সুব্রত যশ, আরামবাগ: খানাখন্দে ভরা রাস্তা দীর্ঘদিন ধরে মেরামত হচ্ছে না। ফলে নিত্যদিন নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে গ্রামবাসীদের। বারবার মেরামতির কথা বলা হলেও সুরাহা হয়নি। আর ধৈর্য রাখতে না পেরে বৃহস্পতিবার গ্রামবাসীরা উগরে দিলেন নিজেদের ক্ষোভ। গোঘাট (Goghat) থানার শাওড়া গ্রাম পঞ্চায়েতে তালা ঝুলিয়ে দিলেন তাঁরা। যদিও গোঘাট থানার ওসি ঘটনাস্থলে গিয়ে রীতিমতো ধমক দিয়ে গ্রামবাসীদের বিক্ষোভ হঠানোর চেষ্টা করেন। পালটা গ্রামবাসীরাও মেরামতির আশ্বাস আদায় করে নিলেন। তারপর উঠল বিক্ষোভ।
স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, ছাড়া পঞ্চায়েতের উত্তরপাড়া পণ্ডিতপাড়ার প্রায় ২ কিলোমিটার রাস্তার বেহাল দশা। রোগীকে নিয়ে মেন রাস্তা পর্যন্ত পৌঁছতে হলে তাঁকে কাঁধে করে নিয়ে যেতে হয়। প্রসূতি হোক কিংবা হৃদযন্ত্রের অসুস্থতায় ভুগতে থাকা বৃদ্ধ – একইভাবে তাঁদের নিয়ে যেতে হয় হাসপাতালে। গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন, পঞ্চায়েত সদস্য থেকে পঞ্চায়েত প্রধান – সকলের কাছে বারবার সমাধানের জন্য দরবার করেও কোনও লাভ হয়নি। তাই বাধ্য হয়েই এদিন তাঁরা একজোটে বিক্ষোভ শামিল হয়েছেন।
[আরও পডুন: কয়লা পাচার কাণ্ড: CBI হেফাজতে ধৃত ECL কর্তারা, তদন্তের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন অভিষেকের]
এদিন শাওড়া গ্রাম পঞ্চায়েতে কাজ করছিলেন কর্মীরা। ছিলেন প্রধানও। সেই অবস্থায় থেকে পঞ্চায়েতের গেটের তালা লাগিয়ে দেন ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা। রাস্তা সারাইয়ের দাবিতে শুরু হয় বিক্ষোভ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান গোঘাট থানার ওসি (OC) শৈলেন্দ্র উপাধ্যায়। তিনি রীতিমতো ধমক দিয়ে গ্রামবাসী বলেন, ”এভাবে সরকারি অফিসে তালা মারা যায় না। তাড়াতাড়ি আপনারা পঞ্চায়েতের তালা খুলে দিন। না হলে আমরা আইনি পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হব।”
[আরও পডুন: পেগাসাসের পরে ড্রোন দিয়ে নজরদারি সীমান্তে! বন্ধুরাষ্ট্র ভারতকে ফের সাহায্য ইজরায়েলি সংস্থার]
এলাকার মানুষজনও নিজেদের দাবিতে নাছোড়বান্দা। তাঁদের পালটা দাবি, রাস্তা মেরামতির প্রতিশ্রুতি দিতে হবে, তারপরই পঞ্চায়েতের তালা খুলবেন। পঞ্চায়েত প্রধান তড়িঘড়ি আসরে নামেন। তিনি পরিস্থিতির কথা স্বীকার করে জানান, রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ। কিন্তু পঞ্চায়েত থেকে এই রাস্তা মেরামতির বিষয়টি অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। খুব শীঘ্রই রাস্তার কাজ শুরু হবে। স্থানীয় বাসিন্দা অতীন্দ্রনাথ পণ্ডিতের কথায়, ”দীর্ঘদিন ধরে রাস্তার বেহাল অবস্থা ২০১১ সাল থেকে। বারবার জানিয়েও কোনও ফল মিলছে না। স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী থেকে অসুস্থ রোগীকে নিয়ে যেতে গেল এই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। আমরা কোনওরকম আশ্বাস না পেয়ে বাধ্য হয়ে এই পথে নেমেছি। দিদিমণি এলাকার উন্নয়নের জন্য এত কিছু কাজ করছে আমাদের সামান্য এই রাস্তাটুকু মেরামতি করলে অসুস্থ রোগী থেকে স্কুলের ছাত্রছাত্রী সকলকে নিয়েই আমরা সহজে বেরিয়ে যেতে পারি।”