টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: আগামী বিধানসভা নির্বাচনে রেকর্ড ভোটে জয়ের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই লক্ষ্যে জনপ্রতিনিধিদের আরও জোরদার জনসংযোগের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। সেই নির্দেশ মেনে আরও বেশি করে সভা, বৈঠক করছেন বিধায়ক, সাংসদরা। সেই সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে ফের বিতর্কে জড়ালেন বাঁকুড়া তৃণমূল সাংসদ অরূপ চক্রবর্তী। যা নিয়ে দলের অন্দরেই সমালোচনা শুরু হয়েছে। দলের অন্দরে থাকা বিশ্বাসঘাতকদের চিহ্নিত করে একঘরে করে দেওয়ার নিদান দিলেন তিনি।

বাঁকুড়ার ২ নং ব্লকের বিকনায় শনিবার একটি জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়েছিলেন বাঁকুড়ার সাংসদ অরূপ চক্রবর্তী। সেখানে তিনি বলেন, ''যারা দলের বিরুদ্ধে গুজুর গুজুর ফুসুর ফুসুর করছেন, তৃণমূলের বিরুদ্ধে বাইরে ষড়যন্ত্র করছেন, তাঁদের চিহ্নিত করতে হবে। সেই সব বিশ্বাসঘাতকদের একঘরে করে দিতে হবে।'' এরপর দলের মহিলা কর্মীদের আরও চাঙ্গা করে তুলতে সাংসদের বক্তব্য, মহিলারা অনেক শৃঙ্খলাপরায়ণ, কাজে অনেক বেশি সিরিয়াস। তাঁরা সময় নষ্ট করেন না। তাই আমার আবেদন, মহিলারা আরও এগিয়ে আসুন দলের কাজে। আর পুরুষরা তাঁদের দেখে শিখুন।''
বক্তব্যের পর সাংবাদিকরা তাঁকে এই মন্তব্য নিয়ে জিজ্ঞাসা করলে একই জবাব দেন সাংসদ। বলেন, ''তৃণমূলের খেয়ে, তৃণমূলের পরেও অনেকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে কাজ করছেন। তাঁরা তো বিশ্বাসঘাতকতা। তাঁদের চিহ্নিত করে একঘরে করতে হবে। নইলে দলের বিপদ বাড়বে। আমরা ব্যবস্থা নেব।'' বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুনীল রুদ্র মণ্ডল বলছেন, “টাকাপয়সার ভাগাভাগি নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে কোন্দল চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। কর্মীদের মধ্যে ন্যূনতম বিশ্বাসযোগ্যতাটুকুও নেই যে তৃণমূল সাংসদ তথা বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতির কথাতেই তা পরিষ্কার।”
বাঁকুড়ায় ঘাসফুল শিবিরের দীর্ঘদিনের সৈনিক অরূপ চক্রবর্তী। তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতার উপর আস্থা রেখে চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে তাঁকে টিকিট দিয়েছিল তৃণমূল। আস্থা বজায় রেখে জিতেওছেন তিনি। এবার ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বাড়তি দায়িত্ব থাকছেই অরূপ চক্রবর্তীর উপর। তার আগে জনসভায় তাঁর এহেন মন্তব্যে দলের অন্দরে সমালোচনা শুরু হয়েছে। কারও কারও আবার মত, দলের শুদ্ধিকরণে জোর দিতেই সাংসদের এই মন্তব্য।