স্টাফ রিপোর্টার: মৌলানা আবুল কালাম আজাদ ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজির (ম্যাকাউট) ফলিত মনস্তত্ত্ব বিভাগের ক্লাসরুমেই বিয়ে কাণ্ডে এবার নাটকীয় মোড়! বিভাগীয় প্রধান প্রথম বর্ষের এক পড়ুয়ার সঙ্গে ক্লাসরুমেই তাঁর ওই মালাবদলের ঘটনাকে পাঠ্যক্রমেরই আওতাধীন 'সাইকো ড্রামার' অংশ বলে দাবি করলেও, তাঁর সেই দাবি স্রেফ খারিজ করে দিল বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটি।

শুক্রবার জমা পড়া তদন্ত কমিটির প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, ক্লাসরুমে ওই 'বিয়ের আসরে'র সঙ্গে পাঠ্যক্রমের কোনও সম্পর্ক নেই। এই ঘটনার সঙ্গে পাঠ্যক্রমেরও কোনও সম্পর্ক নেই। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অনুসারে এই ঘটনা এক ধরনের 'ক্রুড ফান'( নিষ্ঠুর মজা বা নোংরামি) বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য তাপস চক্রবর্তী।
প্রসঙ্গত, ওই বিয়ের আসরের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর কর্তৃপক্ষের প্রশ্নের উত্তরে বিভাগীয় প্রধান পায়েল বন্দ্যোপাধ্যায় আগে জানিয়েছিলেন যে, "ওই বিয়ের আসর আদতে পাঠ্যক্রমের আওতায় থাকা সাইকো ড্রামা-র একটা অংশ। সকলের সামনে ক্লাসরুমের মধ্যেই সবটা করা হয়েছে ডেমনস্ট্রেশন হিসাবেই।" এদিন উপাচার্য জানিয়েছেন, তদন্ত কমিটির প্রাথমিক রিপোর্টের ভিত্তিতে একটি রিপোর্ট আচার্য তথা রাজ্যপালের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই ওই অধ্যাপিকাকে ছুটিতে পাঠিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
ক্লাসরুমে ওই বিয়ের আসরের প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়েরই প্যাডে বিয়ের চুক্তিপত্রের ধাঁচে লেখা একটি নথিতে ওই শিক্ষিকা ও ছাত্রের নামও পাওয়া গিয়েছিল। সাংবাদিকদের প্রশ্নে উপাচার্য জানিয়েছেন, "এই ঘটনাও আপত্তিকর। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। তাছাড়া পরীক্ষা চলাকালীন একটা ক্লাস ঘরে কেন এমন করা হল, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে যে ছাত্রের সঙ্গে ঘটনাটি হয়েছে, সেই ছাত্রের বাকি পরীক্ষাগুলি যাতে ঠিকঠাক হয় সেই বিষয়ে নজর রাখা হচ্ছে। ছাত্রটির পাশে আমরা সকলেই আছি।" উপাচার্য জানিয়েছেন, "আরও বিস্তারিত তদন্ত করা হবে। অভিযুক্ত অধ্যাপিকার বয়ানও শোনা হবে।"এদিকে অধ্যাপিকার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানিয়েছেন, "আমি এখনও সরকারিভাবে কোনও বক্তব্য বা রিপোর্ট পাইনি। তাই কোনও মন্তব্য করব না।"
প্রসঙ্গত, ওই ভিডিও প্রকাশ্যে আসার পর অধ্যাপিকা নিজে একটি ভিডিও করে তা সমাজ মাধ্যমে দেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘এটা ‘সাইকো ড্রামা’র একটা অংশ। সকলের সামনে ক্লাসরুমের মধ্যেই সবটা করা হয়েছে ডেমনস্ট্রেশন হিসেবে। যা জানানোর কর্তৃপক্ষকে জানাব। আশা করি, বিশ্ববিদ্যালয় বিষয়টি বুঝবে। আমার ভরসা আছে।" এর পরেই সাধারণ মানুষের উদ্দেশে অধ্যাপিকা আবেদন করেছিলেন "অনেক হয়েছে। আপনাদের হাতজোড় করে অনুরোধ করছি, অসভ্যতাকে প্রশ্রয় দেবেন না। এসব বন্ধ করুন। আমার পাশে দাঁড়ান। ভিডিওটি আপনারা রিপোর্ট করুন। আর শেয়ার করবেন না। অনুরোধ রইল।"