রাজা দাস, বালুরঘাট: প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এবং অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিবাদের জের৷ ২৪ জানুয়ারি থেকে তালা বন্ধ চককাশি শ্যামসুন্দর উচ্চবিদ্যালয়ের ঘর। ওই বিদ্যালয়ের পড়ুয়া সংখ্যা তিনশোরও বেশি৷ মোট এগারোজন শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন স্কুলে৷ তাই বাধ্য হয়ে দেড়মাস ধরে স্কুলের পঠনপাঠন চলছে বারান্দায়। বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস বিদ্যালয় পরিদর্শকের।
[ভিনদেশি বাবা,মায়ের কোলে তোর্সা চরের পরিত্যক্ত শিশুকন্যা]
ঘটনার সূত্রপাত অবশ্য বছর কয়েক আগে। ওই বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে ২০০১ সালে কাজে যোগ দেন শুভেন্দু চক্রবর্তী। হিসেবে গড়মিল থাকার অভিযোগ তুলে তাঁকে ২০১২ সালে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি। তবে সেই বরখাস্ত অনুমোদন করেনি পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। মাসকয়েকের মধ্যে তিনি ফের কাজে যোগ দেন। ২০১৬ সালে নানা কারণ দেখিয়ে ফের প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব (টিআইসি) দেওয়া হয় সঞ্জয় মণ্ডল নামে এক সহকারী শিক্ষককে। এদিকে বরখাস্ত হওয়া প্রধান শিক্ষক আবার দ্বারস্থ হন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের আপিল কমিটির কাছে। ৭ সেপ্টেম্বর আপিল কমিটির শুনানি হয়। ১২ সেপ্টেম্বর আপিল কমিটির চেয়ারম্যান একটি নির্দেশ দেন। লিখিত ওই নির্দেশে শুভেন্দু চক্রবর্তীকে কাজে যোগদান করতে বলা হয়।
৩০ নভেম্বর নির্দেশ পাওয়ার পরেরদিনই স্কুলে যোগদান করতে যান তিনি। কিন্তু ওই শিক্ষককে স্কুল কর্তৃপক্ষ কাজে যোগ দিতে বাধা দেয় বলে অভিযোগ। এরপর জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের নির্দেশ অনুযায়ী, গত ২২ জানুয়ারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক হিসাবে আবারও দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন শুভেন্দু চক্রবর্তী। অভিযোগ, ২৩ জানুয়ারি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক (টিআইসি) সঞ্জয় কুমার সরকার স্কুলে তালা দিয়ে চাবি নিয়ে চলে যান৷ এদিকে ওইদিনই ভারপ্রাপ্ত ডিআই মৃণালকান্তি রায় সিংহের কানে পৌঁছায় এই বিবাদের কথা। তিনি সকলের সামনেই স্কুলের প্রধান দরজা এবং একটি ঘর চাবি দিয়ে খোলার ব্যবস্থা করে দেন৷ এবং বাকি ঘরগুলি খুলে প্রধান শিক্ষক শুভেন্দু চক্রবর্তীকে ক্লাস চালানোর নির্দেশ দিয়ে যান৷ তবে নিজে দায়িত্ব নিয়ে অন্যান্য ঘরগুলি খোলেননি প্রধান শিক্ষক। এই ঘটনার জেরে ২৪ জানুয়ারি থেকেই ওই বিদ্যালয়ের পঠনপাঠন চলছে বারান্দাতেই।
[চিকিৎসকের ‘গাফিলতি’তে রোগীমৃত্যু, নার্সিংহোম ভাঙচুর পরিবারের]
বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা রীতা দাস বলেন, ‘‘স্কুলের মূল দরজা ও অফিস ঘরটি খুলে দিয়ে গিয়েছিলেন ডিআই। সেই ঘরে একদিকে একটি ক্লাস চলছে। বাকি ক্লাস হচ্ছে বারান্দায়। তাঁরা নিজেরা স্কুলের বাকি ঘরগুলি খোলার দায়িত্ব নিচ্ছেন না।’’ ভারপ্রাপ্ত জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক মৃণালকান্তি রায় সিংহ বলেন, ‘‘স্কুল কর্তৃপক্ষকে সবগুলি ক্লাসঘর খুলে পঠনপাঠন চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলাম। তবে কেন ঘরগুলি খুলে স্বাভাবিক পঠনপাঠন হচ্ছে না তা খতিয়ে দেখা হবে।’’ প্রশাসনিক মহলের এহেন টানাপোড়েনের শিকার হচ্ছে পড়ুয়ারা। জানুয়ারির ঠাণ্ডাতেও তাদের ক্লাস করতে হয়েছে খোলা আকাশের নিচে।
The post ঘরোয়া বিবাদ, বিল্ডিং থাকলেও খোলা বারান্দায় চলছে স্কুলের পঠনপাঠন appeared first on Sangbad Pratidin.
