রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: কাঁথি সংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতির বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার অভিযোগ তোলায় আইনি নোটিস দেওয়া হল নির্দল প্রার্থীকে। এমনকী নির্দল প্রার্থীর বিরুদ্ধে এগরা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন জেলা তৃণমূলের সভাপতি তরুণ কুমার মাইতি।
তৃণমূলের টিকিট না পেয়ে নির্দলের প্রার্থী হয়ে ভোটে দাঁড়িয়েছেন। সে কারণে বহিষ্কার করেছে তৃণমূল। এরপরই জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত নেতাদের। টাকার বদলে টিকিট বিক্রি করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার তিন নেতা। তাঁদের দাবি, ১২ লক্ষ টাকার বিনিময়ে পঞ্চায়েতের টিকিট বিক্রি করা হয়েছে। যদিও পালটা কাঁথি সাংগঠনিক জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি ও এগরার বিধায়ক তরুণ মাইতি বলেন, এই অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ করতে হবে বহিষ্কৃতদের। নাহলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রবিবার এ নিয়ে আইনি নোটিসও পাঠিয়েছেন তাঁর আইনজীবী।
[আরও পড়ুন: PUBG খেলতে খেলতেই প্রেম, সীমান্ত পেরিয়ে নয়ডার প্রেমিকের কাছে ছুটে এলেন পাক তরুণী]
দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে যাঁরা নির্দল প্রার্থী হয়েছেন, তাঁদের বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে তৃণমূল। সেইমতো রাজ্যজুড়ে চলছে বহিষ্কার পর্ব। রবিবার সন্ধেয় এগরা-১ ব্লকের জুমকি তৃণমূল কংগ্রেসের কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে এক নির্দল প্রার্থী-সহ তিনজন দলীয় নেতাকে বহিষ্কারের কথা ঘোষণা করেন ব্লক তৃণমূলের সভাপতি বিজনবিহারী সাহু। তালিকায় আছেন এগরার জুমকি গ্রামপঞ্চায়েতের প্রাক্তন উপপ্রধান উদয়শঙ্কর সর, ব্লক তৃণমূল কমিটির সদস্য ইতিশ চন্দ্র দে ও সুধাংশু জানা।
জুমকি গ্রাম পঞ্চায়েতের (Panchayat Election 2023) বামুনিয়া আসনে উদয়শঙ্কর সর, ইতিশ চন্দ্র দে পঞ্চায়েত সমিতির ২৩ নম্বর আসনে এবং সুধাংশু জানা জুমকী পঞ্চায়েত সমিতির ২১ নম্বর আসনে নির্দল প্রার্থী হয়ে ভোটে লড়ছেন। এদিকে দল তাঁকে বহিষ্কার করার পরই তিনি তোপ দাগেন জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে। অভিযোগ তোলেন, জেলা সভাপতিকে লক্ষ লক্ষ টাকা দিতে না পারায় তাঁকে তৃণমূলের প্রার্থী করা হয়নি। নির্দল প্রার্থীর এহেন মন্তব্যে শোরগোল পড়ে যায়। তিনি বলেন, "তরুণবাবুরা আজকে কাটমানির খেলা খেলছেন। গভীর চক্রান্ত করে আমাকে টিকিট দেওয়া হল না। অর্থের বিনিময়ে টিকিট বিক্রি হয়েছে। আমি তারই প্রতিবাদ জানিয়েছি। জেলা সভাপতি টোটাল টাকাটাই ডিল করেছে। ওনাকে আদর্শবান শিক্ষক মনে করতাম। কিন্তু উনি যা করলেন, প্রমাণ হয়তো দিতে পারব না। তবে শুনেছি ১২ লক্ষ টাকার বিনিময়ে গ্রাম পঞ্চায়েতে টিকিট বিক্রি হয়েছে। জুমকিতে চারটি টিকিট বিক্রি হয়েছে।”
সুধাংশু জানার এই বক্তব্য ভাইরাল হতেই তাঁর নামে আইনি নোটিস পাঠান জেলা সভাপতি। তরুণ মাইতি বলেন, “উনি যে অভিযোগ আনছেন তা প্রমাণ করতে বলুন। সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে উনি প্রমাণ করুন। ওই মানুষের রাজনৈতিক চরিত্র বলে কিছু নেই। প্রথমে তৃণমূল করতেন, এরপর সিপিএমে গেলেন। এরপর বিজেপি করলেন। ব্লক সভাপতিকে ধরে আবার আমাদের দলে ঢোকেন। ব্লক কমিটির সদস্যও করি। আমরাও পরীক্ষা করে দেখছিলাম উনি কতটা দলের প্রতি অনুগামী। এরকম যিনি বারবার দলবদল করেন, তাঁকে তৃণমূলের প্রার্থী করা যায় না। আমরা যেটা ভেবেছিলাম, সেটাই ঠিক। ওঁর বিরুদ্ধে আইনি নোটিস শুধু নয়, এগরা থানায় অভিযোগ জানানো হয়েছে।"