অর্ণব দাস, বারাসত: কিডনি পাচারের তদন্তে নেমে ধৃত বিকাশ ঘোষ ওরফে সুদখোর শীতল, পাণ্ডা গুরুপদ জানা ওরফে অমিত-সহ মোট পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করতেই উঠে এসেছিল এক আইনজীবীর নাম। তাঁকেই এবার নোটিস পাঠিয়ে তলব করল অশোকনগর থানা। 'গুণধর' এই আইনজীবী আলিপুর আদালতে প্র্যাকটিস করে বলেই সূত্রের খবর।
জানা গিয়েছে, কিডনি দানের ক্ষেত্রে জেলা এবং রাজ্যস্তরে দুটি কমিটি রয়েছে। নেফ্রোসেন্টার থেকে প্রাথমিকভাবে দাতা ও গ্রহীতার শারীরিক দিক খতিয়ে দেখার পর সেই নথির ভিত্তিতে আবেদন করলে স্বাস্থ্যজেলা প্রথমে পুলিশ ভেরিফিকেশন করায়। তারপর মহকুমা স্তরে হেয়ারিং হয়। সেই রিপোর্ট 'রেকমেন্ড' অথবা 'নট রেকমেন্ড' যাই হোক, পাঠানো হয় রাজ্যস্তরে। পাশাপাশি আদালত থেকে এফিডেভিট করাতে হয় দাতাকে। তবে, প্রশাসনের রেকমেন্ডেশন ছাড়া আদালত থেকে আইনি ছাড়পত্র মেলে না। এক্ষেত্রে আলিপুর কোর্টের ওই আইনজীবীর হাতযশেই নাকি 'নট রেকমেন্ড' কেসগুলো গুলি বাঁকা পথে এফিডেভিট হয়ে যেত বলেই ধৃতদের থেকে জানতে পেরেছে পুলিশ। সেই আইনজীবী জানত ঘুঘুড় কোন বাসায় গিয়ে কীভাবে কাজ করাতে হয়।
শুধু তাই নয়, কিডনি দানে জেলাস্তরে 'নট রেকমেন্ড' কেসগুলো আইনজীবীর জিয়নকাঠির ছোঁয়ায় রাজ্যস্তরের কমিটিতে ছাড়পত্র পেয়ে যেত। এই আইনজীবীর সঙ্গে যে ধৃত সুদখোর বিকাশ ঘোষ ওরফে শীতলে ও গুরুপদ জানা ওরফে অমিতের টিমের সম্পর্ক ছিল এমন নয়। নদিয়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া-সহ বাকি জেলার কিডনি পাচারের টিমের সঙ্গেও ছিল যোগাযোগ। তাই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে কিডনি পাচারের বাকি টিমের যেমন সন্ধান মিলবে, তেমনই অজানা আরও তথ্য জানা যাবে বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা। পাশাপাশি কিডনি বিক্রির ক্ষেত্রে আরও দুটি নতুন অভিযোগ পেয়েছে অশোকনগর থানা। অভিযোগকারীরা সুদখোর শীতলের থেকেই টাকা ধার নিয়েছিল, শোধ করতে না পারায় শীতলই তাদের দালালের কাছে পাঠিয়েছিল বলেই পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।