ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: লালগড়ের জঙ্গলে মৃত বাঘের ডিএনএ পরীক্ষায় উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। তার ‘পৈতৃক ভিটে’ নাকি মধ্যপ্রদেশের বান্ধবগড়ে৷ সঙ্গে সঙ্গেই প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি বান্ধবগড় থেকে এতটা রাস্তা পার করেই বাঘটি লালগড় এসেছিল? বনদপ্তরের অনুমান, তা সম্ভব নয়৷ লালগড়ে মৃত্যু হওয়া বাঘটি হয়তো আসেনি৷ বনদপ্তরের অনুমান, খুব সম্ভবত বাঘটি পালামৌ বা ওড়িশার কোনও জঙ্গল থেকেই এসেছিল৷ তবে, উৎস সন্ধানে ডিএনএ পরীক্ষায় বাঘের জন্মসূত্রে বান্ধবগড়ের অবস্থান মিলেছে।
[কুখ্যাত দুষ্কৃতী কর্ণ বেরার বন্দুকের ঘায়ে জখম এএসআইয়ের মৃত্যু]
নিয়মমাফিক বন্যপ্রাণের মৃত্যুর পরই তার ডিএনএ পরীক্ষা করতে নমুনা পাঠানো হয় হায়দরাবাদ ও দেরাদুনে৷ হায়দরাবাদের সেই রিপোর্টেই বাঘটির আদিবাড়ির সন্ধানে বান্ধবগড়ের ডিএনএ মিলেছে। বান্ধবগড় থেকে লালগড়ের দূরত্ব ৮৪৯ কিলোমিটার। লালগড় পৌঁছতে রেল, জাতীয় সড়ক, একের পর এক জঙ্গল পার করতে বহু সময় লাগবে৷ তা ছাড়া সেখান থেকে লালগড় পর্যন্ত এতদূর হেঁটে আসার কোনও কারণ নেই৷ এলাকায় তাড়া খেয়ে পাশের বা তার পরের জঙ্গলে আশ্রয় নেয় বাঘটি। তবে এতদূর কীভাবে? বান্ধবগড় থেকে লালগড়ই বা কেন? রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল রবিকান্ত সিনহা (বন্যপ্রাণ) এ বিষয়ে জানান, “বাঘটি নিজে নয়, সম্ভবত পূর্বপুরুষ কখনও বান্ধবগড় পেরিয়ে কোনওভাবে দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে পালামৌর জঙ্গে চলে এসেছিল। সেখানে ঘরও বেঁধেছিল। পরে তারই বংশধর এই বাঘটি তাড়া খেয়ে লালগড় এসে পৌঁছয়।” এখন অপেক্ষা দেরাদুনের রিপোর্টের৷
[শিলিগুড়িতে বিষমদ খেয়ে দু’জনের মৃত্যু, চোলাইয়ের ঠেকে ভাঙচুর স্থানীয়দের]
বান্ধবগড় একসময় ছিল মহারাজা মোহন সিংয়ের শিকারের আখড়া৷ ১৯৫১ সালে মহারাজা মোহন সিং একটি সাদা রঙের বাঘ শিকার করেছিলেন এই বান্ধবগড় জঙ্গল থেকে৷ ওই বাঘটি পরে মহারাজা প্যালেসে সংরক্ষণ করে রাখা হয়৷ ১৯৬৮ সালে বান্ধবগড় অরণ্য জাতীয় অরণ্যের মর্যাদা পায়৷ বিন্ধ্য ও সাতপুরা পর্বতমালাজুড়ে রয়েছে এই অরণ্য৷ এই অরণ্যের ভিতরে রয়েছে প্রাচীন দুর্গ৷ বর্তমানে তা এখন পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে গড়ে উঠেছে৷ মনে করা হচ্ছে, খাদ্য সংকট ও প্রাকৃতিক পরিবর্তনের কারণে জঙ্গল ছেড়ে নতুন ঠিকানায় পাড়ি দেয় বেশ কিছু বাঘ৷
The post লালগড়ে মৃত রয়্যাল বেঙ্গলের ‘পৈতৃক’ ভিটের সন্ধান পেল বনদপ্তর appeared first on Sangbad Pratidin.
