চঞ্চল প্রধান, হলদিয়া: নন্দীগ্রাম কাকে লিড দেবে? সরাসরি প্রশ্নটা করতেই জমিতে কাজ করতে করতে উঠে এলেন আজি আলমগির হোসেন। অল্প জায়গায় অভিনব পদ্ধতিতে চাষ করে রাজ্য ও কেন্দ্র সরকার থেকে পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। প্রশ্নটা শুনে বললেন, “নন্দীগ্রামের মাটি মোটেই নরম নয়। তাই যে বিজেপিকে নন্দীগ্রামে জমিরক্ষার আন্দোলনে দেখা যায়নি, তাদের পাশে আন্দোলনের ভূমি নন্দীগ্রাম থাকবে কী করে? নিহত তো দূরের কথা, আহতদের পাশেও দেখা যায়নি।”
[আরও পড়ুন: সিউড়িতে আক্রান্ত তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি, কাঠগড়ায় বিজেপি ]
নন্দীগ্রামের স্বাস্থ্যকর্মী, বছর চল্লিশের যুবক শেক আজানূর হোসেনের সঙ্গে দেখা চায়ের আড্ডায়৷ তিনি চায়ে চুমুক দিতে দিতে নিজের মতো করে পরিস্থিতির কথা বলছিলেন। ‘‘সারা দেশ জুড়ে বেকারত্ব বেড়েছে ৷ নতুন শিল্প স্থাপনের কোনও উদ্যোগ নেই৷ নেই কর্মসংস্থানের বিকল্প রাস্তা তৈরির উদ্যোগ ৷ অথচ মোদি সরকার আচ্ছে দিনের গল্প দিয়ে আম জনতাকে ভোলাবার চেষ্টা করেছে৷ আমরা এমন ভুলভুলাইয়া দেখে ছুটতে নারাজ৷ মোদির শেখা উচিত আমাদের মুখ্যমন্ত্রীকে দেখে। সার্বিক উন্নয়ন কাকে বলে নন্দীগ্রাম দেখেছে। ফলে ভোটের বাক্সে তার প্রভাব তো পড়বেই।” স্থানীয় কান্ডপসরা গ্রামের বছর তিরিশের যুবক, পেশায় ব্যবসায়ী রঘুনাথ মাইতি উন্নয়নের প্রসঙ্গ টেনে রাজ্যে শাসক দলের পক্ষে সমর্থন জানাতে প্রস্তুত৷ তিনি বলেন, “স্বাধীনতার কয়েক দশক কেটে যাওয়ার পর শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে নন্দীগ্রাম নগরায়নের ছোঁয়া পেয়েছে৷ উন্নয়ন নিয়ে কোনও কথা হবে না ৷ যাঁরা সমালোচনা করেন, তাঁরা নন্দীগ্রামের সারাটা এলাকা ঘুরে দেখুন উন্নয়ন কাকে বলে ৷ শুভেন্দুবাবুর বিধায়ক কার্যালয় থেকে বই, খাতা সরবরাহ, বিবাহযোগ্যা কন্যার বিয়ের জন্য অর্থ সাহায্য, চিকিত্সা খরচ ইত্যাদি উপকারের কথা বলে শেষ হবে না ৷ অতএব নন্দীগ্রামে বিজেপি, কংগ্রেস কেউই মাটি পাবে না৷”
[আরও পড়ুন: রক্তদান থেকে চারাগাছ বিতরণ, গতানুগতিকতা ভেঙে সন্তানের জন্মদিন উদযাপন দম্পতির ]
এমন এলাকা উন্নয়নের ছবি তুলে ধরে তৃণমূল কংগ্রেসকে ভোট দানের যুক্তি খাড়া করেছেন নন্দীগ্রামের তরুণী সুস্মিতা পড়ুয়া। বছর কুড়ির সুস্মিতা শেষ পঞ্চায়েত ভোটে প্রথম ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছে। এবার লোকসভা নির্বাচনটাও তার কাছে প্রথম। তরুণীর অকপটে জানিয়েছে, “বিজেপিকে ভোট দেওয়া মানে ভুল পদক্ষেপ। আমি ছাত্রী হিসেবে কন্যাশ্রী, সবুজ সাথী সবই পেয়েছি৷ আমার মতো বহু পড়ুয়া রাজ্য সরকারের কাছ থেকে সুবিধা পেয়েছে ৷ অতএব ভোট কাকে দেব, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না ৷” এমনি উন্নয়নের কথা টেনে নন্দীগ্রাম উন্নয়নের রূপরেখা টানলেন নন্দীগ্রাম বিধানসভা তৃণমূল কংগ্রেস কমিটির চেয়ারম্যান মেঘনাদ পাল৷ তিনি বলেন, “ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ব্যবস্থা, রাজ্য সরকার এবং অবশ্যই শুভেন্দু অধিকারী, এই তিনের যোগফল নন্দীগ্রামের নিবিড় উন্নয়ন৷ আজ কলকাতাকে আর দূর মনে হয় না ৷ শুভেন্দুবাবু নন্দীগ্রামে সরকারি বাস চালু করেছেন ৷ হলদি নদীতে জেটি তৈরি করেছেন, নদীপাড় বেঁধে বন্যা রোধ করেছেন৷ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল, রাস্তার পাশাপাশি নন্দীগ্রামে টেক্সটাইল হাব গড়ার প্রক্রিয়া চলছে৷ আরও কুটির শিল্প গড়ে নন্দীগ্রামে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে৷”
The post হাতিয়ার উন্নয়ন, ‘নতুন’ নন্দীগ্রামে বড় লিডের আশায় তৃণমূল appeared first on Sangbad Pratidin.
