বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য ও ধনরাজ ঘিসিং: ৩১৩ জন শিক্ষকের চাকরি বাতিলের নির্দেশ পরেই পাহাড়ের স্কুলগুলিতে অনির্দিষ্টকালের বনধের ডাক দেয় ‘সংযুক্ত মাধ্যমিক শিক্ষক সংগঠন'। সেই মতো আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে জিটিএ এলাকায় বন্ধ রয়েছে সরকারি সমস্ত স্কুল। এদিন বেশ কয়েকটি স্কুলের রেজাল্ট বের হওয়ার কথা ছিল। তাও বাতিল করে দেওয়া হয় বলে খবর। বহু পড়ুয়াকেও এদিন সকালে স্কুলে গিয়েও ফিরে আসতে দেখা যায়। যদিও জটিলতা কাটাতে জরুরি বৈঠকে বসেছেন জিটিএ প্রধান অনীত থাপা। যেখানে হাই কোর্টের নির্দেশে চাকরি হারানো ৩১৩ জন শিক্ষকও রয়েছেন। আছেন অন্যান্য আধিকারিকরাও।
বুধবার দার্জিলিং ও কালিম্পং পাহাড়ের জিটিএ-র অধীন সরকারি স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) মামলার রায়ে ৩১৩ জন শিক্ষকের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। চাকরি বাতিলের রায়ের খবর পাহাড়ে পৌঁছতেই তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয় বিভিন্ন মহলে। দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ে জিটিএ-র অধীন প্রতিটি সরকারি স্কুলে অনির্দিষ্টকালের বনধের ডাক দেয় সংযুক্ত মাধ্যমিক শিক্ষক সংগঠন।
সংগঠনের দাবি, এই ২৫ বছর ধরে ওই শিক্ষকরা দার্জিলিং পাহাড়ের সরকারি শিক্ষাব্যবস্থা পরিচালনা করছেন। ২০০২ সাল থেকে পাহাড়ে স্বেচ্ছাসেবক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে। এটা শিক্ষকদের দোষ নয়। প্রশাসনিক ব্যবস্থার ত্রুটি। এজন্য তৎকালীন সরকার, জিটিএ দায়ী। তাই শিক্ষকদের শাস্তি দেওয়া উচিত নয়।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ খারকা জানান, স্কুলে বার্ষিক পরীক্ষা চললে অথবা ফলাফল ঘোষণার দিন থাকলেও তা স্থগিত থাকবে। যদিও বুধবারই জিটিএ প্রধান অনীত থাপা স্পষ্ট জানান, “আমি কাউকে হতাশ হতে দেব না। ওই শিক্ষকদের ন্যায়বিচারের জন্য যেখানে যেতে হবে যাব।”
এই অবস্থায় এদিনের বৈঠকে কোনও সমাধান বের হয় কিনা সেদিকেই নজর সবার। বলে রাখা প্রয়োজন, জিটিএ-র নিয়ন্ত্রণে পাহাড়ে ৩৬০টি মাধ্যমিক স্কুল রয়েছে। ২০১৯ সালের মার্চ মাসে রাজ্য সরকার জিটিএকে শিক্ষক নিয়োগের নির্দেশ দেয়। জিটিএ জুন মাসে ৩১৩ জন শিক্ষক নিয়োগ করে। এরপর বেআইনিভাবে নিয়োগের অভিযোগ তুলে কলকাতার বাসিন্দা জসুমুদ্দিন মণ্ডল হাই কোর্টে মামলা দায়ের করেন। সেই মামলাতেই ৩১৩ জন শিক্ষকের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু।
