দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দুই শিশু শ্রমিক-সহ মৃত্যু হল তিনজনের। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড় (Bhangar) থানার ঘটকপুকুর চৌমাথা এলাকায়। নিহতদের নাম মোশারেফ মোল্লা, রাকিবুল মোল্লা ও আতিকুর মোল্লা। এর মধ্যে রাকিবুল ও আতিকুর নাবালক। এরা মোশারেফ মোল্লার রেস্তরাঁয় শ্রমিক হিসেবে কাজ করত বলে জানা গিয়েছে। মোশারফের বাড়ি ভাঙড় থানার গোবিন্দপুরে, বাকি দু’জন চাঁদপুর এলাকার বাসিন্দা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, শনিবার সকালে ঘটকপুকুর চৌমাথা এলাকায় হঠাৎই একটি কেরোসিনের দোকানে আগুন লাগে। দাহ্য পদার্থ হওয়ায় দ্রুত সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের দোকানগুলোতে। পাশে থাকা মিষ্টির দোকান, রেস্তরাঁ এবং বেডিং স্টোর্সেও আগুন লেগে যায়। আগুন লাগে একটি মোবাইলের দোকানেও। প্রতিদিনের মতো এদিনও দোকানের শাটার বন্ধ করে ঘুমোচ্ছিলেন রেস্তরাঁর মালিক মোশারেফ ও দুই কর্মী রাকিবুল, আতিকুর। প্রবল ধোঁয়া আর আগুনের তাপে তাারা বাইরে বের হতে পারেনি। ঘটনার খবর পেয়ে ভাঙ্ড় থানার পুলিশ ও স্থানীয়রা রেস্তরাঁর দেওয়াল ভেঙে ওই তিনজনকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করেন। তড়িঘড়ি তাদের পাঠানো হয় নলমুড়ি ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। সেখানকার চিকিৎসকরা তিনজনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
[আরও পড়ুন: বাংলার ‘গণতন্ত্র’ শুভেন্দুর যোগদানের মঞ্চে হল ‘গনতন্ত্র’, বানান বিভ্রাটে অস্বস্তিতে বিজেপি]
এই দুর্ঘটনার জেরে প্রায় তিন ঘন্টা বাসন্তী হাইওয়ে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। ব্যাপক যানজট হয় । আশেপাশের এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার খবর পেয়ে দমকলের তিনটি ইঞ্জিন এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। আগুন নেভানোর কাজে হাত লাগান স্থানীয় মানুষজন। দুটি ইঞ্জিন প্রায় ঘণ্টা দুয়েকের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। কীভাবে এই অগ্নিকাণ্ড ঘটল, তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ ও দমকল। তবে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, প্রথমে শর্ট সার্কিট থেকে কেরোসিন মজুত করার দোকানে আগুন লাগে। এরপর সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে। কেরোসিন দোকানের মালিক ফজের গাজিকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
[আরও পড়ুন: অমিত শাহর সঙ্গে যোগাযোগ ২০১৪ থেকেই! যোগদান মঞ্চে বোমা ফাটালেন শুভেন্দু]
ঘটকপুকুর বাজারে আগুন লাগার খবর পেয়ে এলাকা পরিদর্শনে আসেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি নিহতদের পরিবারকে তিন লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। এলাকা পরিদর্শনে এসে তিনি বলেন, ”মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে আমি এখানে এসেছি। স্বজনহারা পরিবারগুলিকে সমবেদনা জানাতে।”
This browser does not support the video element.