পলাশ পাত্র, নদিয়া: ছোট কিংবা বড়, কোনও পুজোর সঙ্গেই তিনি যুক্ত নন। কিন্তু, পুজো এলেই ব্যস্ততা বাড়ে জ্যোতিষ রায়ের। অশক্ত শরীরের সাইকেলে চেপে বিস্তর ছোটাছুটি করতে হয়। শুধু দুর্গাপুজোই নয়, কালীপুজো, লক্ষ্মীপুজো, এমনকী, সরস্বতী পুজোতেও ডাক পড়ে জ্যোতিষবাবুর। পুজো উদ্যোক্তাদের প্রশাসন ও পুলিশের প্রয়োজনীয় জোগাড় করতে দেন তিনি। আর এই কাজের জন্য সামান্য যা অর্থ পান, তাতেই সংসার চলে।
[ থিমের হাওয়া ‘মুখার্জিদের পুজো’তেও, বাহুবলীজ্বরে কাবু কাজল-রানিরা]
একসময় কৃষ্ণনগর পুরসভার নির্দল কাউন্সিলর ছিলেন। পরবর্তীকালে যোগ দেন মার্কসবাদী ফরওয়ার্ড ব্লক পার্টিতে। কৃষ্ণনগর পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান পদেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। কিন্তু, বদলে যাওয়া সময়ের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারেননি প্রাক্তন কাউন্সিলর জ্যোতিষ রায়। যখন সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ান, তখনও তিনি কৃষ্ণনগর পুরসভার কাউন্সিলর। তাঁর সাফ কথা, ‘রাজনীতিতেও দুর্নীতি ঢুকে গিয়েছে। মাসলম্যানরা এখন রাজনীতির জগতের মাথা। যাঁরা আমাকে ভোট দিতে কাউন্সিলর করেছেন, তাঁদের জন্য কাজ করতে পারছিলাম না। তাহলে আর রাজনীতি করে কি লাভ?’ কোনওভাবে নিজের আদর্শের সঙ্গে আপস করতে রাজি ছিলেন না জ্যোতিষ রায়। কিন্তু, রাজনীতি ছেড়েছেন তো কী হয়েছে! ব্যস্ততা এতটুকু কমেনি সত্তর পেরোনো মানুষটির। শুধু দুর্গাপুজো তো বটেই, কালীপুজো, লক্ষ্মীপুজো, জগদ্ধাত্রী পুজো, এমনকী সরস্বতী পুজোর সময়েও কার্যত নাওয়া-খাওয়ার সময় থাকেন জ্যোতিষবাবুর।
কী করেন জ্যোতিষ রায়? দীর্ঘদিন কাউন্সিলর থাকার সুবাদে সরকারি নিয়মকানুন ভালই জানেন। সেই জ্ঞানকেই হাতিয়ার করে রোজগার করেন জ্যোতিষবাবু। দুর্গাপুজো-সহ যেকোনও পুজোর জন্য উদ্যোক্তাদের প্রশাসন প্রয়োজনীয় অনুমতি জোগাড় করে দেন তিনি। এই কাজ করার জন্য অশক্ত শরীরে সাইকেল নিয়ে বিস্তর ছোটাছুটিও করতে হয়। কিন্তু, তাতেও কুছ পরোয়া নেহি! সংসারটা তো চালাতে হবে! গত তিরিশ বছর ধরে এভাবে জীবিকা নির্বাহ করতে চলেছেন জ্যোতিষবাবু। দুই মেয়েকে বড় করেছেন, তাঁদের বিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু, বয়স তো সত্তর পেরোল। আর কতদিন এই ঝক্কি সামলাতে পারবেন? সদালাপী জ্যোতিষ রায়ের জবাব, ‘এভাবেই চলুক না!’
[ মঙ্গলদীপ নিবেদিত ‘সংবাদ প্রতিদিন পুজো পারফেক্ট ২০১৮’: সেরা ৫ পুজোর তালিকা]
The post পুজোর অনুমতি পাইয়ে দিয়েই উপার্জন! অভিনব পেশায় সংসার চালান এই বৃদ্ধ appeared first on Sangbad Pratidin.
