shono
Advertisement
Lookback 2025

বিজ্ঞানে 'আত্মনির্ভর' ভারত! ২০২৫ সালে কোন কোন মাইলফলক ছুঁল দেশ

ফিরে দেখা যাক গর্বের সেই সব মুহূর্ত।
Published By: Biswadip DeyPosted: 08:41 PM Dec 19, 2025Updated: 08:45 PM Dec 19, 2025

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বছরটা প্রায় শেষ। সালতামামি করতে বসলে যে উজ্জ্বল ছবিগুলি মাথার ভিতরে জেগে ওঠে, তার মধ্যে অন্যতম প্রথমবার আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে ভারতের পতাকা! মহাকাশচারী শুভাংশু শুক্লার সাফল্যের পাশাপাশি বছরজুড়ে বিজ্ঞানে নানা মাইলফলক ছুঁয়েছে দেশ। যা গর্বিত করেছে প্রত্যেক ভারতবাসীকে। ফিরে দেখা যাক গর্বের সেই সব মুহূর্ত।

Advertisement

মহাকাশে ‘করমর্দন’: বছরের শুরুর দিকের কথা। মহাকাশে স্বয়ংক্রিয় ভাবে ‘করমর্দন’ বা সংযুক্ত হয় ইসরোর দুটি কৃত্রিম উপগ্রহ। তৈরি হয়েছিল ইতিহাস। এরপর মার্চে আনডকিং’ করতে সমর্থ হয় তারা। এই পদক্ষেপকে ‘যুগান্তকারী’ বলে মনে করছেন মহাকাশ গবেষকরা। স্পেডেক্স মিশন বলে পরিচিত এই মিশনের মূল লক্ষ্য ছিল স্পেডেক্স ১ ও স্পেডেক্স ২, এই দুই কৃত্রিম উপগ্রহকে একত্রিত করা। ২০২৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর সেই দুই উপগ্রহকে উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল। এদের মধ্যে স্পেডেক্স ১ হল চেজার। স্পেডেক্স ২ টার্গেট। নতুন বছরের শুরুতে সম্পন্ন হয় ‘ডকিং’। মাস দুয়েক পরে সম্পন্ন হয় ‘আনডকিং’ও।

‘সেঞ্চুরি’ ইসরোর: বছরের শুরুতে আরেক মাইলফলক স্পর্শ করে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান মহাকাশকেন্দ্র থেকে উৎক্ষেপণ করা হয় জিএসএলভি এফ-১৫ রকেট। কৃত্রিম উপগ্রহ এনভিএস-২-কে নিয়ে ওই রকেটের সফল উৎক্ষেপণের সঙ্গে সঙ্গে তৈরি হয় ইতিহাস। কারণ সেটাই ছিল ইসরোর শততম উৎক্ষেপণ। ৪৬ বছর আগে শ্রীহরিকোটা থেকে উৎক্ষেপণ হয়েছিল প্রথম উপগ্রহ। এবার তা ছুঁয়ে ফেলল শততম মিশনের সফলতাকেও।

মহাকাশে ‘করমর্দন’

নিসার মিশন: ২০২৫ সালের ৩০ জুলাই নাসা ও ইসরোর যৌথ উদ্যোগে তৈরি 'নিসার' উপগ্রহটি সফলভাবে উৎক্ষেপণ করা হয়। জানা যাচ্ছে, ভূপৃষ্ঠ, সমুদ্র, বরফ এবং অরণ্যের পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ করবে ১.৫ বিলিয়ন ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় ১২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা) খরচে তৈরি নিসার। তবে এর নির্মাণ খরচের মধ্যে ৭৮৮ কোটি টাকা দিয়েছে ইসরো। আপাত ভাবে এই বিনিয়োগ বিপুল অঙ্কের হলেও তা শেষপর্যন্ত ‘লাভদায়ক’ হবে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। প্রতি ৯৭ মিনিটে পৃথিবীকে চক্কর কাটছে সে। এই গ্রহের ভূখণ্ড ও তুষারাবৃত অঞ্চলের বিস্তৃত মানচিত্র তৈরি করছে। সবচেয়ে বড় কথা, অন্ধকার, মেঘ, ধোঁয়া ইত্যাদিকে এড়িয়ে পৃথিবীর সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম পরিবর্তনও ধরে ফেলতে পারে নিসার।

জিনোম ইন্ডিয়া প্রকল্প: বছরের শুরুতেই বিজ্ঞানে আরও এক উল্লেখযোগ্য সাফল্য পায় ভারত। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে শুরু হয়েছিল জিনোম ইন্ডিয়া প্রকল্প। এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য ছিল ভারতীয় জনসংখ্যার বিশাল জেনেটিক বৈচিত্র ম্যাপিং করা। অবশেষে ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেন জিনোম ইন্ডিয়া প্রকল্পটি সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। দশ হাজারটি সম্পূর্ণ জিনোম নমুনা গবেষকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। এই সাফল্য জেনেটিক গবেষণায় ভারতের বড় সাফল্য বলেই ধরা হচ্ছে।

শুভাংশু শুক্ল

আন্তর্জাতিক স্টেশনে প্রথম ভারতীয়: গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্ল আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন তথা ISS-এ পা রাখেন গত জুনে। ২৫ জুন 'অ্যাক্সিওম মিশন ৪'-এর মিশন পাইলট হিসেবে মহাকাশে পাড়ি দেন তিনি। অন্তরীক্ষে ১৮ দিন কাটিয়ে ১৫ জুলাই ২০২৫-এ সফলভাবে পৃথিবীতে ফিরে আসেন। তৈরি হয় ইতিহাস। ISS-এ ত্রিবর্ণরঞ্জিত জাতীয় পতাকা দেখতে পাওয়া যে কোনও ভারতীয়র জন্য গর্বের। 'গগনযান'-এর জন্য নির্বাচিত চার মহাকাশচারীর মধ্যে অন্যতম শুভাংশু। তাঁর এই অনন্য অভিজ্ঞতা ভারতের অভিযানেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে বলেই মনে করা হচ্ছে। মহাকাশ থেকে ফিরে এসে শুভাংশু বলেছিলেন, ”আজও মহাকাশ থেকে ভারতকে দেখতে সবচেয়ে সুন্দর দেখতে মনে হয়। জয় হিন্দ, জয় ভারত।” বলেন, “এই মিশন গোটা দেশের মিশন। শিক্ষাক্ষেত্রে যা শেখা যায় তার থেকে গোটা অভিজ্ঞতাটা একেবারেই আলাদা। এ এক অবিশ্বাস্য অভিজ্ঞতা।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • মহাকাশচারী শুভাংশু শুক্লার সাফল্যের পাশাপাশি বছরজুড়ে বিজ্ঞানে নানা মাইলফলক ছুঁয়েছে দেশ।
  • যা গর্বিত করেছে প্রত্যেক ভারতবাসীকে।
  • ২০২৫ সালে বিজ্ঞানে অভূতপূর্ব সব পদক্ষেপ করেছে ভারত।
Advertisement