নিজস্ব সংবাদদাতা, বনগাঁ: মৃত স্ত্রীর খোঁজে বনগাঁ লোকালে ভিনরাজ্যের মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক। স্কুলে না গিয়ে যুবকের বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করলেন এক শিক্ষক। ওই যুবককে তুলে দিলেন শিয়ালদহ রেলপুলিশের হাতে। শিক্ষকের এই কাজে খুশি সকলেই।
[বালুরঘাটে তৃণমূলের প্রার্থী বাছাই নিয়ে অন্তর্দ্বন্দ্ব, সোশ্যাল মিডিয়ায় কটাক্ষ সাংসদকে]
বুধবার সকালে বনগাঁ-শিয়ালদহ শাখার ট্রেনে স্কুলের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলেন বামনখলি স্কুলের শিক্ষক সুদীপ্ত রায়। জানা গিয়েছে, ট্রেনে এক যুবকের সঙ্গে পরিচয় হয় তাঁর। বনগাঁ থেকে ট্রেনটি ছাড়ার পর অদ্ভুত আচরণ শুরু করেন ওই যুবক। অভিযোগ, বিনা অনুমতিতে এক ফেরিওয়ালার থেকে জিনিস কেড়ে নেন। ঘটনার পর যুবকের উপর চড়াও হন ওই বিক্রেতা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেই সময় ওই শিক্ষক দুপক্ষের মধ্যে মীমাংসাও করে দেন। এরপরই যুবকের কাছে নাম, পরিচয়, ঠিকানা জানতে চান তিনি। তবে তার কাছ থেকে কার্যত কিছুই জানতে পারেননি তিনি। বেশ কিছুক্ষণ তাঁকে প্রশ্ন করার পর তাঁর ব্যাগ থেকে একটি ফোন নম্বর পান ওই শিক্ষক। সেই নম্বরটিতে ফোন করার পর যুবকের কথা বলতেই, ওপাশে কান্নায় ভেঙে পড়েন এক মহিলা। এরপরই গোটা বিষয়টি পরিষ্কার হয় ওই শিক্ষকের কাছে।
[দৃষ্টিহীন পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করলেন বিডিও]
জানা যায়, সন্তোষ কুমার নামে ওই যুবক আসলে বিহারের মির্জাপুরের বাসিন্দা। কয়েকদিন আগেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর স্ত্রীর। স্ত্রীর মৃত্যুর বিষয়টি মানতে পারেননি তিনি। দিন চারেক আগে উদভ্রান্তের মতো বাড়ি থেকে বেড়িয়ে পড়েন তিনি। উদ্দেশ্য স্ত্রীকে খুঁজে বের করা। এরপর পথ হারিয়ে ঘুরতে ঘুরতে বনগাঁ গিয়ে হাজির হন সন্তোষ। গোটা ঘটনা জানার পর ওই যুবককে নিয়ে শিয়ালদহ জিআরপির কাছে যান ওই শিক্ষক। পুলিশের পরামর্শে তাঁকে হাসপাতালে ভরতি করা হয়। আপাতত সেখানেই ভরতি ওই যুবক। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই, যুবককে ফিরে পেতে বিহার থেকে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে তাঁর পরিবার। তবে পথ হারিয়ে বিহার থেকে বনগাঁ পৌঁছনোর পরেও সন্তোষ ফের ঘরে ফিরবেন। এর পিছনে একমাত্র ভূমিকা রয়েছে সুদীপ্ত বাবুর। তার এই কাজকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সকলেই। সুদীপ্তবাবুকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন সন্তোষ কুমারের পরিবারও।
