নন্দন দত্ত, সিউড়ি: পুজোর মুখে গ্রামে বাঘের আতঙ্ক। ভয়ে কাঁটা বীরভূমের মুরারই থানার বালিয়া গ্রামের বাসিন্দারা। যার জেরে আনন্দ প্রায় উবে গিয়েছে গ্রামবাসীদের। পরিবর্তে রাত পাহারা দিয়েই সময় কাটছে তাঁদের।
[আরও পড়ুন: ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ, সরানো হল ২ পুলিশ আধিকারিককে]
মঙ্গলবার দুপুরে দুর্গামন্দির চত্বরে তাস খেলার সময়েই চার যুবক বাঘ দেখে বলে দাবি করেন। সে খবর সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই আশেপাশের গ্রামে আতঙ্ক ছড়ায়। আতঙ্কের কারণ গ্রামের ওপারে বাঁশলৈ নদীর পাড়ে ঝাড়খন্ডের নিশ্চিন্তপুর গ্রাম। দিন পনেরো আগে সেই গ্রামে বাঘের কামড়ে এক জনের মৃত্যু হয়েছে। জখম পাঁচ জন। তাঁদের বাঘ কামড়েছে বলেই দাবি পরিজনদের। এদিকে, গ্রামে আতঙ্কের পরিপ্রেক্ষিতে বিভাগীয় উপ-আধিকারিক বিজন নাথ জানান, মহম্মদবাজার ও রামপুরহাট বিটকে সতর্ক করা হয়েছে। যাতে কোনও খবর পেলেই তারা গ্রামে পৌঁছে যায়।
ওপাশে ঝাড়খন্ডের মহেশপুর থানার নশিপুর। মাঝে বাঁশলৈ নদী। এপাড়ে বীরভূমের মুরারই থানার বালিয়া গ্রাম।কয়েকদিন আগেই নশিপুর এলাকায় বাঘের আতঙ্ক ছড়ায়।তখনই মহেশপুরের রতনপুর, জয় লগড়া, পলশা-সহ আশেপাশের গ্রামে আতঙ্ক ছড়ায়। নদীর এপারে মুরারই ১ নম্বর ব্লকের কনকপুর গ্রামের মানুষও বাঘের আতঙ্কে কাঁটা। নশিপুরে মৃত্যু হয় সোনামণি টুডু নামে বছর ষাটের এক মহিলার। গ্রামবাসীদের দাবি, বাঘের আক্রমণে তাঁর মৃত্যু হয়েছিল। কারণ, তাঁর ঘাড়ে ও গলায় বন্য জন্তুর আক্রমণের দাগ ছিল। আতঙ্কের রেশ কাটতে না কাটতেই এবার এপারে বালিয়া গ্রামে মিলল বাঘের পায়ের ছাপ।
[আরও পড়ুন: NRC বৈঠককে কেন্দ্র করে ফের প্রকাশ্যে বনগাঁর ঠাকুরবাড়ির দ্বন্দ্ব, হেনস্তার শিকার মমতাবালা]
গ্রামবাসীদের দাবি, দুই রাজ্যের মধ্যে শুধু নদীর তফাৎ। দু’দিকের মানুষই নিয়মিত যাতায়াত করেন। নসিপুর গ্রামের কাছে আদুয়া পাহাড়ের জঙ্গল। নদী ভরতি জল থাকায় খাবারের সন্ধানে গ্রামে বাঘ ঢুকে থাকতে পারে বলেই অনুমান। তবে প্রথম বাঘ দেখা চার যুবকের দাবি তাঁরা নিজের চোখে বাঘ দেখেছেন। তাই তারা বাঘের আনাগোনার বিষয়ে এক্কেবারে নিশ্চিত। সে খবর সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেই ছড়িয়ে পড়ে। তারপরই ধিতোরা, পলশা, ডুমুরগ্রাম সমেত গ্রামের মানুষ লাঠি হাতে বেরিয়ে পড়েন। পুজোর সময় বাড়িতে শিশুদের কী করে আগলে রাখবেন এই ভাবনায় আতঙ্কিত তাঁরা। গ্রামবাসীদের দাবি, গ্রামজুড়ে বাঘের পায়ের ছাপ তাঁরা লক্ষ্য করেছেন।
যদিও বনদপ্তর এখনই গ্রামে বাঘ এসেছে কিনা তা স্পষ্ট করে বলতে পারেনি। বুধবার গ্রামে গিয়ে তাদের সে নিয়ে খুব বেশি তল্লাশি চালাতেও দেখা যায়নি। উল্লেখ্য, একইভাবে ঝাড়গ্রামে প্রথমে বাঘের উপস্থিতি নিয়ে সন্দেহপ্রকাশ করেছিল বনদপ্তর। পরে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় সেই বাঘের দেহ উদ্ধার করেন বনকর্মীরা। কিন্তু পুজোর মুখে মুরারইয়ের বালিয়া গ্রামের বাঘের আতঙ্ক পুজোর আনন্দ মাটি করে দিয়েছে।
The post পুজোর মুখে বাঘের আতঙ্ক, লাঠি হাতে রাত কাটছে বীরভূমের বাসিন্দাদের appeared first on Sangbad Pratidin.
