দেবব্রত মণ্ডল, ক্যানিং: টিউশন সেরে ফেরার পথে পায়রা দেখে ধরার চেষ্টা। পাখির সঙ্গে গতিতে পাল্লা দিতে না পেরে হাল ছেড়ে বাড়ি ফিরে আসা। কিন্তু তারপরও চুরির অপবাদ দিয়ে মারধর দুই নাবালককে! তাদের গাছে বেঁধে বেধড়ক মারের অভিযোগে সরগরম হয়ে উঠল দক্ষিণ ২৪ পরগনার জীবনতলার ছাঁটুইপাড়া। মারের চোটে আশঙ্কাজনক দুই স্কুলপড়ুয়া। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে। তাদের আশঙ্কাজনক অবস্থায় ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনায় বাবা-ছেলেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জীবনতলা থানার অন্তর্গত বাঁশড়া পঞ্চায়েতের পিয়ালি ছাঁটুইপাড়ার বাসিন্দা সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্র। শনিবার বিকালে সে টিউশন পড়তে গিয়েছিল। সন্ধ্যার সময় বন্ধুর সঙ্গে বাড়ি ফিরছিল সে। ফেরার পথে তারা আদর্শপল্লির রাস্তায় পায়রা চড়তে দেখে। দুজনেই পায়রাগুলিকে ধরার চেষ্টা করে। তবে ধরতে না পেরে বাড়ি ফিরে যায় দুই ছাত্র। এরপর সন্ধ্যা নাগাদ ওই দুই ছাত্রের বাড়িতে চড়াও হন আদর্শপল্লির বাসিন্দা জয়ন্ত খাটুয়া ও তাঁর ছেলে সায়ন খাটুয়া। অভিযোগ, দুই ছাত্রকে পায়রা চুরির অপবাদ দিয়ে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর নারকেল গাছে দুজনকে বেঁধে বেধড়ক মারধর করে বলে বাবা-ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে।
এই দুই নাবালককে গাছে বেঁধে মারধরের অভিযোগে গ্রেপ্তার বাবা-ছেলে।
মারধরের খবর পেয়ে ঘুটিয়ারি শরিফ ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে হাজির হয়। আক্রান্ত দুই ছাত্রকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে। তাদের কে চিকিৎসার জন্য প্রথমে স্থানীয় ঘুটিয়ারি শরিফ ব্লক হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে ওই দুই ছাত্রের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে রবিবার সকালে দু'জনকে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করতে বলেন চিকিৎসকরা। এনিয়ে দুই ছাত্রের পরিবার ঘুটিয়ারি শরিফ ফাঁড়িতে অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে পুলিশ অভিযুক্ত বাবা জয়ন্ত খাটুয়া ও ছেলে সায়নকে গ্রেপ্তার করেছে।
ঘটনা প্রসঙ্গে এক ছাত্রের বাবা জানিয়েছেন, ''আমরা কেউ বাড়িতে ছিলাম না। আমার ছেলে ও তার বন্ধুকে পায়রা চুরির অপবাদ দিয়ে নারকেল গাছে বেঁধে পেয়ারা গাছের ডাল দিয়ে বেধড়ক মারধর করে জয়ন্ত খাটুয়া ও তার ছেলে সায়ন খাটুয়া। ফাঁড়ির পুলিশ জানতে পেরে তাদের উদ্ধার করে। চিকিৎসার জন্য ঘুটিয়ারি শরিফ ব্লক হাসপাতালে নিয়ে যায়। আমরা খবর পেয়ে হাজির হই। অভিযুক্ত বাবা ও ছেলের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি।’’