সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: সন্তান স্নেহে কোলে পিঠে ভাইপোকে বড় করে তুলেছিলেন কাকা। ভোটের ময়দানে সেই কাকা-ভাইপো যুযুধান। দু’জনই গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে একই আসনে প্রার্থী হয়ে ভোটের (WB Panchayat Vote 2023) লড়াই এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে দু’জনের কথা বলা আপাতত বন্ধ। তবে এই বিষয়টিকে খুব হালকাভাবে নিয়েছেন কাকা।
পুরুলিয়া ১ নম্বর ব্লকের চাকলতোড় গ্রাম পঞ্চায়েতের ছ’নম্বর সংসদে বিজেপি প্রার্থী হয়েছেন কাকা তরণী রেওয়ানি। ওই সংসদেই তৃণমূল প্রার্থী ভাইপো মনোজ রেওয়ানি। দু’জনেই এবার প্রার্থী হিসেবে নতুন। ভাইপো গত পাঁচ বছর ধরে তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত। মুদি দোকানের মালিক কাকা তরণী রেওয়ানি বলেন, “ভাইপো প্রার্থী হবে তা আমি জানতাম না। মনোনয়নের শেষ দিনে ভাইপো মনোনয়নপত্র জমা দেন। তারপর থেকে তো ও কথাই বলছে না। যাই হোক ভোটের পরে কথাবার্তা হবে।”
[আরও পড়ুন: সিপিএমের প্রার্থী নেই খোদ সুশান্ত ঘোষের বুথেই! বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী তৃণমূল]
এই এলাকা তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি। মোট ভোটার ৭৩২। কাকাকে একেবারে কঠিন লড়াই লড়তে হয়েছে। তবে যখন ভোটপ্রার্থী হয়েছেন তখন তো আর চুপ করে বসে থাকতে পারেন না। তাই কাকার হয়ে জোরকদমে চলছে দেওয়ার লিখনের কাজ। দু’দিনের মধ্যেই তিনি প্রচার শুরু করবেন। আর এখানেই এগিয়ে ভাইপো। দেওয়াল লিখন শেষ করে প্রচারের কাজ শুরু করে দিয়েছেন। কাকা-ভাইপো ভোটের ময়দানে প্রতিপক্ষ হলেও এলাকায় এই লড়াইকে ঘিরে সেরকম টেনশনের আবহ নেই। খানিকটা হালকা মুডেই সবাই। কিন্তু কাকা-ভাইপো দু’জনেই ভীষণ সিরিয়াস। কেউ কাউকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে চাইছেন না! তাই আপাতত পরিবারের সম্পর্ক দূরে রেখে ভোটের ময়দানে জিততে তৈরি।
ভাইপো মনোজ রেওয়ানির কথায়, “দল যখন প্রার্থী করেছে তখন জিততে তো হবেই। সেজন্যই বন্ধুবান্ধব সকলকে নিয়ে প্রচারে নেমে পড়েছি। তবে পরিবার আলাদা জায়গায়। রাজনীতি আলাদা। এই বিষয়কে আমি একসঙ্গে করতে চাই না। কাকা গুরুজন। তবে ভোটের ময়দানে লড়াইয়ে আমি পিছপা হব না।” সে কারণেই ৫১ বছর বয়সি কাকার সঙ্গে ৩১ বছরের ভাইপোর লড়াই এমন জমজমাটি। অবিবাহিত ভাইপো মনোজ রেওয়ানি গাড়ির ব্যবসার সাথে যুক্ত। পাঁচ বছর ধরে শাসকদলের সঙ্গে যুক্ত থাকায় ভোট কীভাবে করতে হয় তা তিনি জানেন। কিন্তু কাকা ভোটের বিষয়ে অতটা পারদর্শী নন। তাই তিনি বলছেন, “ভাইপো শাসকদলের প্রার্থী। তাই অনেক সুযোগসুবিধা পাচ্ছেন। সেই জায়গায় তো খানিকটা পিছিয়ে আছি। তবে লড়াই চলবে।”
