তারক চক্রবর্তী, শিলিগুড়ি: সালটা ২০১০-১১। যাদবপুরের মতোই উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেলে র্যাগিংয়ের অভিযোগে তোলপাড় হয়েছিল শিক্ষা মহল। এক পড়ুয়াকে র্যাগিং করার অভিযোগ উঠেছিল কয়েকজন সিনিয়র পড়ুয়ার বিরুদ্ধে। ঘটনার খবর পেয়েই কড়া পদক্ষেপ নিয়ে সেই সময়ে একসঙ্গে চার পড়ুয়াকে বহিষ্কার করার পাশাপাশি র্যাগিং রুখতে নেওয়া হয়েছিল একাধিক পদক্ষেপ। ওই ঘটনার পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসা পড়ুয়া ও তাঁদের অভিভাবক থেকে রীতিমতো এফিডেবিট নিয়ে ভরতি করানোর প্রথা চালু হয়। সেই প্রথা এখনও বর্তমান। এর সঙ্গে গড়া হয়েছিল অ্যান্টি র্যাগিং স্কোয়াড। এরপর থেকেই র্যাগিংয়ের আর কোনও অভিযোগ ওঠেনি উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে। সিনিয়ার ও জুনিয়র পড়ুয়াদের মধ্যে একেবারে বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশেই পড়াশুনা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে, যাদবপুরের ছাত্র মৃত্যুর ঘটনা ঘটতেই ফের সতর্ক বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
জানা গিয়েছে, আগামী সাতদিন ধরে লাগাতার বিভিন্ন বিভাগের পড়ুয়াদের ডেকে চালানো হবে র্যাগিং বিরোধী সচেতনতা। পাশাপাশি একের জায়গায় তিনটি অ্যান্টি র্যাগিং স্কোয়াড গড়ার পরিকল্পনা শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ। নিরাপত্তার কারণে ইতিমধ্যেই ২২০টি সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে। উপাচার্যের ঘরের পাশেই রয়েছে কন্ট্রোল রুম। সেখানে বাড়তি নজরদারি চালানো হবে।
[আরও পড়ুন: কোন্নগরের ভূমিপুত্র ছিলেন ঋষি অরবিন্দ, জন্মদিনে ঘুরে দেখা ‘অরবিন্দ ভবনে’র আর্কাইভ]
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ন্তবর্তীকালীন উপাচার্য রথীন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিগত প্রায় বারো-তেরো বছর আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিংয়ের কোনও অভিযোগ নেই। তবুও আমরা সতর্ক রয়েছি। বাড়ানো হচ্ছে অ্যান্টি র্যাগিং স্কোয়াডের সংখ্যা।” সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে যাদবপুরের ঘটনার প্রতিবাদ জানান তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ও এআইডিএসও কর্মী সমর্থকেরা। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে শোকসভার আয়োজন করা হয় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের তরফে। মৃত ছাত্রের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে নীরবতা পালন করেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যরা। দোষীদের শাস্তি দাবি করেন পড়ুয়ারা। কর্মী সমর্থকেরা জানান যাদবপুরের থেকে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় অনেকটাই আলাদা। বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিং রুখতে সবরকম ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন।
অন্যদিকে, এদিন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেটের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ ও মিছিল করে এআইডিএসও কর্মী সমর্থকেরা। অবস্থান বিক্ষোভে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে কটাক্ষ করেন সংগঠনের সদস্যরা।
