সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: দিন দুই হল জঙ্গলে ঘাপটি মেরে রয়েছে ঝাড়খণ্ড পেরিয়ে ঝাড়গ্রামে ঢুকে পড়া রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। সীমানার অন্তত ১০ টি গ্রামের আশেপাশে তার বিচরণ। অথচ কোথায় রয়েছে 'জিনাত' নামের ওই বাঘটি, তা এখনও চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি। রাজ্য বনদপ্তরের উচ্চপর্যায়ের আধিকারিক-সহ গোটা টিম উপস্থিত রয়েছে কাঁকরাঝোড়, আমলাশোল, দলদলির আশেপাশে। ডেকে পাঠানো হয়েছে সুন্দরবন বিশেষজ্ঞদেরও। এদিকে, বাঘিনীর ভয়ে জঙ্গলে কাঠ, পাতা কুড়োতে যেতে পারছেন না অরণ্যবাসী। আর জঙ্গলে না গেলে আয় কীভাবে হবে, তা নিয়ে গভীর চিন্তায় তাঁরা।
বনদপ্তর সূত্রে খবর, জিনাতের অবস্থান জানতে জঙ্গলে ড্রোন ক্যামেরার মাধ্যমে নজরদারি চলছে। বাঘিনীর গলায় রেডিও কলার পরানো রয়েছে। তা থেকে প্রতি মুহূর্তের অবস্থান জানা গেলেও অবস্থান ঠিকমতো বোঝা যাচ্ছে না। টোপ হিসেবে রাখা হয়েছে দুটি গরু, তিন রাজ্যের প্রায় ১০০ জন বনকর্মী রয়েছেন। রাজ্য স্তরের উচ্চপর্যায়ের বন আধিকারিরাও উপস্থিত আছেন। ঝাড়গ্রামের যুজারধারা, ময়ূরঝোড়া, জাবলা, ওরালি, চিরিমারা, কাঁকড়াঝোড়, মনিরাদি, তেলিঘানা, আমলাশোল, দলদলি - এই ১০টি গ্রামের বাসিন্দাদের সর্বক্ষণ সতর্ক করা হচ্ছে, কেউ যেন জঙ্গলের ভিতরে না যান। ঝাড়গ্রামের ডিএফও নিজে সতর্ক করছেন। বনাঞ্চলের আশপাশে যেসব রিসর্ট, হোটেল রয়েছে, এই শীতে সেখানে পর্যটকদের ভালোই ভিড়। তাঁদের উদ্দেশেও বনদপ্তর মাইকিং করছে। বারবার বলা হচ্ছে, কোনওভাবেই যেন কেউ জঙ্গলের কোর এলাকার ভিতরে না ঢোকেন। সেখানেই সাক্ষাৎ বিপদ হিসেবে অপেক্ষা করছে 'জিনাত'!
এর আগে জিনাতকে ধরতে জঙ্গলের আদলে খাঁচা পাতা হয়েছিল। টোপ হিসেবে রাখা হয়েছিল মহিষ শাবককে। কিন্তু দেখা যায়, বাঘিনী এসে টোপ গিলে আবার জঙ্গলে চলে গিয়েছিল। তাতে আরও কঠিন হয় কাজ। রীতিমতো লুকোচুরি শুরু হয়। বাঘিনীকে ঘুমপাড়ানি গুলির মাধ্যমে কাবু করার পরিকল্পনা থাকলেও তা বাস্তবায়িত করা যাচ্ছে না, তার অবস্থান জানতে না পারায়। এবার তাকে নাগালে পেতে সুন্দরবন বিশেষজ্ঞদের আনা হয়েছে। তাঁরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়ার পর অ্যানিম্যাল অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যদি জিনাতকে ট্রাঙ্কুলাইজ করা সম্ভব হয়, তাহলে অ্যাম্বুল্যান্স দরকার হবে বলে খবর।