রঙের সাইকেল নিয়ে হাঁটছে। এছাড়া আরও দু’টি ফুটেজে দেখা যায় যে, সে সাইকেলে চড়ছে ও সাইকেলে করে নাবালিকার পিছু নিয়েছে। কিন্তু ওই ব‌্যক্তিই যে মুস্তাকিন, তার বিজ্ঞানভিত্তিক পরীক্ষার জন‌্য ‘গেট প‌্যাটার্ন অ‌্যানালিসিস’-এর সিদ্ধান্ত নেয় পুলিশ। প্রত্যেক ব‌্যক্তির হাঁটাচলা, সাইকেলে ওঠা বা সাইকেল চড়ার ছন্দের ভঙ্গি বা ‘প‌্যাটার্ন’ আলাদা। মুস্তাকিনের সাইকেল হাঁটানো, সাইকেলে চড়া ও সাইকেলে করে যাওয়ার ফুটেজগুলি ফরেনসিকে পাঠানো হয়। এবার জেলে থাকাকালীন একজন ম‌্যাজিস্ট্রেটের সামনে মুস্তাকিনকে সাইকেল নিয়ে হাঁটতে, সাইকেলে উঠতে ও সাইকেল চালাতে বলা হয়। তার ভিডিও তোলেন বিশেষজ্ঞরা। ওই ফুটেজ ও ভিডিও ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা পরীক্ষার পর রিপোর্ট দেন যে, দুই ব‌্যক্তিই এক।

পুলিশের দাবি, মুস্তাকিনের মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন গুগল ম‌্যাপের সাহায্যে ডিজিটাল প্লটিং করা হয়। যেখান থেকে নির্যাতিতা নাবালিকার দেহ উদ্ধার হয়, সেখান থেকে তার স্কুলের ব‌্যাগও উদ্ধার করে পুলিশ। ওই ব‌্যাগে লেগে থাকা কাদা ও চোরকাঁটা রহস্যের সমাধান করে। পুলিশ ওই ধানখেত থেকে কাদা ও চোরকাঁটা এবং ব‌্যাগে লেগে থাকা কাদার নমুনা ফরেনসিকে পাঠায়। ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা প্রমাণ করেন যে, ব‌্যাগে লেগে থাকা কাদা ওই ধানখেতেরই। ব‌্যাগের ভিতর থাকা খাতা থেকে নাবালিকার হাতের লেখা উদ্ধার করে পুলিশ। আবার তার বাড়ির খাতা থেকেও উদ্ধার করা হাতের লেখা পাঠানো হয় ফরেনসিকে। দুটি হাতের লেখা যে নাবালিকারই, তার প্রমাণ দেয় ফরেনসিক।

দোষী মুস্তাকিন সর্দারের ব‌্যবহৃত যে নীল রঙের সাইকেল উদ্ধার হয়, তা ফরেনসিকে পাঠানো হয়। বিশেষজ্ঞরা ওই সাইকেল থেকে একটি হেয়ার ব‌্যান্ড ও কয়েকটি চুলের সন্ধান পান। আদালতে নির্যাতিতার অভিভাবক হেয়ার ব‌্যান্ডটি মেয়ের বলেই শনাক্ত করেন। চুলও যে নির্যাতিতার, সেই প্রমাণ মেলে ফরেনসিকে। এছাড়াও নির্যাতিতার যৌনাঙ্গ থেকে যে ‘সোয়াব’ উদ্ধার হয়, তা পরীক্ষা করে সিমেনের সন্ধান মেলে। ওই সিমেন তথা শুক্রাণু যে মুস্তাকিনের, ডিএনএ পরীক্ষায় তার প্রমাণ পাওয়া যায়। ফলে মুস্তাকিন সর্দার ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় দোষী, তাতে নিশ্চিত হয় আদালত। শুক্রবার তাকে ফাঁসির সাজা শোনানো হয়।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • জয়নগরে নাবালিকা ধর্ষণ-খুন কাণ্ডে দোষীকে ধরতে পুলিশের হাতিয়ার 'গেট প্যাটার্ন অ্যানালিসিস'।
  • কী এই প্রক্রিয়া? সাংবাদিক বৈঠকে তা খুলে বললেন এডিজি, দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতিম সরকার।
Advertisement