স্টাফ রিপোর্টার: তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতির পদও খোয়ালেন মুকুল রায়। নির্বাচন কমিশনে সম্প্রতি ২১ জন পদাধিকারীর যে তালিকা দলের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে, তাতে সহ-সভাপতির পদটিই নেই। ওই পদেই ছিলেন মুকুলবাবু, সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদী ও সদ্য প্রয়াত সাংসদ সুলতান আহমেদ। সর্বভারতীয় সহ-সভাপতির পদ উঠে যাওয়ায় মুকুলবাবু এখন শুধু দলের ওয়ার্কিং কমিটি ও রাজ্য তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্য রইলেন।
দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের পদে দীর্ঘদিন ছিলেন মুকুলবাবু। দু’বছর আগে দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ায় তাঁকে সরিয়ে রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সিকে আনা হয় ওই পদে। সেই সময়েই জল্পনা ছিল মুকুল নতুন দল গড়ছেন। শেষপর্যন্ত অবশ্য তিনি দলে থেকে যান। আগের মতোই কর্মসূচিতে নেমে পড়েন। তাঁর কাজে সন্তুষ্ট হয়ে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে সর্বভারতীয় সহ-সভাপতির পদে বসান। এবার সেই পদও গেল রাজ্যসভার সাংসদের। এবার ২১ জুলাইয়ের সভায় বক্তার তালিকায় ছিলেন না মুকুলবাবু। তার পর এক এক করে বিভিন্ন সংসদীয় কমিটি থেকে তাঁকে সরানো হয়। তখনই বোঝা যায় দল কতটা কঠোর মনোভাব নিতে চলেছে। সর্বভারতীয় সহ-সভাপতির পদটি তুলে দিয়ে তৃণমূল নেতৃত্ব মুকুলবাবুকেই বার্তা দিতে চেয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে দীনেশ ত্রিবেদীকে অন্য দায়িত্ব দেওয়া হবে।
[দলের বিরুদ্ধে মুখ খুলে খুন হওয়ার আশঙ্কা, কলকাতা ছাড়লেন ঋতব্রত]
রাজনৈতিক মহলে জল্পনা মুকুলবাবু বিজেপির দিকে ঝুঁকেছেন। নেতৃত্বের কাছে খবর আসছে ঘন ঘন তাঁর কথা হচ্ছে বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে। কিন্তু শৃঙ্খলার প্রশ্নে এসব যে বরদাস্ত হবে না, সে কথা কোর কমিটির বৈঠকেই মমতা স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন। বলে দেন, ‘তৃণমূলে থাকতে হলে বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখা যাবে না। এমন কেউ করলে তিনি দল ছেড়ে দিন। দরজা খোলা আছে।’ আসলে বিজেপির সঙ্গেই তৃণমূলের এখন প্রবল সংঘাত। কেন্দ্রীয় সরকার চাইছে রাজ্যের নির্বাচিত সরকারকে নানাভাবে বিব্রত করতে। ক্ষমতা দখলের লক্ষ্যে এ রাজ্যকে টার্গেট করেছে বিজেপি। এসবের মূল কারণ সর্বভারতীয় স্তরে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিবাদের মুখ এখন মমতাই। বস্তুত, তাঁকে ভয় পাচ্ছে কেন্দ্রের শাসক দল।
এই সময় ঘরশত্রু কেউ, সে যত বড় নেতাই হোন, তাঁর বিরুদ্ধে তৃণমূল যে কঠোর মনোভাব নেবে তা স্পষ্টই। মমতা সেদিন আরও বুঝিয়ে দেন বিজেপির সঙ্গে সংঘাতটা আদর্শের। এই ধর্মযুদ্ধে কোনওভাবেই শৃঙ্খলার প্রশ্নে তিনি আপস করবেন না। নেত্রীর সেই মনোভাবের প্রতিফলন এবার সাংগঠনিক সিদ্ধান্তে। মুকুলবাবু হারালেন সহ-সভাপতির পদ। ততটা গুরুত্বপূর্ণ না হলেও এই পদে সর্বভারতীয় তকমা ছিল। এই মুহূর্তে একজন সিনিয়র সাংসদ ছাড়া কার্যত পদহীন মুকুল রায়।
[রাজ্যে আসুক বুলেট ট্রেন, মোদিকে আরজি মমতার]
The post সহ-সভাপতির পদ খুইয়ে দলে কার্যত একঘরে মুকুল রায় appeared first on Sangbad Pratidin.
